Delhi Vote BJP

পুলিশ, কমিশন কত বড় সঙ্গী বিজেপি’র, বোঝা গেল ভোটের দিনও

জাতীয়

চিরাগ দিল্লিতে এই মহিলা অটোতে ভোট দিতে যাওয়ার সময় আটকায় দিল্লি পুলিশ। এমন অভিযোগ রয়েছে একাধিক।

অরূপ সেন

একদিকে বিজেপি এবং তার সঙ্গী নির্বাচন কমিশন ও দিল্লি পুলিশ। আরেকদিকে বিরোধীরা। 
বুধবার ভোট নেওয়ার পর্ব শেষ হতেই বেরচ্ছে বুথফেরত সমীক্ষার অনুমান। এখনও পর্যন্ত অনুমান, তবে প্রায় প্রতিটি সমীক্ষায় বিজেপি’র সরকারে ফেরার অনুমান করা হয়েছে। 
ভোটের প্রচারপর্বেই লড়াইয়ের এই বিন্যাস দেখা গিয়েছিল। বুধবার, ভোটের দিনও, দেখা গিয়েছে একই ছবি। 
ভোটার তালিকা বের হতেই প্রতিবাদ জানিয়েছিল ‘আপ’ সহ বিজেপি বিরোধী দলগুলি। দেখা গিয়েছে বহু নাম বাদ দেওয়া হয়েছে নানা কৌশলে। ‘আপ’ প্রধান এবং দিল্লির প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়ালের কেন্দ্রেই প্রায় ৩০ হাজার ভোটদাতার নাম ছাঁটাই করার অভিযোগ রয়েছে। 
দেখা গিয়েছে যাঁরা ভাড়া নিয়ে অন্যত্র গিয়েছেন, কিন্তু তখনই ভোটার তালিকায় আগের কেন্দ্রেই নাম রয়েছে, বাদ গিয়েছে এমন অনেকের নাম। 
এবারের নির্বাচন নিঃসন্দেহে বিরল অভিজ্ঞতা দিল্লিবাসীর কাছে। ভোট দেওয়ার জন্য টাকা বিলানো হয়েছে। ভোট না দেওয়ার জন্যও টাকা বিলানো হয়েছে। বিরোধীদের সমর্থন মিলতে পারে, এমন জায়গায় ভোট না দিতে দিল্লি পুলিশকে কাজে লাগানো হয়েছে।
ভোটের দিনও একাধিক জায়গায় নাগরিকদের চলাচলে বাধা দিয়েছে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের অধীন দিল্লি পুলিশ। মঙ্গলবারই এই আশঙ্কা জানিয়ে নির্বাচন কমিশনে গিয়েছিল ‘আপ’-র প্রতিনিধিদল। ছিলেন ‘আপ’ নেত্রী এবং দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অতিশীও। কমিশন আশ্বাস দিলেও বিন্দুমাত্র তৎপরতা দেখায়নি। ভোটকর্মীদের ভূমিকা ঘিরেও রয়েছে অভিযোগ।
এই নির্বাচনে বামপন্থী দলগুলি মোট ১০ কেন্দ্রে প্রার্থী দিয়েছিল। তার মধ্যে সিপিআই(এম) প্রার্থী দিয়েছিল ২ কেন্দ্রে। দিল্লির বাকি ৬০ কেন্দ্রে বিজেপি-কে হারাতে পারে এমন প্রার্থীকে ভোট দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছিল বামপন্থীরা। 
ভোটের দিন জানা গিয়েছে কোথাও কোথাও বিজেপি বাস ভাড়া করে নাগরিকদের ঘুরতে যাওয়ার বন্দোবস্ত করেছে। আজমেঢ় শরিফে যাওয়ার জন্য রাখা ছিল ২০টি বাস! আবার এদিনেই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এলাহাবাদের কুম্ভে স্নানে নামলেন। সেই ছবি দেখানো হয়েছে টেলিভিশনে। 
বিজেপি’র হাতে বিপুল অর্থ, আরএসএস’র নিবিড় সংগঠন, মিডিয়া- সবই। বিভিন্ন রাজ্য থেকে দলের নেতা-কর্মীদের আনা হয় প্রচারে। দিল্লিতে বিভিন্ন রাজ্যের মানুষ থাকেন। তাঁদের জন্য বিশেষ প্রচারের কৌশলও দেখা গিয়েছে। তবে বিজেপি যদিও প্রতিবারই তা করে।
এবার কিছু এলাকায় ‘আপ’-র পক্ষে প্রচার চালায় তৃণমূল, সমাজবাদী পার্টি। 
দুর্নীতির দায়ে অরবিন্দ কেজরিওয়ালকে জেলে পাঠানো হয়েছিল। এখন তিনি জামিনে মুক্ত। কিন্তু বিজেপি’র প্রচারের বড় বিষয় ছিল ‘দুর্নীতির বিরুদ্ধে ভোট নিয়ে নিজেই ব্যস্ত দুর্নীতিতে’। প্রচার শেষ হয়ে যাওয়ার পরও বিজেপি এবং স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী প্রচার চালিয়েছেন কৌশলে। বাজেটে মধ্যবিত্তকে তথাকথিত করছাড়ের ঘোষণায় অন্যতম লক্ষ্য ছিল দিল্লি। রাষ্ট্রপতির ভাষণের ওপর ধন্যবাদসূচক বক্তৃতায় নাম না করে কেজরিওয়ালকে আক্রমণের নিশানা করেন নরেন্দ্র মোদী। কোনও দিক থেকে কোনওভাবে সুযোগ ছাড়তে রাজি নয় বিজেপি!

Comments :0

Login to leave a comment