G20: Modi on UNSC

জি২০: নিরাপত্তা পরিষদের দাবিতে জোর মোদীর

জাতীয়

লুলাকে দায়িত্ব তুলে দিচ্ছেন মোদী।

মলা সীতারামন বৈঠক করলেন চীনের অর্থমন্ত্রী লিউ কুনের সঙ্গে। দুই অর্থমন্ত্রীর এই বৈটক নজর কেড়েছে গোটা বিশ্বের। দিল্লিতে জি২০ বৈঠকে যোগ দিতে এসেছেন লি। রবিবারই শেষ হয়েছে গোষ্ঠীর শীর্ষ বৈঠক। 
রীতি অনুযায়ী গোষ্ঠীর পরবর্তী সভাপতি দেশ ব্রাজিলের রাষ্ট্রপতি লুলা ডা সিলভার হাতে দায়িত্ব তুলে দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। নিয়ম অনুযায়ী ইংরেজি আদ্যক্ষরের ভিত্তিতে বর্ণমালার ক্রম অনুযায়ী গোষ্ঠীর বিভিন্ন দেশ সভাপতিত্ব করার দায়িত্ব পায়। ভারতের পক্ষে প্রচারে বলা হয়েছে, ‘যৌথ ঘোষণাপত্র’ তৈরি হওয়া বড় সাফল্য। ইউক্রেন যুদ্ধ ঘিরে ঘোষণাপত্রের বয়ান কি হবে তানি য়ে গোষ্ঠীর দেশগুলির মতানৈক্য সত্ত্বেও তাকে প্রশমিত করে অভিন্ন বয়ান তৈরি করা গিয়েছে। 
তবে যৌথ ঘোষণাপত্র হলেও ইউক্রেনের প্রশ্নে গোষ্ঠীর দেশগুলির অবস্থানের ফারাক ঘুচে যাবে বলে মনে করছেন না আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশেষজ্ঞরা। এই অংশের বক্তব্য, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং পশ্চিমের দেশগুলি সামরিক সহায়তায় কোমর বেঁধে নেমে পড়েছে। আবার জি২- গোষ্ঠীর সদস্য রাশিয়া বারবারই বলেছে যে পশ্চিমী আগ্রাসনের নীতির কারণে সংঘাত ইউক্রেনে। ঘোষণাপত্রে রাশিয়া ওপর বসানো জ্বালানি সরবরাহে নিষেধাজ্ঞা তোলার ইঙ্গিত রয়েছে। তবে তা কতটা বাস্তবায়িত হয়, তা নিয়ে সংশয় যথেষ্ট। 


দিল্লি শীর্ষ সম্মেলনের শেষ দিনে মোদী সওয়াল করেছেন রাষ্ট্রসঙ্ঘের নিরাপত্তা পরিষদে ভারতের স্থয়ী সদস্যপদের পক্ষে। ভারত দীর্ঘ শময় ধরে এই দাবি তুলে চলেছে আন্তর্জাতিক স্তরে। এদিন মোদী সেই সুরেই বলেছেন, ‘‘আজকের বিশ্বে নতুন বাস্তবতা রয়েছে। নিরাপত্তা পরিষদে এই বাস্তবতা প্রতিফলিত হওয়া উচিত।’’ 
লুলাও বলেছেন যে নিরাপত্তা পরিষদে উন্নয়নশীল দেশগুলির নতুন সদস্য নেওয়া প্রয়োজন। স্থায়ী এবং অস্থায়ী দু’ধরনের সদস্যের ক্ষেত্রেই উন্নয়নশীল দেশগুলির সংখ্যা বাড়ানো জরুরি। লুলার গুরুত্বপূর্ণ দাবি, বিশ্ব ব্যাঙ্ক এবং আইএমএফ’র মতো আন্তর্জাতিক আর্থিক প্রতিষ্ঠানেও উন্নয়নশীল এবং উত্থানশীল বিশ্বের প্রতিনিধিত্ব বাড়ানো দরকার। 
দিল্লি বৈঠক থেকে আফ্রিকান ইউনিয়নের ৫৫টি দেশকে সদস্য করার সিদ্ধান্ত গোষণা করা হয় শনিবারই। মোদী বলেছেন, নভেম্বরের শেষে ফের জি-২০ গোষ্ঠীর বৈঠক হওয়া প্রয়োজন। সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে কে কতদূর এগচ্ছে দেখা উচিত। 
ভারত যদিও আনুষ্ঠানিক বিচারে নভেম্বরের শেষ পর্যন্ত গোষ্ঠীর সভাপতি থাকবে। বৈঠকের শেষ দিনে, দিল্লি থেকে ভিয়েতনাম উড়ে যাওয়ার আগে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে রাষ্ট্রপতি জো বাইডেনের পোস্ট: ‘‘একের পর এক ধাক্কায় বিশ্ব অর্থনীতি ভুগছে। জলবায়ু পরিবর্তন, ভঙ্গুর অর্থনীতি, সংঘাতের কারণে বারবার সঙ্কট আসছে। এই শীর্ষ সম্মেলন দেখিয়েছে যে জি২০ এখনও সমাধানের দিকে বিশ্বকে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারে।’’ 
জি-২০ গোষ্ঠীর দেশগুলিতে রয়েছে শিল্পোন্নত ধনী মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং পশ্চিমী দেশগুলির জি-৭ গোষ্ঠী। আরেকদিকে রয়েছে ভারত, ব্রাজিল, বিকাশমান অর্থনীতি এবং চীনের মতো দেশগুলির জোট ‘ব্রিকস’। শিল্পোন্নত দেশগুলির তুলনায় বিশ্বের মোট উৎপাদনে প্রায় সমানে সমানে পাল্লা দিচ্ছে ‘ব্রিকস’। অর্থনৈতিক বৃদ্ধির হারের পূর্বাভাসেও এগিয়ে ‘ব্রিকস’। এই দুই অংশের যৌথ মঞ্চ জি২০’তে বিশ্ব উষ্ণায়ন রোধে প্রযুক্তি হস্তান্তরে জোর দেওয়া হয়েছে। শিল্পোন্নত বিশ্ব সমঝোতায় সই করলেও দায়িত্ব পালন করবে কতটা, সে দিকে নজর রয়েছে গোটা বিশ্বের।   

Comments :0

Login to leave a comment