ইতিমধ্যেই ভারতবর্ষের ৮০ শতাংশ এলাকায় হাজির হয়েছে বর্ষা। সোমবার এমনই আশার কথা শোনালেন ইন্ডিয়ান মেটিওরোলজিক্যাল ডিপার্টমেন্ট বা ভারতীয় আবহাওয়া দপ্তরের শীর্ষ বিজ্ঞানী নরেশ কুমার।
কুমার জানিয়েছেন, রাজস্থান এবং গুজরাটের কিছু অংশ ছাড়া গোটা দেশেই প্রবেশ করেছে বর্ষা। রবিবার বঙ্গোপসাগরের উপর নিম্নচাপ তৈরি হয়েছে। তারফলেই দ্রুত গতিতে বর্ষা প্রবেশ করেছে ভারতবর্ষের সিংহভাগ এলাকায়।
আবহাওয়াবিদরা জানাচ্ছেন, রবিবার একইদিনে বর্ষা প্রবেশ করেছে দিল্লি এবং মুম্বইয়ে। ৬২ বছর পরে ঘটল এমন ঘটনা।
সাধারণত ১১ জুন মুম্বইয়ে প্রবেশ করে বর্ষা। অপরদিকে সেই মেঘ দিল্লি পৌঁছয় ২৭জুন নাগাদ। কিন্তু এবারে ঘটেছে উলোট পুরান।
যদিও এরজন্য জলবায়ু পরিবর্তনকে এখনই দায়ী করতে রাজি নন আবহাওয়াবিদরা। নরেশ কুমার জানিয়েছেন, একথা ঠিক যে চলতি বছরে বর্ষা একটু ভিন্ন ভাবে হাজির হয়েছে। কিন্তু এরসঙ্গে এক্ষুনি জলবায়ু পরিবর্তনকে যুক্ত করা সম্ভব নয়। তারজন্য ৩০-৪০ বছরের তথ্য জোগাড় করতে হবে।
কিন্তু কীভাবে এত দ্রুত গতিতে গোটা দেশে হাজির হল বর্ষা?
বিজ্ঞানীরা জানাচ্ছেন, এর জন্য মূলত দায়ী ২টি ঘটনা। প্রথমটি হল বঙ্গোপসাগরের নিম্নচাপ। বৃষ্টি ভর্তি ভারী মেঘকে নিজের দিকে টেনে নিয়েছে নিম্নচাপ। ঠিক একই সময়ে আরব সাগরে সৃষ্টি হয়েছে পশ্চিমী বায়ু। সেই বায়ু বর্ষার মেঘকে উত্তর পশ্চিম দিকে ঠেলে দিয়েছে। তারফলে মুম্বই, দিল্লি এবং কলকাতায় একসঙ্গে বৃষ্টির দেখা মিলেছে।
বৃষ্টিপাতের ফলে দেশের বেশ কিছু জায়গায় ইতিমধ্যেই বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। উত্তরাখন্ডের রুদ্রপ্রয়াগ, সহ বিস্তীর্ণ এলাকায় ১২ সেন্টিমিটারের বেশি বৃষ্টিপাত হতে পারে বলে খবর। বৃষ্টির ফলে কেদারনাথ যাত্রা ইতিমধ্যেই স্থগিত ঘোষণা করা হয়েছে। পাঞ্জাব এবং হরিয়ানাতেও বজ্রপাত সহ বৃষ্টির সতর্কতা জারি হয়েছে।
প্রবল বৃষ্টির ফলে হিমাচল প্রদেশের মান্ডি জেলায় হড়পা বান দেখা দিয়েছে। জেলার কুলুতে হড়পা বানের ফলে আটকে পড়েছেন ২০০’র বেশি পর্যটক। বেশ কয়েকটি গাড়ি ভেসে গিয়েছে বলে খবর।
যদিও বেশ কয়েকদিনের প্রবল বৃষ্টির পরে আসামের জন্য স্বস্তির খবর শুনিয়েছে আবহাওয়া দপ্তর। আইএমডি জানিয়েছে, আসামের উপর জমাট বাধা মেঘ হালকা হয়ে গিয়েছে। তারফলে এখনই আর সেখানে বৃষ্টির সম্ভাবনা নেই।
প্রসঙ্গত, প্রবল বৃষ্টির ফলে আসামের ২০টি জেলায় বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন কয়েক লক্ষ মানুষ।
Comments :0