কলকাতায় ঠান্ডা তেমন না পড়লেও শিলিগুড়ির সঙ্গে উত্তরবঙ্গ জুড়ে পারদ নামতে শুরু করল। শীতের দাপট শুরু হয়েছে শিলিগুড়ি শহরে। শহর ছাড়িয়ে পাহাড়ে শীতের কামড় দেখা দিয়েছে শুক্রবার। এদিন দার্জিলিঙ পার্বত্য এলাকাতেও শৈত্যপ্রবাহের দেখা মিলল। ডিসেম্বর মাসের শেষে এসেও ঠিক মতো শীত না পড়ায় চিন্তিত উত্তরবঙ্গের মানুষের মুখে এদিন হাসি ফুটেছে।
শুক্রবার সকাল থেকেই শিলিগুড়িতে অন্যান্য দিনের তুলনায় ঠাণ্ডার প্রকোপ বাড়তে দেখা যায়। এদিন ভোরে কুয়াশাচ্ছন্ন ছিল শিলিগুড়ি শহর ও গ্রামাঞ্চল। লোকজন ও যানবাহনের সংখ্যাও ছিল অন্যান্য দিনের থেকে অনেকটাই কম। বেলা গড়াতে রোদের মুখ দেখা গেলেও তা বেশি সময় স্থায়ী হয়নি। আবহাওয়ার এই পরিবর্তনে পর্যটকরা দারুণ খুশি। অনেকেই বড়দিনের ছুটি কাটাতে শিলিগুড়ি সহ দার্জিলিঙে বেড়াতে এসেছেন।
দার্জিলিঙ পাহাড় থেকে শুরু করে ডুয়ার্সের ট্যুরিস্ট স্পটে এখন উপচে পড়ছে স্থানীয় ও বহিরাগত মানুষের ভিড়। তার প্রভাব পড়েছে সমতলের শিলিগুড়িতে। পাহাড় থেকে নেমে পর্যটকদের একটা অংশ শিলিগুড়িতে কিছুটা সময় কাটাচ্ছেন। শিলিগুড়ি হঙকঙ মার্কেটে পর্যটকদের ভিড় বাড়ছে। দাজিলিঙ ম্যালে এদিন পর্যটকদের ভিড় ছিল দেখার মতো।
আবহাওয়া অফিসের পূর্বাভাস অনুসারে, উত্তরবঙ্গের দার্জিলিঙ জেলা ও সিকিমে আগামী তিন দিন বিক্ষিপ্তভাবে এক-দুই জায়গায় বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা আছে। দার্জিলিঙের সান্দাকফু, সিকিমের লাচেন ও লাচুঙ সহ উঁচু জায়গাতে তুষারপাতও হতে পারে।
আবহাওয়ার এই পরিবর্তন প্রসঙ্গে সিকিম আবহাওয়া দপ্তরের কেন্দ্রীয় অধিকর্তা গোপীনাথ রাহা জানিয়েছেন, দিনের স্বাভাবিক তাপমাত্রার থেকে রাতের দিকের তাপমাত্রা আগামী দুই দিনে আরও ১ থেকে ২ ডিগ্রি কমে যাবে। শিলিগুড়িতে এদিন সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। দার্জিলিঙের পাহাড়ে এদিনের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ২.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
শীত পড়ায় খুশি শিলিগুড়ির গরম জামাকাপড়ের ছোট ব্যবসায়ীরাও। ডিসেম্বরের তৃতীয় সপ্তাহে শীত না পড়ায় ব্যবসায়ীরা তাঁদের গরম জামাকাপড় নিয়ে এত দিন প্রায় বসেই ছিলেন। তবে এদিন শহরের বিভিন্ন মার্কেটে জামাকাপড়ের দোকানগুলিতে শীতবস্ত্র কেনার জন্য ক্রেতারা ভিড় জমিয়েছিলেন। এরই মধ্যে এদিন সেজে উঠতে দেখা গিয়েছে শিলিগুড়ি হরেন মুখার্জি রোডের ভুটিয়া মার্কেটকে।
পাহাড় থেকে শীতবস্ত্র নিয়ে শিলিগুড়ি ভুটিয়া মার্কেটে পসরা সাজালেও এত দিন ভুটিয়া ব্যবসায়ীরা হতাশ ছিলেন। এদিন ঠান্ডা পড়ায় তাঁদেরও মুখে হাসি ফুটেছে। স্বল্প পরিসরে শহরের আশ্রম পাড়ার রামকৃষ্ণ ব্যায়াম শিক্ষা সমিতির মাঠে শীতের সম্ভার নিয়ে হাজির হয়েছেন সিকিম ও পাহাড়ি তিব্বতীরা। সেই বাজারও জমজমাট। এই দুই মার্কেটের পাশাপাশি হিলকার্ট রোডের ফুটপাথে এবং বিধান মার্কেট ও বিধান রোডেও গরম জামাকাপড়ের রকমারি পসরা সাজিয়ে বসেছেন অনেক হকার। ঠান্ডা পড়তেই বিক্রি বেড়েছে তাঁদেরও।
Comments :0