Coromandel Express back on track

পেটের টানে ফের করমণ্ডল এক্সপ্রেস চেপে ভিন রাজ্যে পাড়ি শ্রমজীবীদের

রাজ্য

Coromandel Express back on track

 

চিরন্তন পাড়ুই

 

মৃত্যুর ভয়াবহ স্মৃতি। মৃত্যু মিছিলের থেকেও ভয়াবহ। করমণ্ডল এক্সপ্রেসের সাধারণ অসংরক্ষিত কামরার শ্রমজীবী মানুষ খেলনা গাড়ির মতন দুর্ঘটনায় দলা পাকানো মাংসের পিণ্ড হয়ে যান। এই ছবি এখনও তাজা। তবুও পেটের টানে শালিমার স্টেশনের ১ নং প্ল্যাটফর্মে দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে ভিন রাজ্যে কাজের খোঁজে শ্রমজীবীরা। 
শালিমার থেকে ফের চালু হল করমণ্ডল এক্সপ্রেস। আর সেই এক্সপ্রেস ট্রেনে চাপতে সাধারণ অসংরক্ষিত কামরার বাইরে দীর্ঘ লাইন।


পেটের টানে আতঙ্ক চেপেই ভিন রাজ্যে কাজের জন্য করমণ্ডল এক্সপ্রেসে চাপলেন এরাজ্যের শ্রমজীবীরা। ওদেরই কয়েকজন রাজু বাগদি, শ্রীকান্ত গান্ধীরা। বীরভূমের লাভপুরের রাজু বাগদি কিংবা শ্রীকান্ত গান্ধীরা দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে জেনারেল কামরায় উঠতে সক্ষম হলেন। শুধু ওরাই নয়। রাজ্যের বিভিন্ন জেলার শ্রমজীবীরা কেবল পরিবারকে ভালো রাখতে ভিন রাজ্যে কাজ করতেই দুর্ঘটনার ভয়াল রূপ বুকে চেপে রওনা দিয়েছেন এদিন।

 

বুধবার দুপুর ৩-২০ মিনিট নাগাদ শালিমার স্টেশনের ১ নং প্ল্যাটফর্ম থেকে ছাড়লো। সেই ট্রেনেই জেনারেল অসংরক্ষিত কামরাতে দীর্ঘ লাইনের পর গাদাগাদি করে উঠলেন শ্রমজীবীরা। ওরা জানালেন, "গ্রামে মজদুরির কাজ‌ নিয়মিত মেলে না। মজদুরির কাজ যখন মেলে তখন মজুরী কম। বাইরের রাজ্যে রাজমিস্ত্রির কাজে ১০০০ টাকা, জোগাড়ের কাজে ৭০০ টাকা মজুরি। ঘরে থাকলে পরিবারকে ভালো রাখতে পারবো না। তাই যেতে হচ্ছে।"
দুপুর ৩টে ২০ মিনিটে শালিমার স্টেশনে শোনা গেল এক নম্বর প্ল্যাটফর্ম থেকে ১২৮৪১ আপ করমণ্ডল এক্সপ্রেস ছোটার ঘোষণা। আগের রুট ধরেই সাতাশ ঘণ্টার যাত্রা শেষে পৌঁছবে চেন্নাই। অভিশপ্ত বাহানাগাও পেরোবে একই সময়ে। 
এদিন শালিমার স্টেশনে করমণ্ডল এক্সপ্রেস ছাড়ার সময় দেখা যায় ভিড়ে ঠাসা পূর্বের মতই জেনারেল কামরাগুলি। আসলে কাজ না থাকা শুকনো মুখ পেটের টানে জীবনের খোঁজে চললো। সেদিনও চলার পথেই জীবন হারিয়েছিল। ভিড় ঠাসা জেনারেল কামরার শ্রমজীবীরা জানালেন, "ঘরে থাকলে তো কেউ বাঁচবে না। বাইরে গেলে পরিবার বাঁচবে। তাই আতঙ্ক থাকলেও বের হয়েছি কাজের জন্য।" 


কাজ না থাকা ‘শ্রমজীবীর ভরসা’ করমণ্ডলে যান বাংলার শ্রমিকরা। চিকিৎসার জন্য রোগীও থাকেন অনেক। এদিনের যাত্রীরা জানালেন, "রেললাইন বাড়েনি।‌ রেলের শূন্যপদে নিয়োগ নেই। যাত্রীদের যাত্রার নিরাপত্তা দিতে হবে রেলকে।"
শালিমার স্টেশনের ম্যানেজার নবীন আনন্দ সরকার জানিয়েছেন, "যাত্রীদের সম্পূর্ণ নিরাপত্তা খতিয়ে দেখেই এদিন করমণ্ডল এক্সপ্রেস রওনা দিয়েছে শালিমার থেকে।"


যদিও দুর্ঘটনার পর প্রথম যাত্রাতেই মাঝপথেই বিকল হয়ে পড়ে করমণ্ডল এক্সপ্রেসের এসি। তিনটি কামরার এসি সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে যায়। দাঁড়িয়ে যায় ট্রেনটি। কিছুক্ষণ পর এসি ঠিক হলে পুনরায় চলা শুরু করে ট্রেনটি। এসি বন্ধ হয়ে যাওয়ায় গরমে হাঁসফাঁস করতে থাকেন যাত্রীরা।


 

Comments :0

Login to leave a comment