নীতীশ কুমারের সঙ্গে বৈঠকের পর বাকি বিরোধীদের সঙ্গে থাকার দাবি জানালেন মমতা ব্যানার্জি। নির্ধারিত সূচি অনুযায়ী সোমবার এ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করেন বিহারের মুখ্যমন্ত্রী। সঙ্গে ছিলেন বিহারের উপ মুখ্যমন্ত্রী এবং আরজেডি নেতা তেজস্বী যাদব।
সংবাদমাধ্যমে মমতা বলেন, ‘‘নীতীশজীকে অনুরোধ করব বিহারে সর্বদলীয় সভা ডাকুন। বিহার থেকেই জয়প্রকাশ নারায়ণের আন্দোলন শুরু হয়েছিল। সারা দেশে বার্তা দেওয়া প্রয়োজন যে আমরা একসঙ্গে রয়েছি।’’
মমতার সংযোজন, ‘‘মিডিয়ার প্রচারে বিজেপি’কে ‘হিরো’ করে দেখানো হচ্ছে। আমি চাই বিজেপি ‘জিরো’ হোক।’’ বিরোধী জোট প্রসঙ্গে মমতা এমনও বলেন যে নেতৃত্ব নিয়ে তাঁর কোনও অহঙ্কার নেই।
নীতীশ কুমার বলেন, ‘‘কেন্দ্রে আসীন বিজেপি নিজেদের ভালো করছে, নিজেদের প্রচার করছে। দেশের জন্য কিছু করছে না।’’ বিরোধী দলগুলিকে এক করার প্রয়াস জারি রাখার বার্তাও দেন তিনি।
এর আগে নীতীশ কুমার দিল্লিতে গিয়ে সোনিয়া গান্ধী এবং কংগ্রেস নেতৃবৃন্দের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। এপ্রিলের দ্বিতীয় সপ্তাহে দিল্লিতে একাধিক দলের নেতৃবেন্দের সঙ্গে তাঁর আলোচনা জাতীয় রাজনীতিতে গুরুত্ব দিয়েই দেখা হচ্ছে। সিপিআই(এম) সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরির সঙ্গে বৈঠক করেন ১৩ এপ্রিল। নীতীশ এবং ইয়েচুরি বলেন যে ধর্মনিরপেক্ষ, গণতান্ত্রিক দলগুলির এক জায়গায় আসা উচিত।
জাতীয় স্তরে বিভিন্ন দলের মধ্যেই মমতার অবস্থান নিয়ে সংশয় রয়েছে। সংসদের বাজেট অধিবেশনে বিরোধীরা আদানি এবং হাইডেনবার্গ রিপোর্টে সরকারের জবাব চেয়ে এককাট্টা থেকেছে। কিন্তু বিরোধীদের বেশিরভাগ কর্মসূচি এবং সমন্বয়ে যোগ দেয়নি তৃণমূল কংগ্রেস। দলের সাংসদ ডেরেক ও ব্রায়েন তদন্তে যৌথ সংসদীয় দল গঠনের বিরোধিতাও করেন। কংগ্রেস সহ ১৬টি বিরোধী দল একযোগে আদানি কেলেঙ্কারিতে সরকারের জবাব চাইলেও তৃণমূল ভিন্ন অবস্থান নেয়। বরং, কলকাতায় মমতা ব্যানার্জি নিজে কংগ্রেসকে আক্রমণের কেন্দ্র করেন। সাগরদিঘি উপনির্বাচনে আসন হাতছাড়া হওয়ায় মমতা সরাসরি ‘একা চলার’ ঘোষণা করেন। সে দিক থেকে নীতীশে এই উদ্যোগ গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করছে জাতীয় রাজনীতির বিভিন্ন অংশ।
নীতীশ এদিন বলেন, ‘‘এরা ইতিহাস বদলে দিচ্ছে। আমাদের সতর্ক থাকতে হবে।’’
রাজ্যে তৃণমূল সরকারের ভূমিকার সঙ্গে দিল্লিতে বিজেপি সরকারের চলনের বহু মিল খুঁজে পাচ্ছেন রাজ্যের বিরোধীরা। বিশেষ করে ধর্মের সঙ্গে রাজনীতিকে মেলানোর লাগাতার প্রয়াসের তীব্র সমালোচনা করেছেন বামপন্থীরা।
Comments :0