সাংসদ তহবিলের ৭৫ কোটি টাকার হিসেব তৃণমূলের কাছে চাইলেন যাদবপুর লোকসভা কেন্দ্রের সিপিআই(এম) প্রার্থী সৃজন ভট্টাচার্য। তিনি বলেন, ‘‘গত তিনটি লোকসভা নির্বাচনে যাদবপুর থেকে তৃণমূলের তিনজন সাংসদ জয়ী হয়েছেন। একজন সাংসদ বছরে পাঁচ কোটি টাকা করে পায়। গত ১৫ বছরে সেই টাকা খরচ করেনি তৃণমূলের সাংসদরা। খরচ তো দুর কোন খাতে সেই টাকা তারা বরাদ্দ করেনি। আমরা বামপন্থীরা বলছি যাদবপুরের মানুষ আমাদের সমর্থন করলে ২৫ কোটি টাকার সব খরচ হবে এবং তার খতিয়ান মানুষের কাছে দেওয়া হব।’’
যাদবপুর লোকসভার মানুষ তাকে সাংসদ করে সংসদে পাঠালে কোন কাজ করবেন সেই খতিয়ান সাংবাদিক সম্মেলন করে জানিয়ে দিলেন সৃজন ভট্টাচার্য। বুধবার সাংবাদিক সম্মেলনে সৃজন বলেন, ‘‘ইউপিএ সরকার শিক্ষাকে মৌলিক অধিকার করেছিল। শিক্ষার পাশাপাশি কাজকেও মৌলিক অধিকার করতে হবে। জিনিসের দাম কমাতে হবে। এই কথা প্রথম ভাষনে বলবো।’’
তিনি বলেন, ‘‘যাদবপুরের তৃণমূল সাংসদরা সাংসদ তহবিলের টাকা খরচ করেনি। সাংসদ তহনিলের ২৫ কোটি টাকা পুর খরচ করা হবে। বারুইপুরকে জেলা সদর করার জন্য জমি পড়ে আছে। ওই ৫০০ একর জমির সদ ব্যবহার করা হবে। বারুইপুর হাসপাতালকে মেডিকেল কলেজ এবং হাসপাতাল করার লড়াই। বারুইপুর পর্যন্ত মেট্রো চলাচল। জগদ্দলে আইটি পার্ক যা বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য্য তৈরি করতে চেয়েছিলেন তা শেষ করা হবে। বারুইপুর সোনারপুরের মধ্যে যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতি।’’
যাদবপুরে দীর্ঘ ১৫ বছর তৃণমূলের সাংসদ থাকলেও যোগাযোগ ব্যবস্থা গনপরিবহন উন্নতির জন্য কোন কাজ করা হয়নি। নতুন করে কোন পরিকল্পনা করা হয়নি বলে দাবি করেছেন সিপিআই(এম) প্রার্থী। সৃজন বলেন, ‘‘ইএম বাইপাস যা বামপন্থীদের তৈরি সেখানকার গনপরিবহন উন্নতি করা। ৬ নম্বর রুটের গনপরিবহন নেই। সরকারকে বাধ্য করে গন পরিবহন বাড়ানোর পরিকল্পনা আছে।’’ গড়িয়া, সোনারপুর রেল স্টেশনে আন্ডার পাস তৈরি করার পরিকল্পনাও আছে বলে জানিয়েছেন তিনি। যাদবপুরে বৃষ্টির জল ধরে রাখা এবং তাকে ব্যবহার করার জন্য জলাধার তৈরি।
পূর্বে ক্যানিং থেকে বারুইপুর পর্যন্ত একটি বাস ছিল। তা বন্ধ হয়ে গিয়েছে তৃণমূল সরকারের সময়। সেই রুট নতুন করে চালু করা এবং তা গড়িয়া পর্যন্ত নিয়ে আনার কথা জানিয়েছেন সৃজন।
তার কথায় মুখে উন্নয়নের কথা বললেও সোনারপুর বারুইপুর পৌর এবং পঞ্চায়েত এলাকায় যথাযত বাতিস্তম্ভ নেই। ওই সব এলাকার মানুষের জন্য নতুন বাতিস্তম্ভ বসানো কাজ করতে হবে। বারুইপুরে হিম ঘর তৈরি এবং ফল প্রক্রিয়াকরণ শিল্প তৈরি করার পরিকল্পনা আছে তার।
রেলের নিত্যযাত্রীদের কথা মাথায় রেখে শিয়ালদহ দক্ষিণ শাখার একাধিক বিভাগে ট্রেন বৃদ্ধি করার কথা জানিয়েছেন সৃজন ভট্টাচার্য্য।
তিনি বলেন, ‘‘ভাঙড়ে যা হয়েছে তা বামপন্থীদের সময় হয়েছে। ভাঙড়ে আর সুভাষগ্রামে ভালো হাসপাতাল তৈরি করতে চাই। ইস্ট কলকাতা ওয়েট ল্যান্ডকে রক্ষা করে পরিবেশ বান্ধব উন্নয়ন করা হবে। ভাঙড়ের লেদার কমপ্লেক্স উন্নয়ন এবং কর্মসংস্থার বৃদ্ধি করা হবে।’’
যাদবপুর লোকসভা জুড়ে বেআইনি নির্মান বন্ধ করা অন্যতম লক্ষ বলে জানিয়েছেন সৃজন ভট্টাচার্য্য। তার সাথে পানীয় জল এবং নিকাশি ব্যবস্থার উন্নয়ন, খাল সংস্কারের কাজ হবে।
সৃজন বলেন, ‘‘অতীতে তৃণমূলকে ভোট দিয়েছেন কিন্তু এখন তাদের চুরি ডাকাতি পছন্দ করছেন না। বিজেপির দাঙ্গাবাজির জন্য পছন্দ করছেন না এমন অনেক মানুষ বামপন্থীদের সমর্থন করবেন।’’
Comments :0