Nasik farmers protest

ফসলের দাম না পেয়ে রাগে দুঃখে ফসল জ্বালিয়ে প্রতিবাদ কৃষকের

জাতীয়

চারমাস কঠোর পরিশ্রম করে চাষ করেছিলেন পেঁয়াজের। কিন্তু সরকার ফসলের সঠিক মূল্য দেবে না। লোকসান করেই পেঁয়াজ বিক্রি করতে হবে তাকে। রাগে দুঃখে নিজের কষ্টের উৎপাদিত ফসল জ্বালিয়ে দিলেন কৃষ্ণ ডোংরে নামক এক কৃষক। মহারাষ্ট্রের নাসিকের ইওলা তালুকে প্রায় ১.৫ একর জমিতে চাষ করেছিলেন পেঁয়াজ। চারমাস ধরে কঠোর পরিশ্রম করে পেঁয়াজ চাষ করেন ডেংরে। চাষের সমসয় যা খরচ হওয়ার তা তো হয়েছেই সেই সঙ্গে পরিবহনের জন্য তাঁকেই উল্টে খরচ করতে হবে আরও ৩০,০০০ টাকা। কিন্তু সমস্ত পেঁয়াজ বিক্রি করার জন্য বর্তমান দর অনুযায়ী সরকারের কাছ থেকে তিনি পাবেন ২৫,০০০ টাকা।


কৃষক তার ফসলে ন্যাহ্য দাম পাচ্ছে না তা নিয়ে বারবার আন্দোলনে নেমেছে সারা ভারত কৃষক সভা। এই নিয়ে সারা ভারত কৃষক সভার সাধারণ সম্পদক হান্নান মোল্লা বলেন ‘কৃষককে যেন তার ফসলের দাম সহ নুন্যতম সহায়ক মূল্য দেওয়া হয় তা নিয়ে বিজেপি সরকারের কাছে লিখিত চেয়েছিল সমস্ত কৃষক সংগঠন গুলো। ২০২১’র ৯ ডিসেম্বর বিজেপি সরকার বলেছিল তারা লিখিত দেবে। কিন্তু আজ অবধি ১৩ মাস কেটে যাওবার পরও লিখিত প্রতিশ্রুতি মেলেনি সরকারের তরফে। উল্টে কৃষক তার ফসলের সঠিক মুল্য না পেয়ে বহু জায়গায় আত্মহত্যা করছে। বাংলার আলু চাষিরা আলুর দাম পাচ্ছে না। রাজস্থানের কৃষকরা সরসের সঠিক দাম পাচ্ছে না। মধ্যপ্রদেশ, মহারাষ্ট্রের পেয়াঁজ চাষিরাও পাচ্ছেন না পেঁয়াজের দাম’। কৃষক আন্দোলনের এই প্রবীন নেতার দাবি ভালো চাষ হলে ফসলের জোগান থাকলে বাজারে ফসলের দাম কমে।সেক্ষেত্রে চাষি যে খরচায় চাষ করে তার থেকে বেশী অর্থ দিয়ে সরকারের কিনে নেওয়া উচিৎ যাতে কৃষকের লোকসান না হয়। কিন্তু বিজেপি সরকার ঠিক তার উল্টোটা করে। কর্পোরেটকে সুবিধা পাইয়ে দেবে অথচ কৃষকের শ্রমের কোনও মূল্য দেবে না। কৃষকের স্বার্থে আগামী ২০ মার্চ সংসদ ভবন অভিযান করবে সারা ভারত কৃষকসভা’।


এত পরিশ্রম ও খরচ করে চাষ করেও ডোংরে ফসলের দাম পাচ্ছে না। এই কারণে কেন্দ্র ও রাজ্যের বিজেপি সরকারকেই দায়ি করেছেন তিনি। কৃষ্ণ ডোংরে বলেন ‘আমার মতো ফসলের দাম পাচ্ছেন না বহু চাষি। উল্টে নিজেদের পকেট থেকে অতিরিক্ত টাকা দিয়ে ফসল বিক্রি করছে। সেই কারণে আমি এই ভাবে প্রতিবাদ করলাম। কেউ না হোক অন্ততপক্ষে একজনই নয় প্রতিবাদ করল।’  ফসলের দাম পাবে না এই আশঙ্কায় মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী একনাথ শিন্ডেকে নিজের হাত কেটে রক্ত দিয়ে চিঠিও দিয়েছিলেন ডোংরে। কিন্তু তার আক্ষেপ রাজ্য-কেন্দ্র কোনও সরকারই তার ডাক শোনেননি। সেই কারনে ফসল জ্বালিয়ে প্রতিবাদ করলেন যাতে আখেরে সরকারের টনক নড়ে।


হোলি মার্চেট ৮ তারিখ। অবাঙ্গালিদের মধ্যে হোলিকা দহনের প্রচলন আছে। কিন্তু সেই দহন আনন্দের উচ্ছাসের। অসুভ শক্তিকে পরাস্ত করার। কিন্তু নাসিকের এই কৃষকের কাছে নিজের ফসল জ্বালিয়ে দেওয়ার মতো কষ্ট আর কিছুতে নেই। হঠাৎই ফসলের দামে চরম পতন। কিন্তু সরকার কোনও ভাবেই কৃষকের এই আর্থিক ঘাটতি মেটাতে পাশে থাকবেন না। সেকারণে ফসল জ্বালানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া। তার এই প্রতিবাদে তার পাশে থেকেছে সারা ভারত কৃষক সভা।

Comments :0

Login to leave a comment