জয়ন্ত সাহা ও শম্ভুচরণ নাথ: আলিপুরদুয়ার
কোচবিহার জেলা মানেই ছিল কৃষিবলয় যন্ত্রণা। আর আলিপুরদুয়ার জেলার পথের বাঁকে বাঁকে দাঁড়িয়ে ছিল কৃষিবলয়ের পাশাপাশি ৬২ চা-বাগান, ৪২ বনবস্তী আর শিলতোর্ষা নদীর বালি-পাথর তোলার সঙ্গে জড়িত ৪ টি পঞ্চায়েতের প্রায় ৬০ হাজার মানুষের রুটি-রুজি কেড়ে নেওয়ার বিরুদ্ধে ক্ষোভ আর যন্ত্রণার ধূসর ছবি।
সেই অভিজ্ঞতা নিয়েই চলছে ডিওয়াইএফআই’র ইনসাফ যাত্রা।
শনিবার পথের বাঁকে দেখা মিলেছে দলগাঁও চা বাগান, বীরপাড়া চা-বাগান, তাসা টী এস্টেটের শ্রমিকদের। যাত্রা পথে বনবস্তি না পড়লেও কালকূট, রাজাভাতখাওয়া বনবস্তির যুবকরা এসে মূল পদযাত্রীদের সঙ্গে হাত মিলিয়ে এগিয়ে দিলেন ৫ কিমি পথ। এদিন আলিপুরদুয়ারের বাবুরহাটে স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে মিলিত হয়ে বক্তব্য রাখলেন মীনাক্ষী মুখার্জি, সোহম মুখার্জি আর জয়নাথ রায়।
এখানেই কোচবিহার জেলার মাথাভাঙা মহকুমা, ফালাকাটায় গত ৭২ ঘন্টায় হাতির দলের হানায় ৬ জন গ্রামবাসী নিহত ও এক বনকর্মী সহ ৪ জনের আহতের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে নীরবতা পালনের পাশাপাশি নিহত ও আহতদের পরিবারের সদস্যদের ক্ষতিপূরণের দাবি তুললো ইনসাফ যাত্রা।
নদীকে পিছনে রেখে ইনসাফ যাত্রা দাঁড়ালো পলাশবড়িতে। এখানে মঞ্চ বেঁধে সভা হবে। তার আগে মিছিলকে স্বাগত জানালো খুদে মেয়েরা। উত্তরবঙ্গের মানুষ অতিথিদের স্বাগত জানায় বৈরাতী নৃত্য দিয়ে।
ডিওয়াইএফআই রাজ্য সম্পাদক মীনাক্ষী মুখার্জি জানালেন,‘‘৬০ দিনে আমাদের দুহাজার কিমি পথ অতিক্রম করার কথা। তবে দুদিনের অভিজ্ঞতা বলছে ৬০ দিনে হয়তো বাড়তি ৩০০ কিমি পথ হাঁটতেই হবে।’’ এদিন ফালাকাটায় ইনসাফ যাত্রা বিকেল ৪ টায় পৌঁছোনোর কথা থাকলেও ওরা পৌঁছোয় সন্ধ্যে ৭ টায়। দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষাতেও ক্লান্তি নেই অপেক্ষমান জনতার। এখানেও সংক্ষিপ্ত সভায় বক্তব্য রাখলেন, মীনাক্ষী মুখাজী, ধ্রুবজ্যোতি সাহা ও বাপন গোপ।
বাগানের জমি মুখ্যমন্ত্রী বড় বড় হোটেল মালিকদের হাতে তুলে দেবার আইন পাশ করিয়েছে। অথচ বাগানে বাগানে শ্রমিকরা যখন তাদের অধিকারে থাকা বসতবাড়ি ও চাষের জমির পাট্টা চাইছে সে পাট্টা মিলছে না। বাগানের হাসপাতালগুলিতে এমবিবিএস চিকিৎসক থাকার কথা থাকলেও ৩/৪ টের বেশি বাগানে সে ব্যবস্থা নেই। হাতুড়ে চিকিৎসকরাই ভরসা। শিশুরা অপুষ্টিতে ভুগছে। ছেলে-মেয়েরা ছুটছে ভিন রাজ্যে।
যুব নেতৃবৃন্দ বললেন, আমাদের ইনসাফ যাত্রা চা বাগান শ্রমিকদের এই যন্ত্রণা থেকে মুক্তি চায়। তাদের মুক্তির পথ খুঁজে বের করবে এই পদযাত্রা।
Comments :0