দশম পঞ্চায়েত নির্বাচন উপলক্ষে শুক্রবার বিকালে বৃষ্টি উপেক্ষা করে বাদুড়িয়া, বসিরহাট-১নং ব্লক জুড়ে একাধিক সভা হয়। বাদুড়িয়া ব্লকের উত্তর যদুরহাটি গ্রাম পঞ্চায়েতের পঞ্জি মামুদপূ্র এফপি স্কুল মাঠে জনসভা হয়। শুরুতে জঙ্গলপুর থেকে মিছিল হয়। ৩কিলোমিটার পথ হেটে মিছিল সভাস্থলে আসে। সভাপতিত্ব করেন স্বপন রায়। বক্তব্য রাখেন সিপিআই(এম) উত্তর ২৪ পরগনা জেলা সম্পাদক মৃণাল চক্রবর্তী, রানা রায়, ছাত্র নেতা ঋতঙ্কর দাস। অন্যদিকে যশাইকাটি আটঘরা গ্রাম পঞ্চায়েতের আটঘরা গ্রামে বক্তব্য রাখেন পার্টি নেতা সায়নদীপ মিত্র সহ অন্যান্য। বসিরহাট-১নং ব্লকের গোটরা, পিফা গ্রাম পঞ্চায়েতের একাধিক সভায় বক্তব্য রাখেন পার্টি নেতা তন্ময় ভট্টাচার্য, রাজুর আহমেদ,প্রতাপ নাথ, এসএফআই সর্বভারতীয় সম্পাদক ময়ূখ বিশ্বাস। সভাগুলিতে নেতৃবৃন্দ বলেন, অতীতের জমিদার জোতদারদের দ্বারা পরিচালিত চৌকিদারী পঞ্চায়েত ব্যবস্থার কথা উল্লেখ করে বলেন, তখনকার গ্রামাঞ্চল আজকের গ্রামাঞ্চলের মধ্যে আকাশ পাতাল ফারাক।
বামফ্রন্ট সরকার ক্ষমতায় আসার পর ১৯৭৮ সালে ত্রিস্তরীয় পঞ্চায়েতী ব্যবস্থার মধ্যে দিয়ে তিলতিল করে গড়ে তোলা গ্রাম থেকে গ্রামান্তর আজ ধ্বংসের মুখে। একমাত্র লক্ষ্য গরীবদের সম্পদ লুট করো। যুব সমাজকে বিপদগামী করে তুলছে। সমাজবিরোধীরা এখন সমাজসেবী হয়েছে। টানা ৩৪ বছর গ্রামের মানুষ দেখেছে পঞ্চায়েত নির্বাচনকে কি ভাবে উৎসবে পরিণত করতে হয়। অথচ রাজ্যে তৃণমূল ক্ষমতায় আসার পর আতঙ্ক, ভয়, সন্ত্রাসের আবহে ভোট হচ্ছে। হাসনাবাদের নবনির্বাচিত সভাপতি জাহাঙ্গীর আলমকে খুন করে পঞ্চায়েত সমিতি দখল নিয়েছিল। সেই দখলদারিত্ব কায়েম রেখে তৃণমূল পঞ্চায়েত,পঞ্চায়েত সমিতি, জেলা পরিষদের সদস্যরা প্রাচুর্যের পাহাড় তৈরি করছে। মার খাচ্ছেন প্রকৃত গরীব মানুষ। আমফানে ক্ষতিপূরণ পেলেন না ক্ষতিগ্রস্তরা, আবাস যোজনায় প্রকৃত উপভোক্তা ঘর পাচ্ছেন না। বামপন্থীদের আন্দোলনের চাপে ১০০ দিনের কাজ চালু হয়েছিল। সেখানেও সীমাহীন লুটপাট চালিয়েছে।
তৃণমূল প্রচার করছে তৃণমূল হেরে গেলে লক্ষ্মীর ভান্ডার সহ যাবতীয় সরকারি প্রকল্প বন্ধ হয়ে যাবে। না। বামফ্রন্ট সহ অন্যান্য সহযোগিরা ক্ষমতায় এলে একটিও সরকারি প্রকল্প বন্ধ হবে না। তৃণমূলের আমলে যে সমস্ত প্রকল্প দেখছেন তার অধিকাংশ বামফ্রন্টের সময়ে চালু করা। তৃণমূল নাম পাল্টে মানুষের মনে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করছে। সবকিছু গুলিয়ে দিচ্ছে। কোনরকম প্ররোচনায় পা দেবেন না। এলাকায় এলাকায় বাইকবাহিনী দিয়ে ভয়ের পরিবেশ তৈরি করার চেষ্টা চলছে।
নেতৃবৃন্দ বলেন, ভয় না পেয়ে মেরুদণ্ড সোজা রেখে জয় ছিনিয়ে আনতে হবে। তৃণমূল বিজেপিকে হারানোই আমাদের লক্ষ্য। গ্রামে গ্রামে আরএসএস বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনের নামে মানুষের মনে সাম্প্রদায়িকতার বিষ ছড়াচ্ছে। ওদের কাজ মানুষের মধ্যে ভাগাভাগি করে দাও। তৃণমূল বিজেপি এই দুই শক্তিকে হারাতে হবে গণতন্ত্রের স্বার্থে এবারের পঞ্চায়েত নির্বাচনে। সঠিক নীতি, প্রকৃত উন্নয়ন, কাজ, মজুরি বৃদ্ধির প্রশ্নে এবারের পঞ্চায়েত নির্বাচনে আমাদের লড়াই। তপশিলী জাতি, উপজাতি, সংখ্যালঘু, পিছিয়ে পড়া গ্রামীণ শ্রমজীবি মানুষের মুক্তির জন্য আমরা লড়াই করছি। জীবন জীবিকা রক্ষা হকের দাবিতে আমাদের লড়াই শুরু হয়েছে। পঞ্চায়েত থেকে চোর তৃণমূলকে তাড়াতে হবে। গরীবের পঞ্চায়েত গড়তে হবে। হাতে সময় আর মাত্র একসপ্তাহ। বুথ ছাড়বেন না। দিনরাত এক করে মানুষের দরজায় দরজায় যান। তাদের দাওয়ায় বসুন। মানুষ বুঝে গেছে তৃণমূল চোর বিজেপি ডাকাত। তৃণমূল বিজেপি বিরোধী সব মানুষকে ঐক্যবদ্ধ করুন। মানুষ আমাদের মূল শক্তি। মানুষ শেষ কথা বলে। সেই মানুষকে নিয়ে জোর ধাক্কা দিন।
Comments :0