Editorial

এবার দুর্গাপুর

সম্পাদকীয় বিভাগ

মহিলাদের বিরুদ্ধে অপরাধ কমার যে কোনও সম্ভাবনাই নেই মমতা জমানায় আরও একবার চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিল দুর্গাপুরে ডাক্তারি ছাত্রীর দলবদ্ধ ধর্ষণের ঘটনা। এক বেসরকারি মেডিক্যাদল কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রীকে কলেজ ক্যাম্পাসের অদূরে দলবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হতে হয়েছে। তবে এই ছাত্রীর সৌভাগ্য ধর্ষকরা তাকে প্রাণে মেরে ফেলেনি। আরজি কর মেডিক্যা্ল কলেজ হাসপাতালে তরুণী চিকিৎসককে হাসপাতালের মধ্যেই কর্মরত অবস্থায় দলবদ্ধ ধর্ষণ করে খুন করা হয়েছিল। আরজি কর সরকারি হাসপাতাল। এই ঘটনায় অধ্যক্ষ সহ প্রশাসনের বড় বড় মাথা এবং শাসক তৃণমূল নেতারা নানাভাবে জড়িত থাকায় পুলিশ গোড়া থেকেই অতি মাত্রায় সক্রিয় হয় অপরাধীদের ধরার জন্য নয়, বরং অপরাধীদের আড়াল করার জন্য। কোনও অবস্থাতেই যাতে ধর্ষক ও ধর্ষকের মদতদাতারা ধরা না পড়ে তার জন্য যাবতীয় তথ্য প্রমাণ লোপাট করতে মরিয়া হয়ে ওঠে পুলিশ। ঘটনাস্থল থেকে যাতে সঠিক নমুনা সংগ্রহ করা না যায় তাই ঘটনাস্থল সুরক্ষিত রাখা হয়নি। ময়নাতদন্ত হয়নি সঠিক পদ্ধতি অনুসরণ করে, দ্বিতীয়বার যাতে ময়নাতদন্তের সুযোগ না থাকে তাই পুলিশ ও তৃণমূল নেতারা জোর করে তড়িঘড়ি দেহ পুড়িয়ে ফেলে। ফলে অভয়ার ন্যায় বিচার আজও মেলেনি। তার উপর দিদি-মোদী সেটিংয়ের কল্যাণে সিবিআই তদন্তও গুটিয়ে যায়।
দুর্গাপুরের ক্ষেত্রে শেষ পর্যন্ত পুলিশ কি করে এখন দেখার। যদি দেখা যায় ধর্ষকদের সঙ্গে শাসকের যোগ আছে তাহলে নিশ্চিতভাবে বলে দেওয়া যায় এখানেও বিচারের নামে প্রহসন হবে। তেমনি কলেজ কর্তৃপক্ষের সঙ্গে তৃণমূলের যোগাযোগ তদন্তের গতি বদলে দিতে পারে। গত দেড় দশকের অভিজ্ঞতা এরাজ্যে ধর্ষণ সহ যে কোনও ধরনের অপরাধীদের সরাসরি বা পরোক্ষ যোগ রয়েছে শাসক দলের সঙ্গে। তাই অপরাধের ক্ষেত্রে অপরাধীরা নির্ভয়ে অপরাধ সংগঠিত করে থাকে। তারা জানে দল ঠিক বাঁচিয়ে দেবে। তৃণমূলও জানে অপরাধীরাই তাদের দলের প্রধান সম্পদ। এরা না থাকলে ভোট লুট করে জেতা যাবে না। তাই ক্ষমতার স্বার্থে অপরাধীদের সুরক্ষা দেওয়া এবং যাবতীয় অপরাধ সমর্থন করা তৃণমূলের দায়। এ কারণেই বাংলা চোর, ডাকাত, খুনি, ধর্ষকদের স্বর্গরাজ্য। রাজ্যে যত অপরাধের ঘটনাই ঘটুক না কেন অপরাধী যদি শাসকের কাছের হয় তাহলে থানায় গিয়ে মাথা কুটে মরলেও ডাইরি হবে না। হলেও তদন্ত এগবে না। এগলেও যাবে উলটো পথে। তাই এরাজ্যে অপরাধ শত গুণ বাড়লেও সরকারি তথ্যে কম দেখা যায়। কারণ শাসকের মদতপুষ্ট অপরাধীদের বাঁচাতে গিয়ে অপরাধের ঘটনা অত্যন্ত কম নথিভুক্ত হয়। আর যেগুলি নথিভুক্ত হয় সেগুলিতে সাজা পাবার ঘটনা খুবই কম। অবশ্য বিরোধীদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলায় পুলিশের সক্রিয়তায় খামতি নেই।
 

Comments :0

Login to leave a comment