ADANI OCCRP

ভুয়ো বিদেশি বিনিয়োগকারী দেখিয়ে শেয়ারে বিপুল কারচুপি আদানির, দাবি নতুন রিপোর্টে

জাতীয়

ADANI OCCRP

ঘুরিয়ে পরিবারের সদস্যরাই বিদেশি বিনিয়োগ বলে কিনেছে আদানি গোষ্ঠীর শেয়ার। নাসের আলি শাবান আহলি এবং চ্যাঙ চুঙ-লিঙ নামে দুই ব্যক্তি মোটা অঙ্কের টাকা বিনিয়োগ করেছে আদানি গোষ্ঠীর বিভিন্ন সংস্থার শেয়ারে। এরা আদানি পরিবারের ঘনিষ্ঠ এবং বিনোদ আদানির মালিকানাধীন সংস্থার সঙ্গে যুক্ত। এভাবেই বিদেশি বিনিয়োগ দেখিয়ে ফাঁপিয়ে বাড়ানো হয়েছে গোষ্ঠীর শেয়ারের দাম।

হিন্ডেনবার্গ রিপোর্টের পর এবার ওসিসিআরপি রিপোর্টে কাঠগড়ায় আদানি গোষ্ঠীর বিপুল অঙ্কের বেনিয়ম। এই রিপোর্ট আবার প্রকাশ করেছে আন্তর্জাতিক স্তরে পরিচিত দুই সংবাদ প্রতিষ্ঠান ‘গার্ডিয়ান’ এবং ফিনান্সিয়াল টাইমস’। ওসিসিআিপি’র দাবি, ভারতীয় শেয়ার বাজার নিয়ন্ত্রক প্রতিষ্ঠান ‘সেবি’ এবং সুপ্রিম কোর্টের বিশেষজ্ঞ গোষ্ঠী বিদেশি প্রতিষ্ঠান সংক্রান্ত তথ্য জোগার করতে পারেনি। যে কারণে তদন্ত অভিযোগের তল পর্যন্ত খতিয়ে দেখতে পারেনি। তারা জানতে পেরেছে এই আদানি গোষ্ঠীতে জমা বিদেশি টাকার উৎস কী। 

ব্যবসায়িক পরিভাষায় এই কারচুপিকে বলে ‘ইনসাইডার ট্রেডিং’। ব্যবসায়িক আগ্রহের কারণে নয়, সংস্থার নিজের লোকই টাকা ঢুকিয়ে শেয়ার কিনতে থাকলে দাম বাড়তে থাকে। গরমিল ধরা পড়লে দ্রুত পড়ে যায় দাম। হিন্ডেনবার্গ রিপোর্টের পর দেখা গিয়েছিল আদানি গোষ্ঠীর কোনও কোনও সংস্থার শেয়ারের দাম প্রায় ৮০ শতাংশ পড়ে গিয়েছে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ঘনিষ্ঠ এই সংস্থার প্রধান গৌতম আদানি। এই সংস্থাতেই বিপুল বিনিয়োগ করে মূলধন খুইয়ে বসে রয়েছে এলআইসি’র মতো রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা। গোটা ঘটনায় তদন্তের দাবি জানিয়েছেন বিরোধীরা। এই দাবিতেই সরব হয়েছে সিপিআই(এম) পলিট ব্যুরো। 

বৃহস্পতিবার পলিট ব্যুরো অর্গানাইজড ক্রাইম অ্যান্ড করাপশন প্রজেক্ট (ওসিসিআরপি)’র এই রিপোর্টের উল্লেখ করে বলেছে, সেবি আদানি গোষ্ঠীতে বিদেশ থেকে আসা অর্থ নিয়ে তদন্ত শুরু করেছিল। ২০১৪’তে তা বন্ধ হয়ে যায়। উল্লেখ্য, ওই বছরই সরকারে আসে বিজেপি, নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বে। 

পলিট ব্যুরো বলেছে, প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আদানির সম্পর্ক থাকায় নিয়ন্ত্রক সংস্থাগুলি এখনও পর্যন্ত শেয়ার বাজারে এই কারচুপির বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নেয়নি। নতুন তথ্য প্রকাশ পাওয়ায় গুরুত্ব দিয়ে বিষয়টির তদন্ত হওয়া জরুরি। সুপ্রিম কোর্টকে নিশ্চিত করতে হবে যাতে দুর্নীতি ঢেকে দেওয়া না হয়। 

ওসিসিআরপি’র রিপোর্ট বলছে, ওই দুই ব্যক্তি বিদেশের একটি বিনিয়োগ তহবিল থেকে আদানির শেয়ারে টাকা খাটিয়েছে। কয়েকশো মিলিয়ন ডলার ঘুরপথে খাটানো হয়েছে আদানির সংস্থায়। আজকের সময়ে সবচেয়ে বড় কেলেঙ্কারির একটি এই কারচুপি। ওসিসিআরপি’র ওয়েবসাইটে দাবি করা হয়েছে যে অভিযোগের সপক্ষে একাধিক কর ছাড়ের স্বর্গরাজ্য থেকে পাওয়া নথি, ব্যাঙ্ক রেকর্ড এবং আদানি গোষ্ঠীর অভ্যন্তরীণ ই-মেল নথি তাদের কাছে রয়েছে। এই তদন্তে অভিযোগ, কর ছাড়ের ‘স্বর্গরাজ্য’ বলে পরিচিত মরিশাসের সংস্থার নাম দেখিয়ে ঘুরিয়ে টাকা নিজেদের শেয়ারে খাটিয়েছে আদানির গোষ্ঠী। বাড়ানো হয়েছে শেয়ারের দাম।        

Comments :0

Login to leave a comment