LEFT UN PALESTINE

মার্কিন সাম্রাজ্যবাদের অধীনস্থ অনুচর, রাষ্ট্রসঙ্ঘে ভারতের অবস্থানে বিবৃতি বামপন্থীদের

জাতীয়

মার্কিন সাম্রাজ্যবাদের অধীনস্থ অনুচরের মতো বিদেশনীতি নিয়ে চলেছে ভারত। রাষ্ট্রসঙ্ঘে প্যালেস্তাইনের নাগরিকদের নিরাপত্তা এবং মানবিক ও আইনি বিধি মানার প্রস্তাবে ভোট না দেওয়া স্তম্ভিত করে দেওয়ার মতো ঘটনা। 

শনিবার এই ভাষায় রাষ্ট্রসঙ্ঘে ভারতের অবস্থানের কড়া সমালোচনা করল সিপিআই(এম) এবং সিপিআই। সিপিআই(এম)’র সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি এবং সিপিআই’র সাধারণ সম্পাদক ডি রাজা এদিনই ভারতের অবস্থানের প্রতিবাদ জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছেন। উল্লেখ্য ভারত ভোট না দিলেও বিপুল সংখ্যাধিক্যে পাশ হয়েছে এই প্রস্তাব।

প্যালেস্তাইনের মানুষের মুক্তির পক্ষের অবস্থান ভারতের দীর্ঘদিনের। স্বাধীনতার লড়াইয়ে সাম্রাজ্যবাদের বিরুদ্ধে সংগ্রামের সময় থেকে প্যালেস্তাইনের মানুষের মুক্তির পক্ষে অবস্থান নেওয়া হয়েছে। নরেন্দ্র মোদী সরকার সেই অবস্থান খারিজ করেছে, এই মর্মে বিজেপি সরকারকে তীব্র আক্রমণ করেছেন কংগ্রেস নেত্রী প্রিয়াঙ্কা গান্ধীও। 

বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘‘বিপুল সংখ্যাধিক্যে গৃহীর প্রস্তাবে ভোটদানে বিরত থেকেছে ভারত। এই অবস্থান স্থম্ভিত করে দিচ্ছে দেশবাসীকে। রাষ্ট্রসঙ্ঘের সাধারণ পরিষদে প্রস্তাব আনা হয়েছিল ‘নাগরিকদের নিরাপত্তা এবং মানবিক স্বার্থ মানার বাধ্যবাধকতার পক্ষে।’ গাজায় ইজরায়েলের লাগাতার আক্রমণের পরিপ্রেক্ষিতে মানিবকতার স্বার্থে সংঘর্ষ বিরতির দাবি তুলেছিল রাষ্ট্রসঙ্ঘে পেশ হওয়া এই প্রস্তাব।’’ 

ইয়েচুরি এবং রাজা বলেছেন, ‘‘ভারতের ভোটদানে বিরত থাকার অবস্থান স্পষ্ট করেছে যে বিদেশনীতিতে মার্কিন সাম্রাজ্যবাদের অধীনস্থ অনুচরের মতো চলার নীতি নেওয়া হয়েছে। নরেন্দ্র মোদী সরকার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র-ইজরায়েল-ভারত অশুভ আঁতাতকেই আরও জোরালো করতে চাইছে। প্যালেস্তাইনের মানুষের পক্ষে ভারতের দীর্ঘদিনের অবস্থানকে খারিজ করেছে এই বিদেশনীতি।’’

বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘‘রাষ্ট্রসঙ্ঘে এই প্রস্তাব গ্রহণের সঙ্গে সঙ্গে ইজরায়েল আকাশ থেকে হামলায় গণহত্যা চালাচ্ছে, গাজা স্ট্রিপে জমিতে সেনা নামিয়ে হামলার মাত্রাও বাড়ানো হয়েছে।’’ ইয়েচুরি এবং রাজা বলেছেন, ‘‘গাজায় বাইরের বিশ্বের সঙ্গে সব রকমের সংযোগ ছিন্ন করা হয়েছে। ২২ লক্ষ মানুষের বাস গাজায়। রাষ্ট্রসঙ্ঘে বিপুল সংখ্যাধিক্যে পাশ প্রস্তাবকে মান্যতা দিয়ে এখনই সংঘর্ষবিরতি প্রয়োজন।’’ 

রাষ্ট্রসঙ্ঘের সাধারণ পরিষদের দশম জরুরি বিশেষ অধিবেশনে পাশ হয়েছে সংঘর্ষবিরতির পক্ষে প্রস্তাব। খসড়া প্রস্তাব পেশ করেছিল জর্ডন, প্রস্তাব পেশের সময়ই সমর্থন জানায় ৪০টি দেশ। তার মধ্যে বাংলাদেশ, পাকিস্তানের পাশাপাশি রয়েছে রাশিয়া এবং দক্ষিণ আফ্রিকাও। ১৯৩ সদস্য দেশের মধ্যে ১৪০টি দেশই সরাসরি প্রস্তাবকে সমর্থন দিয়েছে। ১৪টি দেশ বিরোধিতা করেছে। ভারতের মতো ৪৫টি দেশ ভোটদানে বিরত থেকেছে। পশ্চিমী এবং মার্কিন সহযোগী অস্ট্রেলিয়া, কানাডা, জার্মানি, জাপান, ইউক্রেন এবং ব্রিটেনও ভোটদানে বিরত থেকেছে।

রাষ্ট্রসঙ্ঘের উদ্দেশ্যে ইয়েচুরি এবং রাজার দাবি, নিরাপত্তা পরিষদে অতীতে গৃহীত সূত্র মেনে ১৯৬৭’র আগের সীমান্ত অনুযায়ী দু’টি পৃথক দেশ গঠনের অবস্থানকে জোরালো করা হোক এবার। 

কংগ্রেস নেত্রী প্রিয়াঙ্কা গান্ধী বলেছেন, ‘‘গাজায় সংঘর্ষবিরতির প্রস্তাবে ভারত ভোট না দেওয়ায় স্তম্ভিত এবং লজ্জিত।’’ তাঁর সংযোজন, ‘‘অহিংসা এবং সত্যের নীতিই ভারতের ভিত্তি। এই নীতি অর্জনেই স্বাধীনতা সংগ্রামীরা প্রাণ দিয়েছেন, আমাদের সংবিধান এবং জাতীয়তাও গড়ে উঠেছে এই দুই নীতিকে আশ্রয় করে।’’

Comments :0

Login to leave a comment