USA-CHINA MEET

চীনের বিদেশমন্ত্রীর সঙ্গে দু’দিনের বৈঠক আমেরিকার নিরাপত্তা উপদেষ্টার

আন্তর্জাতিক

USA CHINA GEO POLITICS INDIA JAPAN BENGALI NEWS

চীনের বিদেশমন্ত্রী ওয়াঙ ইয়ের সঙ্গে দু’দিন ধরে বৈঠক করলেন মার্কিন রাষ্ট্রপতি জো বাইডেনের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জেক সুলিভান। সংবাদ সংস্থা এপি জানিয়েছে, ভূমধ্যসাগরের দ্বীপরাষ্ট্র মাল্টায় হয়েছে এই বৈঠক। রবিবার এবং সোমবার মিলিয়ে ১২ ঘন্টার বৈঠক করেন তাঁরা। 

প্রেস বিবৃতি দিয়ে ওয়াশিংটন জানিয়েছে, সুলিভান এবং ওয়াঙ ই’র মধ্যে বৈঠক ফলপ্রসূ হয়েছে। ওয়াকিবহাল মহল মনে করছে, সাম্প্রতিক সময়ে দুই শক্তির মধ্যে তিক্ততা বেড়েছে। একে অপরের বিভিন্ন কাজকে সন্দেহের চোখেও দেখেছে চীন এবং আমেরিকা। চীনকে আন্তর্জাতিক অর্থনীতিতে প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবেই দেখে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। আবার পারস্পরিক বাণিজ্যের বাস্তবতাও অগ্রাহ্য করার নয়।

ওয়াং বলেছেন, ‘খোলামেলা, গঠনমূলক এবং বিষয় নির্দিষ্ট আলোচনা হয়েছে।’’ তাইওয়ান প্রণালী এবং আঞ্চলিক নিরাপত্তা বিষয়ে মতবিনিময় হয়েছে বলে জানিয়েছে মার্কিন সংবাদমাধ্যম। আগামী কয়েক মাসে একাধিক বৈঠকের সম্ভাবনাও জানিয়েছে হোয়াইট হাউস।

একাংশের অভিমত, আলোচনার রাস্তা পুরোপুরি বন্ধ না হয়ে যায়, সেই চেষ্টা করছে দু’পক্ষ। মতবিনিময়ের রাস্তা খোলা রাখার জন্য এর আগে আবেদন জানিয়েছিলেন চীনের রাষ্ট্রপতি শি জিনপিঙ।

মাল্টা বৈঠকের আগে চলতি বছরের মে মাসে অস্ট্রিয়ার ভিয়েনা শহরে মুখোমুখি হয়েছিলেন সুলিভান এবং ওয়াঙ। নয়া দিল্লিতে অনুষ্ঠিত জি-২০ বৈঠকের মাঝে কথা হয় মার্কিন রাষ্ট্রপতি জো বাইডেন এবং চীনের প্রধানমন্ত্রী লি কিয়াঙয়ের। সূত্রের খবর, প্রতিটি বৈঠকেই স্বাভাবিক সম্পর্ক রাখার ওপর জোর দেয় চীন।

চীনের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ বাণিজ্যিক সম্পর্ক থাকলেও একাধিক ইস্যুতে তাঁদের সঙ্গে সংঘাতে জড়িয়েছে আমেরিকা। মূলত প্রশান্ত মহাসাগর অঞ্চলের কর্তৃত্ব নিয়ে চীনের সঙ্গে বিবাদের পথে হাঁটার চেষ্টা করেছে ওয়াশিংটন। দক্ষিণ চীন সাগর নিয়েও বিবাদ রয়েছে। ভারত, জাপান, অস্ট্রেলিয়াকে নিয়ে মার্কিন উদ্যোগে তৈরি কোয়াডের মূল লক্ষ্য চীনকে হুমকির মুখে রাখা। 

জি-২০’র ঠিক আগে আসিয়ান বৈঠকে চীনের প্রধানমন্ত্রী লি কিয়াঙ ঠান্ডা যুদ্ধ পরিস্থিতি তৈরি না করার পক্ষে জোরালো বক্তব্য রাখেন। বিশ্বের অগ্রগতির পক্ষে এমন নীতি কার্যকর নয়, ব্যাখ্যা করেন তিনি। গত রবিবার বাইডেনও বলেন যে চীনের সঙ্গে কোনওরকম ঠান্ডা যুদ্ধে অবতীর্ণ হতে চান না তাঁরা। বরং দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার সঙ্গে বাণিজ্যিক সম্পর্ক দৃঢ় করার কাজ করছেন। 

মুখে শান্তির কথা বললেও তাইওয়ানকে সামরিক সাহায্য বহাল রেখেছে আমেরিকা।  শি জিনপিং তৃতীয় বারের জন্য চীনের রাষ্ট্রপতি হওয়ার পরেই চীনে অত্যাধুনিক কম্পিউটার চিপের রপ্তানি বন্ধ করে মার্কিন প্রশাসন। 

মঙ্গলবার থেকে নিউ ইয়র্কে রাষ্ট্রসঙ্ঘের জেনারেল অ্যাসেম্বলি’র বৈঠকে সমবেত হবেন রাষ্ট্রপ্রধানরা। বৈঠক চলাকালীন কাজাখস্তান, কিরঘিজস্তান, তাজিকিস্তান, তুর্কমেনিস্তান এবং উজবেকিস্তানের  রাষ্ট্রপ্রধানদের সঙ্গে কথা বলবেন বাইডেন। চীনের তরফেও মধ্য এশিয়ার এই দেশগুলির সঙ্গে সম্পর্ক মজবুত করার চেষ্টা চলছে। চলতি বছরের মে মাসে এই পাঁচ দেশের রাষ্ট্রপ্রধানদের সঙ্গে বৈঠক করেন খোদ শি জিনপিং। এই অঞ্চলে রেল সংযোগ গড়ার বিষয়ে জোর দিচ্ছে চীন। একইসঙ্গে যৌথভাবে প্রাকৃতিক গ্যাস এবং পেট্রোলিয়াম শিল্প গড়ার বিষয়েও কথা এগিয়েছে। 

আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, চীন যাতে একতরফা মধ্য এশিয়ায় প্রভাব বিস্তার করতে না পারে, তাই বাইডেন  নিজে হস্তক্ষেপ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।                                                                                                                                                       

Comments :0

Login to leave a comment