মোরাম বোল্ডার লুটের খাদানে জমা ছিল জল। বেআইনি এই খাদানের জমা জলে পড়ে মর্মান্তিক মৃত্যু হলো দুই ছাত্রের।
এমন ঘটনা খড়্গপুর শহর লাগোয়া আরামবাটি মৌজায়। প্রশাসনিক সূত্র থেকে জানা গিয়েছে যে মৃত দুই পড়ুয়ার নাম আকাশ সিং চৌহান (১৭) ও সঞ্জীব রাও (১৮)। দু’জনেরই বাড়ি খড়গপুরের নিমপুরা ১৩ নম্বর ওয়ার্ড এলাকায়। হিতকরণী হাইস্কুলের পড়ুয়া ছিল দু’জনেই।
গত বৃহস্পতিবার স্কুল ছুটির পর বেড়ানোর জন্য ওই খাদানের কাছে পৌঁছায় ৪ বন্ধু। প্রচন্ড গরমে খাদানের কিনারায় দাঁড়িয়ে জলে হাত দিতে গিয়ে পা হড়কে পড়ে যায় দুই বন্ধু।
খাদানের ধার এতই খাড়া যে তার গভীরতা কম করেও ৪০-৫০ ফুট। মুহূর্তের মধ্যে তলিয়ে যায় দুই বন্ধু।
বাকি দুই বন্ধুর চিৎকারে স্থানীয় কৃষকরা মাঠের কাজ ছেড়ে ছুটে আসেন।
কৃষকরাও ক্ষোভ উগরে দিয়ে বলেন, শহরে দুই পড়ুয়া খাদান পাড়ের মোরামের গুটি কী ভয়ঙ্কর হয় তা না জানার কারণে এই মর্মান্তিক ঘটনা। সম্ভবত পা পিছলে জলে পড়ে যায় দু’জনে।
মনে হবে বিশাল দিঘি। তৃণমূলের রাজত্বে জঙ্গল লুটের পর সেই এলাকার মোরাম বোল্ডার লুট করা হয়। কয়েকশো কোটি টাকার মোরাম বোল্ডার লুঠ হয়েছে দীর্ঘ কয়েক বছর, ধরে এমনই অভিযোগ। প্রশাসন সব জানত। আর সেই অবৈধ খাদানে জমা জলে পড়ে গিয়ে মর্মান্তিক মৃত্যু হলো দুই স্কুল ছাত্রের।
কৃষকরা বলছেন, এই ভাবে গভীর অবৈধ খাদান হওয়ায় এলাকার চাষের জমিতে জল ধরে রাখা যায় না। তেমনি এলাকার কুয়ো ও নলকূপ এর জলের স্তর নেমে গিয়ে বেশিরভাগই অকেজো। খড়্গপুর শহর লাগোয়া এমন জায়গায় বড় বড় আধুনিক মেশিন দিয়ে দিনে ৩০০-৪০০ ট্রাক্টর ও ডাম্পারে মোরাম বোল্ডার লুট করা হয়। তার আগে এই জায়গায় কয়েক হাজার গাছও পাচার করা হয়। যার খেসারত দিতে হচ্ছে এই এলাকার কৃষক সহ সাধারণ মানুষকে। এখন মর্মান্তিক মৃত্যু হলো ২ জন স্কুল পড়ুয়ার।
বৃহস্পতিবারই উদ্ধার কাজ শুরু হয়। রাত হওয়ায় স্থগিত করে পুনরায় শুক্রবারও চলে উদ্ধার কাজ। শনিবার দুপুরের দিকে সেই দু’জনের দেহ ভেসে ওঠে। এর আগে দমকল ও ডুবুরি নামিয়েও এমন গভীর খাদ থেকে দেহ উদ্ধার করা যায়নি।
স্থানীয়রা প্রশাসনের উপর ক্ষোভ উগরে দেন। বনভূমি ধ্বংস করে এমন অবৈধ খাদান করে মোরাম বোল্ডার লুটের কারণে এমন গভীর দিঘি তৈরি করে এলাকায় বিপর্যয় ও বিপদ ডেকে আনার হচ্ছে।
Kharagpur Student Death
বেআইনি খাদানের জমা জলে মর্মান্তিক মৃত্যু ২ ছাত্রের

×
Comments :0