GREECE FOREST FIRE

গ্রিসের দাবানলে মৃতেরা সেই পরিযায়ী, উদ্বাস্তু

আন্তর্জাতিক

রোজগারের খোঁজে ইউরোপের জমিতে ঠাঁই নিতে চেয়েছিলেন। উপায় ছিল না, তাই লুকিয়েই অভিবাসনের চেষ্টায় লুকিয়ে ছিলেন জঙ্গলে। গ্রিসের এই জঙ্গলে, এথেন্সের কাছের অঞ্চলে দাবানলে মৃতদের প্রায় সবাই এমন পরিযায়ী, উদ্বাস্তু। 

বুধবার গ্রিসের অগ্নি নির্বাপন বিভাগ জানিয়েছে পাঁচদিনেও নেভানো যায়নি আগুন। মৃত অন্তত ২০। অনুমান, তুরস্ক সীমান্ত থেকে ইভরেস নদী ধরে এঁরা পৌঁছেছিলেন গ্রিসে। লুকিয়ে থাকতে হবে বলে আশ্রয় নিয়েছিলেন ডাডিয়া জঙ্গলে। আলেকজান্দ্রোপলিসের উত্তরে এই জঙ্গলে আশ্রয় নিতে হয়েছিল কারণ ধরা পড়লেই ফেরত পাঠিয়ে দিত গ্রিসের নিরাপত্তা বাহিনী। 

গ্রিসে মাখানেক আগে এমন পরিযায়ীরাই মারা গিয়েছিলেন মোটরচালিত নৌকাডুবিতে। ইউরোপে জীবনের খোঁজে আসতে হয়েছিল মানব পাচারকারী চক্রের দালালদের মোটা টাকা দিয়ে। রমরমিয়ে চলছে এমন চক্র। 

ইউরোপ, আমেরিকার বিভিন্ন জঙ্গলে লাগছে আগুন। এই সময়ে দাবানল অস্বাভাবিক নয়। তবে যত দ্রুত এবং যে বিশাল এলাকা জ্বলে যাচ্ছে, তাকে স্বাভাবিক মনে করছেন না বিশেষজ্ঞদের বড় অংশ। বরং পরিবেসবিদরা অনেকেই সরাসরি দায়ী করছেন বিশ্ব উষ্ণায়নকে। 

গ্রিসের অগ্নিননির্বাপন পরিষেবা বিভাগের নির্দেশক ইয়ানিস আরটোপিওস জানিয়েছেন, এখন প্রধান লক্ষ্য আগুন যাতে এথেন্সের দিকে না আসে। পাঁচ দিন ধরে জ্বলছে আগুন। সমস্যা হচ্ছে হাওয়ার বেগ জোরালো। বেগ পেতে হচ্ছে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে। 

উদ্ধারকারীরা মৃতদের পরিচয় জানার চেষ্টা করছেন। সিরিয়া থেকে পৌঁছানো এক অভিবাসী জানিয়েছেন তাঁর সাতাশ বছরের ভাইপোকে পাঁচদিন ধরে পাওয়া যাচ্ছে না। সিরিয়া ছাড়াও আফগানিস্তান এবং ইরাক থেকে এমন উদ্বাস্তুদের একটি দলে ছিলেন তাঁর ভাইপো। প্রশাসনের অনুমান, এই তিন দেশের নাগরিকরাই রয়েছেন মৃতদের তালিকায়। 

এই পরিযায়ীরা উদ্বাস্তুরাই লুকিয়ে ঢুকতে গিয়ে সর্বস্বান্ত হন। বিদ্বেষের শিকার হন। পশ্চিমের দেশগুলিই ‘গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার’ আর ‘শাসন পরিবর্তন’ করতে যুদ্ধ লাগিয়েছে আরবের দেশে দেশে। বিধ্বস্ত হয়েছে অর্থনীতি। ইতালিতে যেমন এখন লিবিয়ার এমনই বিপন্ন মানুষের স্রোত। তাঁদেরই পড়তে হচ্ছে নিপীড়নের মুখে। এবার এই মানুষের নতুন বিপদ- দাবানল।   

Comments :0

Login to leave a comment