২০১৪ সালের মামলায় ২০২৪-এ মন্ত্রীকে তলব কেন সেই প্রশ্ন তুললেন মহম্মদ সেলিম। সিপিআই(এম) রাজ্য সম্পাদক মনে করিয়েছেন অ্যালকেমিস্টের টাকা তৃণমূলের তহবিলে ঢোকার অভিযোগ বিভিন্ন সময়েই করেছে সিপিআই(এম)। তাঁর দাবি, প্রভাবশালী মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাসকে হেপাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা উচিত। না হলে সাক্ষ্য প্রমাণ লোপাট করা হবে।
রাজ্য সরকারের মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাসকে ডেকে পাঠিয়েছে ইডি। সেই প্রসঙ্গে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা এবং তৃণমূলকে তীব্র আক্রমণ করলেন মহম্মদ সেলিম। তাঁর বক্তব্য, চিটফান্ডের টাকা কেডি সিংয়ের হাত ঘুরে তৃণমূলের পার্টি ফান্ডে ঢুকেছিল। সেই সময় তৃণমূলের কোষাধ্যক্ষ অরূপ বিশ্বাস। তাই অরূপ বিশ্বাসকে ডাকবে না তো কাকে ডাকবে?
সেলিম বলেছেন, ‘‘কেডি সিং শুধুমাত্র অ্যালকেমিস্ট চিটফান্ডের মালিক ছিলনা। ঝাড়খন্ডের সাংসদ ছিলেন, মুকুল রায়, মমতা ব্যানার্জি মিলে তাঁকে রাজ্যসভার সাংসদ করে। তৃণমূলের কোষাগারে চিটফান্ডের টাকা অবাধে ঢুকতে থাকে। ২০১৩ সালের সেপ্টেম্বর মাসে সাংবাদিক সম্মেলন করে এই তথ্য আমি নিজে তুলে ধরি। তার আগে আমাদের পার্টির নেতা গৌতম দেব একই অভিযোগ করেছিলেন।’’
সেলিমের ক্ষোভ, ‘‘কিন্তু তারপরেও চিটফান্ড তদন্ত এগোয়নি। কারণ কেন্দ্র এবং রাজ্য সরকার উভয় মিলে এই তদন্তকে ধামাচাপা দেওয়ার প্রক্রিয়ায় কোনও খামতি রাখেনি। অরূপ বিশ্বাসকে চিটফান্ডের তদন্তে ডেকে পাঠানো হয়েছে কারণ চিটফান্ডের টাকা নির্বাচনী তহবিলে ঢুকেছে। ঠিক যেভাবে নির্বাচনী বন্ডের টাকা ঢুকেছে।’’
সেলিম বলেছেন, ‘‘চিটফান্ড কেলেঙ্কারি প্রকাশ্যে আসার পরে মমতা ব্যানার্জি বলেছিলেন যা গিয়েছে তা গিয়েছে। কিন্তু টাকা কোথায় গিয়েছে সেটা বলেননি। আমরা বলছি সাধারণ মানুষকে সর্বস্বান্ত করে চিটফান্ডের টাকা গিয়েছে তৃণমূলের ফান্ডে। এবং সেই সময়ে তৃণমূলের কোষাধ্যক্ষ ছিল অরূপ বিশ্বাস। তাই তাঁকে ডাকবে না তো কাকে ডাকবে?’’
সেলিম বলেন, ‘‘এক্ষেত্রে হেপাজতে নিয়ে জেরা করা উচিত। অতীতে তৃণমূল সমস্ত কুপন জ্বালিয়ে দিয়েছিল। সব নথি নষ্ট করার চেষ্টা করবে।’’
অন্যান্য দুর্নীতির তদন্তের মত এই তদন্তও মাঝপথে থমকে যাওয়ার আশঙ্কা প্রকাশ করে সেলিম বলেছেন, ‘‘এই সমস্ত লোককে গ্রেপ্তার করে হেফাজতে রেখে তদন্ত চালানো উচিত। নইলে যেভাবে কুপন দুর্নীতির সময়ে সমস্ত কুপন পুড়িয়ে দিয়েছিল তৃণমূল, একই কায়দায় এখানেও সমস্ত নথি নষ্ট করে দিতে পারে। এইজন্য এদের গ্রেপ্তার করে তারপর তদন্ত করতে হয়।’’
সেলিম ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘‘২০১৪ সালের মামলা, এতদিন ইডি কি করছিল? এই ধরণের মামলায় আগে তদন্ত করে প্রমাণ জোগাড় করে, তারপর অভিযুক্তকে ডেকে পাঠানো হয়। কিন্তু এখানে উল্টোটা হচ্ছে। আমাদের আশঙ্কা, অরূপ বিশ্বাস হাজিরা দেবেন, তারপর পুলিশের ঘেরাটোপে সাংবাদিক বৈঠক করবেন, এবং আসল তদন্ত ধামাচাপা পড়ে যাবে।’’
Comments :0