‘‘সরকারকে স্পষ্ট করতে হবে, ‘অগ্নিপথ’ প্রকল্প চালুর পরে সেনাবাহিনীতে বার্ষিক যোগদানের সংখ্যা ৭৫ হাজার থেকে কমে ৪৬ হাজার হয়েছে না হয়নি?’’
মঙ্গলবার এই প্রশ্ন তুললেন জাতীয় কংগ্রেসের সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গে। পাঞ্জাবের ফরিদকোট সহ একাধিক জনসভায় ভাষণ দেন তিনি।
১ জুন সপ্তম এবং শেষ দফার নির্বাচন এবারের লোকসভার। ৩০ জুন প্রচার শেষ হবে। তার আগে ‘ইন্ডিয়া’ নেতৃবৃন্দ দেশের বিভিন্ন জায়গায় ভাষণ দিয়েছেন। ‘অগ্নিপথ’ প্রকল্পের পাশাপাশি প্রশ্ন তুলেছেন কৃষিতে কেন্দ্রের নরেন্দ্র মোদী সরকারের ভূমিকায়।
খাড়গে বলেছেন, ‘‘কেন্দ্রীয় প্রতিরক্ষা মন্ত্রী রাজনাথ সিং কেন একাধিক বার বলেছেন যে ‘অগ্নিপথ’ প্রকল্প নিয়ে ভাবনাচিন্তা প্রয়োজন। কেন তিনি বলছেন যে দরকারে প্রকল্পে বদল প্রয়োজন?’’
জনসভার পাশাপাশি সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার করেও এই প্রকল্পের বিরুদ্ধে জনমত গড়ার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে কংগ্রেস। কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গে নিজের এক্স অ্যাকাউন্টে লিখেছেন, ‘‘ অগ্নিপথ প্রকল্পের নামে দেশের সুরক্ষার সঙ্গে ছেলেখেলা করেছে বিজেপি।’’
একইসঙ্গে খাড়গে প্রশ্ন করেছেন, ‘‘কেন্দ্রীয় সামরিক বিষয়ক বিভাগ বা ডিএমএ রিপোর্ট অনুযায়ী, দেশে সামরিক বাহিনীতে যোগদানের ক্ষেত্রে অনীহা দেখা যাচ্ছে। তার ফলে পর্যাপ্ত সংখ্যক সৈনিক পাওয়া যাচ্ছে না। এই প্রবণতা ‘অগ্নিপথ’ প্রকল্প চালুর পরে শুরু হয়েছে। এই রিপোর্ট সত্যি কিনা, সেটা সরকারকে স্পষ্ট করতে হবে।’’
খাড়গের পাশাপাশি ‘অগ্নিপথ’ নিয়ে সরব হয়েছেন কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক জয়রাম রমেশ। প্রশাসনিক স্তরেই এই প্রকল্পে সমস্যার কথা উঠে এসেছে বলে জানা গিয়েছে। প্রকল্পে একাধিক বদলেরও প্রস্তাব রয়েছে।
সেই প্রসঙ্গ তুলে ধরে রমেশ নিজের এক্স অ্যাকাউন্টে লিখেছেন, ‘‘অগ্নিপথ প্রকল্প চালুর ফলে সামরিক বাহিনীতে যোগদানের ব্যাপারে আগ্রহ হারাচ্ছে দেশের যুবসমাজ। পূর্ব লাদাখ সহ একাধিক সীমান্তে আমাদের নিয়মিত সেনাকর্মীর যোগান প্রয়োজন। কিন্তু অগ্নিপথ চালুর ফলে বার্ষিক যোগদানের সংখ্যা ৭৫ হাজার থেকে কমে ৪৬ হাজারে এসে ঠেকেছে। এই সংখ্যা হ্রাস দেশের সুরক্ষার জন্য বিপদজনক হতে পারে।’’
রাহুল গান্ধী অগ্নিপথ প্রকল্প নিয়ে তীব্র আক্রমণ করে বলেছেন, ‘‘অগ্নিপথ প্রকল্প চালু করে জাতীয় সুরক্ষা এবং যুবসমাজের ভবিষ্যৎ নিয়ে খেলা করেছে নরেন্দ্র মোদী সরকার। ‘ইন্ডিয়া’ এই প্রকল্পকে সমূলে বাতিল করবে। যুবসমাজের উদ্যমকে অপমান করেছে মোদী সরকার।’’
২০২২ সালে কেন্দ্রীয় সরকার ‘অগ্নিপথ’ প্রকল্প চালু করে। সাড়ে সতেরো বছর থেকে ২১ বছর বয়সী যুবকরা এই প্রকল্পের মাধ্যমে সেনাবাহিনীতে যোগ দিতে পারবেন। যোগদানকারীদের নাম হবে ‘অগ্নিবীর’। ৪ বছর পরে ৭৫ শতাংশ ‘অগ্নিবীর’-কে ছেঁটে ফেলবে সেনাবাহিনী। মাত্র বাকি ২৫ শতাংশ অগ্নিবীর আরও ১৫ বছর সেনায় থাকতে পারবে।
অগ্নিপথ প্রকল্পের মাধ্যমে সেনাবাহিনীতে স্থায়ী জওয়ান নিয়োগের প্রথা তুলে দিয়েছে মোদী সরকার। ‘অগ্নিবীর’ শহীদ হওয়ার পরে যথাযত সম্মানও পাননা বলে একাধিক অভিযোগ উঠেছে। মেয়াদের পর এই অস্থায়ী সেনারা কী করবেন, তারও কোনও স্পষ্ট উত্তর নেই সরকারের কাছে। যদিও কেন্দ্রের দাবি, ভারতীয় সেনার গড় বয়স কমাতেই এই উদ্যোগ।
এদিন প্রধানমন্ত্রীর কেন্দ্র বারাণসীতেও ভাষণ দেন রাহুল। তাঁর দাবি, উত্তর প্রদেশে কংগ্রেস এবং সমাজবাদী পার্টির ঝড় দেখা যাবে। রাহুলের মন্তব্য, ‘‘গুডবাই নরেন্দ্র মোদী, গুডবাই বিজেপি। টাটা।’’
AGNIVEER KHARGE
‘অগ্নিপথ’-এ সেনায় যোগদান কমেছে ২৯ হাজার: অভিযোগ খাড়গের
×
Comments :0