সর্বশিক্ষা অভিযান, শিক্ষিতের পরিমাণ বাড়াতে হবে,ন্যুনতম চাহিদার জায়গায় শিক্ষাকে রাখতে হবে। ফলাও করে সরকার বিজ্ঞাপন দিয়ে তা প্রচার করছে। অথচ শিক্ষাকেন্দ্রের হাল বেহাল সে ব্যাপারে ন্যুনতম নজর নেই সরকারের। এভাবে চলতে থাকলে ঘরের ছোট ছোট ছেলে মেয়েদের আর স্কুলে পাঠাবেন না। কারণ স্কুল এখন মরণফাঁদ। প্রধান শিক্ষক সংশ্লিষ্ট দপ্তরে বহুবার জানিয়েছেন। ফল কিছু হয় নি। জীবন বাঁচাতে আপাতত ছাতাই ভরসা ছাত্র ছাত্রীদের। ছাতা মাথায় দিয়ে চলছে পঠনপাঠন। এমনই নির্মম চিত্র নোনা মাটির দেশ হিঙ্গলগঞ্জের পুকুরিয়া গ্রামে। বৃহস্পতিবার গ্রামে গিয়ে দেখা গেল স্কুলের মধ্যে ছাতা মাথায় দিয়ে বসে আছে ছাত্র ছাত্রীরা। কারণ জানতেই স্কুল পড়ুয়াদের উত্তর স্কুলের ছাদের চাঙড় খসে পড়ছে। প্রাণ বাঁচাতে আমরা ছাতা মাথায় দিয়ে ক্লাস করছি। ছাদ সারাই না হলে স্কুলে আর আসবো না। বললো রিম্পা সর্দার। যেভাবে চাঙড় ভেঙে পড়ছে তাতে করে কোন ভরসায় আর স্কুলে পাঠাই বলুন! বাড়ির কাছে এই একটাই স্কুল। অনেক দূরে আর একটি স্কুল আছে। সেখানে এই একরত্তি বাচ্চাগুলোকে কোন ভরসায় পাঠাই বলুন? লেখাপড়া বোধহয় এবার বন্ধ হয়ে যাবে। বললেন অভিভাবক গঙ্গা সর্দার।
হিঙ্গলগঞ্জ ব্লকের দুলদুলি পুকুরিয়া আদিবাসী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ঘটনা।
খুবই বিপজ্জনক অবস্থা স্কুল ঘরের। বেশ কয়েকদিন ধরেই স্কুল ঘরের ছাদের চাঙর ভেঙে পড়ছে। এদিনও যখন স্কুল চলছিল তখন চাঙর ভেঙে পড়ে অল্পের জন্য রক্ষা পায় ছাত্র ছাত্রীরা। ছাতা মাথায় দিয়ে স্কুল করছে ছাত্র-ছাত্রীরা যাতে কিছুটা হলেও রক্ষা হয়। ছাত্র-ছাত্রীদের অভিভাবকদের দাবি যতদিন স্কুল সারাই না হবে ততদিন স্কুলের ছাত্র-ছাত্রীদের আর পাঠাবে না। স্কুলের এই অবস্থা স্বীকার করে নিল প্রধান শিক্ষক রুদ্রপ্রসাদ মন্ডল। বললেন, বহুদিন ধরে চাঙড় ভেঙে পড়ছে। বহুবার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে কয়েক বছর ধরে জানিয়েছে কিন্তু কোন কাজ হয়নি। বছরে ডাইস পূরণ করতে হয়। ডাইস ফর্মেও জানিয়েছি। কিন্তু কোন ব্যবস্থা হয় নি। বিডিও অফিসেও জানিয়েছি। তাতেও কোন ফল হয় নি। ভিলেজ এডুকেশন কমিটিও(ভিসি) জানে। তারপরেও জীবনের ঝুঁকি নিয়ে শিক্ষক এবং ছাত্র ছাত্রীরা স্কুলে আসছে এবং স্কুল করছে। যদিও শিক্ষক অনুপাতে ছাত্র ছাত্রীর সংখ্যা খুবই কম। জানা গেল এই প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ৩জন শিক্ষক ও ৪৮জন ছাত্র ছাত্রী পড়ে। যেখানে ছাত্র ছাত্রীর সংখ্যা থাকার কথা ছিল ৯০ জন। কারণ হিসাবে জানা গেল 'ড্রপ আউট' রোগে আক্রান্ত দুলদুলি পুকুরিয়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ও।
Comments :0