CPIM Rally in Hooghly

ভাগাভাগি নয়, বাংলা চাইছে চোর-লুটেরাদের তাড়াতে: সেলিম

রাজ্য

CPIM Rally in Hooghly ক্যাপশন- রবিবার সিপিআই(এম) হুগলী জেলা কমিটির ডাকে শ্রীরামপুর থেকে রিষড়া বাগখাল মুখী মহামিছিলে মানুষের ঢল।

অনন্ত সাঁতরা ও শুভ্রজ্যোতি মজুমদার, শ্রীরামপুর 



দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে এবং সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি রক্ষার দাবিতে রবিবার সিপিআই(এম) হুগলী জেলা কমিটির উদ্যোগে মহামিছিল জনস্রোতে ভাসলো  হুগলীর শ্রীরামপুর থেকে রিষড়ার বাগখাল পর্যন্ত জিটি রোড। এই মিছিল গোটা কালো পিচের দখল নেয়। মিছিল শুরু হয় শ্রীরামপুর ইএসআই হাসপাতালের কাছ থেকে। মিছিল জিটিরোড ধরে  শ্রীরামপুর ওভারব্রিজ, বটতলা,  মাহেশ,  শিরিষতলা, সন্ধ্যা বাজার হয়ে ৬ কিমি পথ অতিক্রম করে রিষড়া বাগখালে পৌঁছায়। পরে সেখানে সংক্ষিপ্ত সভা হয়। 


মিছিলে নেতৃত্ব দেন সিপিআই(এম) পলিটব্যুরো সদস্য ও রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম। সভায় তিনি বলেন, ‘‘বাংলার মানুষ হিন্দু-মুসলমান বিভাজনে আগ্রহী নন। চাইছেন চোর ধরার জন্য, দুর্নীতিবাজদের ধরার জন্য, লুটেরাদের ধরার জন্য প্রস্তুত হতে। তাড়াতে চাইছে তাদের। এভাবেই মানুষের ঐক্য তৈরি হয়।’’ 
মিছিলে অংশ নেন কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য শ্রীদীপ ভট্টাচার্য, রাজ্য সম্পাদকমন্ডলীর সদস্য ও জেলা সম্পাদক দেবব্রত ঘোষ, রাজ্য কমিটির সদস্য মনোদীপ ঘোষ সহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ। 
শুরু থেকেই মিছিলে ছিল অগণিত মানুষের ভিড়। জেলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ট্রেন ও বিভিন্ন যানবাহন করে  মানুষ আসেন। ছাত্র- যুব -মহিলা, কৃষক ও শ্রমিকদের অংশগ্রহণে  সুসজ্জিত উত্তাল মিছিল ঘিরে রাস্তার দু’ধারে ছিল অজস্র মানুষের ভিড়। 
রিষড়া বাগখালে মিছিল শেষে সভায় বক্তব্য রাখেন মহম্মদ সেলিম, শ্রীদীপ ভট্টাচার্য। সভাপতিত্ব করেন জেলা সম্পাদক দেবব্রত ঘোষ। 
 


 

সভায় মহম্মদ সেলিম বলেন, ‘‘মানুষ কী চাইবে? শান্তি চাইবে, কাজ চাইবে, নিরাপত্তা চাইবে, তার ছেলেমেয়ে যাতে শিক্ষার সুযোগ পায় তা চাইবে। বৃদ্ধ মানুষজন যাতে সরকারি স্বাস্থ্য পরিষেবা স্বল্প মূল্যে সরকারি হাসপাতালে পাওয়া যায়, সেটা চাইবেন। সরকার এসব চাওয়া পাওয়ার মধ্যে ঢুকতে চায় না। কেন্দ্র ও রাজ্যের দুই সরকার চাইছে অশান্তি বাঁধিয়ে দুই সম্প্রদায়ের মানুষকে শায়েস্তা করতে। মণিপুরে কী হচ্ছে। দুই জনগোষ্ঠীকে একে অন্যের সঙ্গে লড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে।’’
রামনবমীর মিছিল ঘিরে রিষড়াতেই ছড়িয়েছিল উত্তেজনা। মানুষই তা প্রতিহত করেছেন। সেলিম হুগলী জেলা তথা রাজ্যের ঐক্য ও সম্প্রীতির পক্ষে থাকা অগণিত মানুষকে ধন্যবাদ জানান। তিনি বলেন, ‘‘রিষড়ার মেহনতি মানুষকে ধন্যবাদ। তাঁরা জাত পাত ভাষা ধর্ম সম্প্রদায় স্ত্রী-পুরুষ নির্বিশেষে দাঙ্গা রুখেছেন। হাওড়ার মানুষও বিভাজনের রাজনীতিকে মেনে নেননি। বাংলার মানুষও এই রাজনীতিকে প্রত্যাখ্যান করেছেন।’’ 

 

 

শ্রীদীপ ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘সমস্ত অংশের মানুষ আজ সমবেত হচ্ছেন। শ্রমিকরা, খেতমজুরেরা, কৃষকেরা, মহিলারা, আমাদের ছাত্ররা-যুবরা, আদিবাসী-দলিত মানুষ সবাই লড়ছেন অধিকার রক্ষার স্বার্থে। কেন্দ্রের সরকার মোদী সরকারের জমানায় আমাদের দেশের মানুষের জীবন জীবিকার অধিকার বেঁচে থাকার অধিকার সবকিছু আজ আক্রান্ত। কেবল আদানি আম্বানির সম্পদ বাড়ছে। আর কেন্দ্রের এই জনবিরোধী নীতির দোসর হয়েছে তৃণমূল। তাই এই দুই শক্তির বিরুদ্ধে বৃহত্তর মানুষকে সংগঠিত করার লড়াই আমাদের লড়তে হবে।’’ 
দেবব্রত ঘোষ বলেন, ‘‘চ্যালা-চামুন্ডাদের ধরে কিছু হবে না। যতদিন পর্যন্ত দুর্নীতির আসল কারবারী মাথাদের ধরা না হচ্ছে ততদিন সিপিআই(এম) লড়াই করে যাবে।’’ .

Comments :0

Login to leave a comment