Coal scam

কয়লা পাচারে ১৯ জুন ফের ইডি’র তলব মলয় ঘটককে

রাজ্য

কয়লা পাচারকাণ্ডে কলকাতা ও দিল্লিতে ইতিমধ্যেই তিন দফায় জেরার মুখে পড়তে হয়েছে খোদ অভিষেক ব্যানার্জিকে। যদিও এই মামলাতেই এখনও পর্যন্ত ৯ বার ইডি’র সমন এড়িয়েছেন মন্ত্রী মলয় ঘটক। অবশেষে দিল্লি আদালতের হস্তক্ষেপেই এবার ফের ইডি’র তলব তাঁকে। 
কয়লা পাচারকাণ্ডে এবার রাজ্যের আইনমন্ত্রীকে আগামী ১৯ জুন দিল্লিতে ইডি’র সদর দপ্তরে হাজিরা দিতে হবে। ইতিমধ্যে কয়লাকাণ্ডে সিবিআই’র হাতে ধৃত ইসিএল’র একাধিক প্রাক্তন আধিকারিকদের জেরাতেও উঠে এসেছে মুখ্যমন্ত্রীর ঘনিষ্ঠ এই আইনমন্ত্রীর নাম।
গত ২৯ মার্চ শেষবার তলব করা হয়েছিল মলয় ঘটককে। তার আগে আটবার তলব করা হয়। প্রতিবারই সরকারি কর্মসূচি বা নির্বাচনী প্রচারে ব্যস্ত থাকার অজুহাতে কয়লা পাচারের জেরা এড়িয়েছেন তিনি। এরপরেই কয়লা পাচারকাণ্ডের তদন্তে তাঁর বিরুদ্ধে অসহযোগিতার অভিযোগ আনে ইডি। 
গত মে মাসে ইডি’র আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে দিল্লি হাইকোর্ট জানায়, মলয় ঘটককে তদন্তে সহযোগিতার সঙ্গে সমন পাঠালে হাজিরা দিতেই হবে। দিল্লিতে এসেই তাঁকে তদন্তে সহযোগিতা করতে হবে। মলয় ঘটকের আইনজীবী বিচারপতির কাছে আরজি জানান, সরকারি কাজে ব্যস্ত থাকায় এর আগে হাজিরা দিতে পারেননি, তবে তার জন্য যেন কোনও পদক্ষেপ না করা হয়। সেই আরজি মেনেই আদালত জানায়, এর আগে সমন উপেক্ষার জন্য কোনও পদক্ষেপ নিতে পারবে না ইডি। আদালত কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা ইডি-কে বলে মলয় ঘটককে সরকারি কর্মসূচির কথা মাথায় রেখেই অন্তত ১৫ দিন আগে সমন পাঠাতে হবে। আর সমন পেলে তাঁকে তদন্তে সহযোগিতা করতে হবে।
এর ভিত্তিতেই গত সপ্তাহে দু’বার মলয় ঘটককে ই-মেল করে ইডি। দু’বারই ব্যস্ত থাকার কথা বলে মলয় ঘটক জুন মাসের তৃতীয় সপ্তাহে সময় দিতে পারার কথা জানান। ইডি’র তরফে এরপর ১৯ জুন তাঁকে তলব করা হয়। এবার আদালত মলয় ঘটককে কোনও রক্ষাকবচ দেয়নি।
পশ্চিম বর্ধমানের আসানসোল, রানিগঞ্জ, জামুরিয়ার বিস্তীর্ণ কোলিয়ারি সাম্রাজ্যে একচ্ছত্র দাপট ছিল কয়লা মাফিয়া অনুপ মাঝি ওরফে লালার। পুরুলিয়া, আসানসোল ও ঝাড়খণ্ডে লালার একাধিক অফিস ও ঠিকানায় ইতিমধ্যে দফায় দফায় তল্লাশি চালিয়ে বিপুল নথি সংগ্রহ করেছে আরেক কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা সিবিআই। রাজনৈতিক প্রভাবশালী মহলের মদতেই অবৈধ খাদান ও বেআইনি কয়লা কারবারের রমরমা। লালার অফিস থেকে মেলা নথি ও তার হিসাবরক্ষক নীরজ সিংহের বাড়ি থেকে পাওয়া ল্যাপটপে মিলেছে একাধিক নাম। সেই সূত্রেই আসে মলয় ঘটকের নাম। এর আগে গত বছর ৭ সেপ্টেম্বর সিবিআই আসানসোল ও কলকাতায় মলয় ঘটকের সাতটি ঠিকানায় তল্লাশি চালায়। মন্ত্রীর তিনটি স্মার্টফোনও বাজেয়াপ্ত করেছিলেন সিবিআই আধিকারিকরা। ইতিমধ্যে ইডি’র জেরায় একাধিক সাক্ষীর বয়ানেও মলয় ঘটকের নাম এসেছে। অভিযোগ, বিপুল টাকার বিনিময়ে প্রশাসনকে চুপ রেখে আসানসোল ও বাঁকুড়ায় অবৈধ খোলা মুখ খাদান থেকে কয়লা পাচারে মদত দিতেন মন্ত্রী।

Comments :0

Login to leave a comment