সঞ্জিত দে- বানারহাট
ডুয়ার্সের চা বলয়ের বানারহাটে জলপাইগুড়ি জেলার প্রশাসনিক সভা করতে রবিবার বিকালেই এসে পৌছান রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি। রবিবার জনসংযোগের চেষ্টার পর সোমবার দেখা গেল প্রশাসনিক সভা করে বানারহাটের জন্য দেদার প্রতিশ্রুতি দিলেন। এদিন বিজেপির কায়দায় মন্দির নিয়ে রাজনীতি করলেন মুখ্যমন্ত্রী। বানারহাট সহ জেলার বিভিন্ন মন্দির ধর্মস্থানের জন্য বেশ কয়েক কোটি টাকা দেওয়ার ঘোষণা করলেন। তিনি ঘোষণা করলেন বন্ধ চা বাগানের শ্রমিকদের মাসে ১ হাজার ৫০০ টাকা ভাতা দেওয়া হবে। জমির পাট্টা দেওয়া হবে। বন্ধ বাগান অধিগ্রহণ করা হবে।
বন্ধ বাগানের শ্রমিকদের ভাতা বামফ্রন্ট সরকারের সময় থেকে চালু আছে। মানুষের প্রশ্ন, নতুন কি হলো? বানারহাট হাসপাতালকে ৩০ শয্যার করা হবে, কিন্তু গ্রামীণ হাসপাতালে উন্নীত করার কথা বলা হয়নি। সিপিআই(এম) রাজ্য সম্পাদক মন্ডলীর সদস্য চা শ্রমিক নেতা জিয়া উল আলম বলেন, মুখ্যমন্ত্রী যে সব ঘোষণা করে গেলেন তা এককথায় চা অধ্যুষিত জলপাইগুড়ি জেলার মানুষদের সাথে এবং চা শ্রমিকদের সাথে চূড়ান্ত তঞ্চকতা। বামফ্রন্ট সরকার বন্ধ চা বাগান মজদুরদের জন্য, বন্ধ কারখানার শ্রমিকদের জন্য ভাতা চালু করে ১৯৯৮ সালে। ২০১০ সালে এই ভাতার পরিমাণ বৃদ্ধি করে যায়। উনি নতুন কি করেছেন। এই কয় বছরে অনেক শ্রমিক মারা গেছেন আরও অনেক বাগান বন্ধ হয়েছে কিন্তু তালিকায় একটি নতুন নাম এই আমলে সংযুক্তি করা হয়নি।"
আলম আরও বলেন,‘‘বামফ্রন্ট সরকার ডেভেলপমেন্ট কর্পোরেশন করে বন্ধ বাগানের জমি সংরক্ষণ করে। বাগান চালুর উদ্যোগ ছিল আর উনি ক্ষমতা পেয়ে এই কর্পোরেশন তুলে দিয়ে রাজনৈতিক বন্ধুদের কাছে সব তুলে দিলেন। পাহাড়ের এবং তরাইয়ে এর প্রতিরোধ হয়েছে ডুয়ার্সে হবে।"
তিনি বলেন, মুখ্যমন্ত্রী চা সুন্দরী প্রকল্পের নামে কোটি কোটি টাকা ব্যয় করে ঠিকাদারদের মাধ্যমে লুটের জগৎ নির্মান করে নিতে চেয়েছিলেন। বনের ধারে নদীর ধারে এক লক্ষ কুড়ি হাজার টাকা দিয়ে লক্ষ লক্ষ বাড়ি বানান। চা শ্রমিকরা এই প্রকল্প মেনে নেয়নি দেখে রাজ্য সরকার এই প্রকল্প থেকে হাত গুটিয়ে নিল অবশেষে। এজন্য ধন্যবাদ। "
জিয়াউল আলম বলেন, "চা শ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরির আন্দোলন চলছে। পশ্চিম বঙ্গের তৃণমূল এবং আসামে ত্রিপুরার বিজেপি শাসিত রাজ্যে শ্রমিকদের দাবিকে অস্বীকার করা হচ্ছে। কলকাতা হাই কোর্ট গত আগষ্ট মাসে রায় দিয়ে বলেছে আগামী ১ জানুয়ারি থেকে নুন্যতম মজুরি প্রদানের উদ্যোগ রাজ্য সরকারকে নিতে হবে। মুখ্যমন্ত্রী তা নিয়ে মুখ খুললেন না।"
এদিন বানারহাট তরুন সংঘ ময়দান ভরিয়ে তুলতে কনকনে ঠান্ডার মধ্যে জেলার সব ব্লক থেকে ছাত্র ছাত্রীদের এনে দাঁড় করিয়ে রাখা হয়।
Comments :0