Rajpur General Library

তৃণমূলের অন্তর্কলহে বন্ধ পাঠাগার ভবন উন্নয়নের কাজ

জেলা

Rajpur General Library ক্যাপশন - রাজপুর সাধারণ পাঠাগার। ছবি : অনিল কুণ্ডু।


তৃণমূলের অন্তর্কলহে বন্ধ রয়েছে সোনারপুরের ‘রাজপুর সাধারণ পাঠাগার’ উন্নয়নের কাজ। পাঠাগার উন্নয়ন প্রকল্পে ৩২ লক্ষ পেলেও আপাততো প্রায় ২০ লক্ষ টাকার কাজ হয়েছে। কবে এই পাঠাগারের উন্নয়নের কাজ শেষ হবে এনিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন স্থানীয় মানুষেরা।   
তাঁদের অভিযোগ, সংরক্ষণের অভাবে ১৪৬ বছরের প্রাচীন এই পাঠাগার থেকে আনুমানিক প্রায় দশ লক্ষ টাকার দুস্প্রাপ্য বই চুরি হয়েছে। কম্পিউটার চুরি হয়েছে। পাঠাগার পরিচালন সমিতির নির্বাচন দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ। বন্ধ রয়েছে পাঠাগার ভবন উন্নয়নের কাজ। বর্তমানে এই পাঠাগারের প্রশাসক রাজপুর সোনারপুর পৌরসভার চেয়ারম্যান পল্লব দাস। উন্নয়নের কাজ বন্ধ হওয়ায় শাসক দলের বিরুদ্ধে ক্ষোভে ফুঁসছেন সোনারপুরের মানুষেরা। তাঁদের দাবি, উন্নয়নের কাজ দ্রুত শেষ করে পাঠাগারের পরিচালন সমিতির নির্বাচন অবিলম্বে করতে হবে। দুস্প্রাপ্য বই, কম্পিউটার চুরির প্রশ্নে পুলিশি তদন্ত কেন করা হল না।   

এই ওয়ার্ডের নির্বাচিত সিপিআই(এম) কাউন্সিলর অর্চনা মিত্রকে পাঠাগারের উন্নয়নের কাজের সঙ্গে যুক্ত না করায় তৃণমূলের বিরুদ্ধে নানান প্রশ্ন তুলছেন সাধারণ মানুষ। তাঁদের কথায়, পৌরসভার চেয়ারম্যান পাঠাগারের প্রশাসক অথচ ঘনিষ্ট মহলে বলেছেন তিনি নিজেই সে খবর জানেন না। উন্নয়নের কাজ কেন বন্ধ অবশ্য এনিয়ে মুখ খুলতে চাননি তৃণমূল কর্মীরা। 

১৮৭৭ সালে স্থাপিত এই পাঠাগারের নাম ছিল রিপন লাইব্রেরী। পরবর্তী সময়ে নামকরণ করা হয় রাজপুর সাধারণ পাঠাগার। জানা গেছে বামফ্রন্ট সরকারের তৎকালীন গ্রন্থাগার মন্ত্রী ছায়া বেরা এই পাঠাগারের উদ্বোধন করেন। রিপন লাইব্রেরী থেকে নামকরণ করা হয় রাজপুর সাধারণ পাঠাগার। এই পাঠাগারের উন্নয়ন পরিকল্পনা ও রূপায়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন তৎকালীন সিপিআই(এম) নেতা শান্তিময় ভট্টাচার্য। পরবর্তী সময়ে তিনি রাজপুর সোনারপুর পৌরসভার চেয়ারম্যান হয়েছিলেন। রাজপুর অঘোর সরণি পাশ্চাত্য পাড়ায় রাস্তার ধারেই রাজপুর সাধারণ পাঠাগার। অতিতে নির্দিষ্ট সময়ে পাঠাগার পরিচালন সমিতির নির্বাচন করা হতো। বহু মূল্যের দুস্প্রাপ্য বই এই গ্রন্থাগারে ছিল। স্থানীয় প্রবীণ মানুষেরা জানান, রাজ্যে ২০১১ সালে সরকার পালা বদল হওয়ায় সব কিছুই বদলে গেছে। রাজপুর সোনারপুর পৌরসভার ১৬ নম্বর ওয়ার্ডে অবস্থিত রাজপুর সাধারণ পাঠাগার। পৌরবোর্ডের মেয়াদ ৫ বছর পেরিয়ে গেলে সেই সময় পৌরসভার নির্বাচন না হওয়ায় ২০২১ সালে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিকে কো-অর্ডিনেটর না করে স্থানীয় তৃণমূল নেতা কাঞ্চন চক্রবর্তীকে ওয়ার্ড কো-অর্ডিনেটর করা হয়। তাঁরা জানান, কোভিড পরিস্থিতিতে ২০২০ সালে মার্চ মাস থেকে এই পাঠাগার বন্ধ ছিল। প্রায় দুই বছর বন্ধ থাকার পর পাঠাগারটি ২০২২ সালে ৯ মে থেকে ফের খোলা হয়। এই সময়ের মধ্যেই দুস্প্রাপ্য বই, কমপিউটর চুরি যায় বলে শোনা যায়। সোনারপুর থানায় ডায়েরিও করা হয়। তারপর আর কিছুই হয়নি। আপাততো সপ্তাহে দুই দিন মঙ্গলবার ও শুক্রবার পাঠাগার খোলা থাকে। স্থানীয় বাসিন্দারা আক্ষেপের সঙ্গে বলছেন- তৃণমূলের জমানায় ঐতিহ্যবাহী প্রাচীন এই সাধারণ পাঠাগারের দুস্প্রাপ্য বইও চুরি হয়ে গেল। 

 

Comments :0

Login to leave a comment