দার্জিলিঙ পার্বত্য অঞ্চলের বাগিচা শ্রমিকদের ২০২৩—২৪ সালের বোনাস মীমাংসা, বন্ধ চা বাগান অবিলম্বে খোলার দাবিতে, ন্যূনতম মজুরি ঘোষণা করার দাবি জানিয়ে হিল জয়েন্ট ফোরামের পক্ষ থেকে বিক্ষোভ প্রদর্শন ও শ্রম দপ্তরে স্মারকলিপি দেওয়া হয়েছে। শুক্রবার দুপুরে মিছিল করে শিলিগুড়ির অদূরে দার্জিলিঙ মোড় হয়ে দাগাপুরের শ্রমদপ্তরের গিয়ে পৌঁছায় হিল জয়েন্ট ফোরামের নেতৃবৃন্দ। এই কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে এদিন পাহাড়ের বিভিন্ন চা বাগানের অসংখ্য শ্রমিক জমায়েত হয়েছিলেন দাগারের শ্রম দপ্তরে। আগে থেকেই পুলিশ বাহিনী মোতায়েন করে শ্রমিক ভবনের গেট আটকে রাখা হয়। সমবেত শ্রমিকরা শ্রম দপ্তরের গেটের সামনে ব্যাপক বিক্ষোভ প্রদর্শন করতে শুরু করেন। পরে শ্রম দপ্তরের সামনে মাটিতে বসে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন শ্রমিক নেতৃবৃন্দ সহ বাগিচা শ্রমিকরা।
এদিনের কর্মসূচিতে নেতৃত্ব দিয়েছেন জয়েন্ট ফোরামের পক্ষে সমন পাঠক। বিক্ষোভ চলাকালীন বাগিচা শ্রমিকদের সামনে বক্তব্য রাখেন শচীন খাতি ও ধীরাজ রাই। এছাড়াও ছিলেন হিল জয়েন্ট ফোরামের পক্ষে সুরজ সুব্বা, সুনীল রাই, এস কে লামা, বি কে রাই সহ অন্যান্যরা। শ্রমিক বিক্ষোভের জেরে পরে পুলিশ শ্রম দপ্তরের গেট খুলে দিয়ে প্রতিনিধি দলকে ভেতরে ঢুকতে দিতে বাধ্য হয়। হিল জয়েন্ট ফোরামের প্রতিনিধিরা অ্যাডিশনাল লেবার অফিসারের হাতে তিন দফা দাবি সম্বলিত স্মারকলিপি তুলে দেন। এদিন শ্রমিক নেতৃবৃন্দ স্মারকলিপি দিয়ে দার্জিলিঙ পার্বত্য অঞ্চলের বাগিচা শ্রমিকদের ২০২৩—২৪ সালের বোনাস চূড়ান্ত করার জন্য ১০ দিনের মধ্যে মিটিং ডাকার সময়সীমা বেঁধে দিয়েছেন। এই নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে বোনাস চূড়ান্ত করতে মিটিং ডাকা না হলে আগামী দিনে বৃহত্তর আন্দোলন গড়ে তোলা হবে বলে হুঁশিয়ারি দেন।
শ্রমিক নেতা সমন পাঠক বলেন, দার্জিলিঙ পাহাড়ের লক্ষাধিক বাগিচা শ্রমিকদের ২০২৩—২৪সালের উৎসব ভাতা এখনও চূড়ান্ত হয়নি। আমাদের দাবি ২০ শতাংশ হারেই উৎসব ভাতা দিতে হবে। তবে মালিকপক্ষ এখনও শ্রমিক বিরোধী অবস্থান নিয়ে ১৩ শতাংশ বোনাস দিতেই অনড়। অন্যদিকে সরকারের পক্ষে ১৬ শতাংশ বলা হয়েছে। অবিলম্বে ২০২৩—২৪সালের উৎসব ভাতা চূড়ান্ত করতে হবে। নতুন বছরের তিন মাস কেটে গেছে। ন্যূনতম মজুরি আজকের লড়াই নয়, ২০১৪সাল থেকে ন্যুনতম মজুরির জন্য দীর্ঘ আন্দোলন চলছে। ২০১৫সালে ২০ ফেব্রুয়ারি অ্যাডভাইসরি কমিটি গঠন করে ছয় মাসের মধ্যে ন্যূনতম মজুরি ঘোষণার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলো সরকার। বছরের পর বছর পার হয়েছে। আসলে ন্যূনতম মজুরি বৃদ্ধি করার বিষয়ে সরকারের সদিচ্ছার যথেষ্টই অভাব রয়েছে।
Comments :0