Prakash Karat

বিজেপি’কে রুখতে লড়তে হবে তৃণমূলের বিরুদ্ধে: প্রকাশ কারাত

জাতীয়

নির্বাচনী প্রভাবের বাইরে বেরিয়ে বিজেপি-বিরোধী শক্তিগুলিকে একজোট করার চেষ্টা চালাবে সিপিআই(এম) এবং বামপন্থীরা। হিন্দুত্ববাদীরা যে একইসঙ্গে জনবিরোধীও, অবিরত তা জনতার কাছে ব্যাখ্যাও করা হবে। দেশজুড়ে সেই ভূমিকা পালনে পশ্চিমবঙ্গে বামপন্থীদের শক্তি বাড়ানো গুরুত্বপূর্ণ। বিজেপি’কে রুখতে দরকার তৃণমূলের সঙ্গে লড়াই।

সোমবার বর্ধমানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে এই লক্ষ্য জানিয়েছেন সিপিআই(এম) পলিট ব্যুরো সদস্য প্রকাশ কারাত। এদিন নিরুপম সেন স্মারক বক্তৃতা দেন তিনি। তাঁর ব্যাখ্যা, ‘‘হিন্দুত্ববাদের সঙ্গে মতাদর্শের বিচারে লড়াই করতে পারে সিপিআই(এম) এবং বামপন্থীরা। তাই আমাদের শক্তির বাইরে গিয়ে, গণতান্ত্রিক এবং ধর্মনিরপেক্ষ দলগুলিকে বিজেপি’র বিরুদ্ধে এক জায়গায় আনার চেষ্টা করা হবে।’’

কারাত বলেছেন, জাতীয় স্তরে বিজেপি-আরএসএস প্রধান বিপদ। কিন্তু লড়াই বিভিন্ন রাজ্যের বাস্তবতা অনুযায়ী হবে। পশ্চিমবঙ্গের ক্ষেত্রে বিজেপি’র সঙ্গে লড়তে হবে তৃণমূল কংগ্রেসের বিরুদ্ধেও। কোনও শক্তির পক্ষে নরম মনোভাব নিলে তা গণতান্ত্রিক আন্দোলনের পক্ষে বিপজ্জনক হয়ে দাঁড়াবে।’’ 

পশ্চিমবঙ্গ প্রসঙ্গে তিনি বলেছেন, ‘‘এখানে এক দশক ধরে তৃণমূল কংগ্রেস গণতান্ত্রিক অধিকারের ওপর আক্রমণ করে চলেছে। ঠিক এক কায়দায় বিজেপি আক্রমণ চালাচ্ছে ত্রিপুরায়। তৃণমূলের দমনের সুবিধা নিচ্ছে বিজেপি-আরএসএস।’’ 

তৃণমূল কংগ্রেস প্রসঙ্গে কারাত বলেছেন, ‘‘বাংলায় বামপন্থীদের ওপর আক্রমণ করতেই তৃণমূল কংগ্রেস তৈরি হয়েছে। বামপন্থীদের ওপর হামলা চালিয়েই তৃণমূল কংগ্রেস সরকারে এসেছে। অগণতান্ত্রিক পদক্ষেপ নিয়ে চলেছে তাদের সরকার। স্বাভাবিক গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে রাজনৈতিক কার্যকলাপ চালাতে দেয় না। সংসদীয় গণতান্ত্রিক রীতিনীতি অগ্রাহ্য করে চলে সরকার।’’

কারত বলেন, ‘‘জনবিরোধী হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে দুর্নীতির বিভিন্ন দিকও সামনে আসছে। বিজেপি বিভিন্ন রাজ্যে সরকারি প্রকল্পের উপভোক্তাদের সংগঠিত করে ভোটে সমর্থন পাওয়ার জন্য। এখানে অন্য পরিস্থিতি। এখানে উপভোক্তারা অর্থ পাচ্ছেন না। আবাস যোজনায় ঘর বানানো নিয়ে ধান্দাবাজি সমানে ধরা পড়ছে।’’ 

কারাতের ব্যাখ্যা, তৃণমূল কংগ্রেস রাজনৈতিক দল হিসেবেই বামবিরোধী, কমিউনিস্ট বিরোধী। এই রাজনীতি করেই এরা সরকারে এসেছে। বামপন্থীদের কোণঠাসা করার কাজ চালিয়েছে। রাজনীতিতে লুম্পেনেদের দাপট বাড়িয়েছে। এভাবেই বাংলায় দুর্নীতি-দুষ্কৃতী জোট তৈরি হয়েছে। ফলে এই দল আদর্শের বিচারে রাজনৈতিক দিক থেকে বিজেপি’র সঙ্গে লড়াই করতে পারে না। বরং বামপন্থীদের কোণঠাসা করতে কাছাকাছি আসতে পারে। সিপিআই(এম)’কে রাজনৈতিকভাবে কোণঠাসা করা জন্য রাজনৈতিক দ্বন্দ্ব কেবল এই দুই দলের মধ্যে সীমাবদ্ধ হিসেবে দেখানোর চেষ্টা হচ্ছে।’’ 

এই প্রসঙ্গেই কারাত বলেন, ‘‘সারা দেশে বাম গণতান্ত্রিক বিকল্পের পক্ষে শক্তি বাড়াতে হলে পশ্চিমবঙ্গে আমাদের শক্তিশালী চেহারায় ফিরতেই হবে। পশ্চিমবঙ্গে বামপন্থী আন্দোলনের দুর্বলতার প্রভাব সারা দেশের বাম গণতান্ত্রিক আন্দোলনের ওপর পড়েছে। তার জন্য লাগাতার প্রয়াস চালানো আজকে আমাদের কাজ।’’   

Comments :0

Login to leave a comment