অবশেষে ১৮ দিন পর বনদপ্তরের পাতা ট্রাপ ক্যামেরায় দেখা গেল বাঘের ছবি। পুরুলিয়ার বান্দোয়ানের ভাড়ারি পাহাড়ের জঙ্গলে পাতা ট্র্যাপ ক্যামেরায় দেখা গেল বাঘের ছবি। আজ ট্র্যাপ ক্যামেরা গুলো সংগ্রহ করে ছবিগুলো যাচাই করতেই দেখা যায় শনিবার ভোর ৩ টা ২৪ মিনিট ৫৯ সেকেন্ডে বাঘের ছবি দেখা যায়। এই প্রথম বাঘের ছবি ধরা পড়লো ট্র্যাপ ক্যামেরায়। এতদিন বাঘের পায়ের ছাপের নমুনাই সংগ্রহ করতে পেরেছিল ঝাড়খণ্ড ও বাংলার বন দপ্তর। এবার সরাসরি বাঘের ছবি দেখা মেলায় আতঙ্ক আরও দানা বেঁধেছে এলাকায়।
রেডিও কলারহীন বাঘটিকে খাঁচাবন্দি করতে নাজেহাল অবস্থা বনদপ্তরের। পুরুলিয়ার বান্দোয়ানের রাইকা পাহাড় সংলগ্ন ভাঁড়ারি পাহাড়ের জঙ্গলকে জিরে ফেলা হলো সুন্দরবনের ধাঁচে জাল দিয়ে। নতুন করে ভাঁড়ারি পাহাড়ের জঙ্গলে লাগানো হলো আরও ১০ ট্র্যাপ ক্যামেরা। ছাগল, শুকোর দিয়ে পাতা হয়েছে ফাঁদ। রাইকা পাহাড়ের বিভিন্ন প্রান্তে বসানো হয়েছে ৩০ টিরও বেশি ট্রাপ ক্যামেরা, সেখানেও ফাঁদ পাতা হয়েছে। নজরদারি চালানো হচ্ছে নাইট ভিশন ড্রোন ক্যামেরার মাধ্যমে। ঘটনাস্থলে মোতায়েন রয়েছে ট্রাঙ্কুলাইজার টিম । জঙ্গল ছেড়ে ওই বাঘ বাইরে বেরিয়ে আসার চেষ্টা করলে ব্যবহার করা হতে পারে ঘুম পাড়ানিগুলি। জঙ্গল লাগোয়া গ্রামগুলিতে মোতায়েন রয়েছে বনকর্মীদের একাধিক টিম । গ্রামবাসীদের সতর্ক করতে চলছে মাইকিং প্রচার।
গত পাঁচদিন ধরে কখনও বান্দোয়ানের রাইকা, কেশরা, যমুনাগোড়া, ভাঁড়ারি পাহাড়ের জঙ্গলে আবার কখনও মানবাজার ২ নম্বর নেকড়ে, বড়গোড়া সহ বিভিন্ন এলাকায় ঘোরাফেরা করছে বাঘটি। শুধু মিলছে একটার পর একটা জঙ্গলে বাঘের পায়ের ছাপ। প্রতিদিনই নিজের অবস্থান পরিবর্তন করছে বাঘটি। বাঘের গতিবিধি জানতে হিমশিম খাচ্ছে ঝাড়খন্ড ও বাংলা দুই প্রান্তের বনদপ্তর। পুরুলিয়া ও ঝাড়গ্রামের বনদপ্তরের টিম, সুন্দরবন থেকে আসা বাঘ বিশেষজ্ঞরা, ঝাড়খণ্ডের বনদপ্তরের টিম একত্রিত হয়ে বাঘকে বাগে আনতে মরিয়া চেষ্টা চালাচ্ছে। এক এক করে ঝাড়খন্ডে ১৩ দিন এবং পুরুলিয়ার বান্দোয়ান ও বোরোর একাধিক জঙ্গলে ৫ দিন পার করে ফেললো বাঘটি। এলাকায় তৈরি হয়েছে আতঙ্কের পরিবেশ। গত ২২ ডিসেম্বর বান্দোয়ানের এই রাইকা জঙ্গলেই আশ্রয় নিয়েছিল জিনাত। জিনাতের আতঙ্ক কাটতে না কাটতেই ফের বাঘের আতঙ্কে স্তব্ধ হয়ে পড়েছে স্বাভাবিক জনজীবন।
Comments :0