বই
পশ্চিমবঙ্গে সঙ্ঘ পরিবার কিভাবে কাজ করে
প্রদোষকুমার বাগচী
মুক্তধারা
পশ্চিমবঙ্গে সঙ্ঘ পরিবার কিভাবে তার বিস্তৃতি ঘটাচ্ছে এবং তার ফলে বিপদ কতটা বাড়ছে তা নিয়ে অনেকেরই জানবার
আগ্রহ আছে। সঙ্ঘ পরিবারের মাথা আরএসএস। তারা হিন্দুত্ববাদী মতাদর্শের কথা বলে। কিন্তু সেই মতাদর্শ দেশের সমস্ত
অংশের হিন্দু সমাজের ভাবনাকে প্রতিফলিত করেনা এই কারণে যে, এটি হিন্দুত্ববাদীদের একটি রাজনৈতিক অ্যাজেন্ডা,
ক্ষমতা দখলের উপায় মাত্র, মুখে যতই তারা নিজেদের সাংস্কৃতিক সংগঠন বলে ঢোল পেটাক। ফলে এই লক্ষ্য সাধনে
আরএসএস’র পরিচালনায় হিন্দুত্ববাদী শক্তিগুলি ধর্মের নামে বিভেদ বাড়িয়ে এগিয়ে যাওয়ার কৌশল নিয়েছে।
আরএসএস’র জন্ম ১৯২৫। তার চার বছরের মধ্যে পশ্চিমবঙ্গে প্রথম আরএসএস’র শাখা খোলা হয়েছিল মানিকতলার
তেলকল মাঠে ১৯৩৯ সালে। কিন্তু স্বাধীনতার পর থেকে পশ্চিমবঙ্গে রাজনৈতিক শক্তি হিসাবে হিন্দু মহাসভা, জনসংঘ বা
বিজেপি কখনই তেমন বলার মতো মাটি পায়নি। গোড়ার দিকে পশ্চিমবঙ্গের মাটিতে উদার ভাবধারা, বামপন্থী চিন্তাধারা ও
প্রগতিশীল মানসিকতার যে প্রবাহ ছিল তার সামনে দাঁড়াতে পারেনি সঙ্ঘ পরিবার। কিন্তু ২০০৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে
পশ্চিমবঙ্গে বামশক্তির দুর্বলতা প্রকাশ্যে এলে জায়গা করতে শুরু করে আরএসএস। তার আগে এদের কোনও অস্তিত্ব
সেভাবে লক্ষ্য করা যায়নি। ২০১১ সালের পর এ রাজ্যের রাজনৈতিক ভারসাম্যের পরিবর্তনের সুযোগে বিজেপি প্রমাণ
করেছে যে তার শক্তি বাড়ছে। কারণ বামেরা দুর্বল। পশ্চিমবঙ্গে ঐ সময় আর এসএসএস’র শাখার সংখ্যা ছিল ৪১৩টি।
১২ বছরে বৃদ্ধি হয়েছে ১০ গুণ। এছাড়া রাজ্যে আরএসএস স্কুল চালাচ্ছে ৩৩৬টি। পড়ুয়ার সংখ্যা ৮৮ হাজার। এর মধ্য
দিয়ে ৮৮ হাজার পরিবারের সঙ্গে তারা নিয়ত যোগাযোগ রেখে চলে। এছাড়াও ১০টি জায়গায় তারা হস্টেল চালায়। একল
স্কুল, সরস্বতী শিশু মন্দির ও বিদ্যাভারতীর স্কুলগুলির মাধ্যমে হিন্দুত্ববাদী মতাদর্শ ও রাজনীতির ট্রেনিং দেওয়া হয়। ২০১১
সালের পর থেকে আরএসএস পশ্চিমবঙ্গে কিভাবে শক্তি বাড়িয়ে তাদের রাজনৈতিক শাখা বিজেপির ভোট বৃদ্ধি করিয়েছে সে
সম্পর্কে ধারণা দেবে এই বই।
পশ্চিমবঙ্গে সংঘ পরিবার : সংক্ষিপ্ত রূপরেখা
সত্যজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়। আপন পাঠ। বেলেঘাটা : কলকাতা- ৭০০ ০১০। ২১০ টাকা।
Comments :0