আমেরিকার পথে মানব পাচার তদন্তে ১৪ জন এজেন্টকে আটক করল গুজরাট পুলিশ। ডিসেম্বরের শেষে ৩০৩ যাত্রীসহ একটি চার্টার্ড বিমানকে আটক করা হয় ফ্রান্সের ভ্যাটরি বিমানবন্দরে। অবৈধ অভিবাসনের চেষ্টার অভিযোগ জানায় ফরাসী কর্তৃপক্ষ। যাত্রীদের ৯৬ জন গুজরাটের।
গুজরাট পুলিশের অতিরিক্ত ডিজি এসপি রাজকুমার জানিয়েছেন দক্ষিণ আমেরিকার নিকারাগুয়ায় যাওয়ার জন্য এজেন্টদের ৬০ থেকে ৮০ লক্ষ টাকা দিয়েছিলেন যাত্রীরা। উদ্দেশ্য, কোনওভাবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ঢুকে পড়া। বিমানের বেশিরভাগ যাত্রী পাঞ্জাবের। যে এজেন্টদের বিরুদ্ধে এফআইআর করা হয়েছে তাদের বেশিরভাগ গুজরাটের। কয়েকজন দিল্লি এবং মুম্বাইয়ের। দুবাইয়ের এজেন্টের নামও রয়েছে এফআইআর-এ।
গুজরাট থেকে লুকিয়ে আমেরিকায় ঢোকার প্রয়াস এই প্রথম নয়। মেহসানা বা গান্ধীনগরে চক্র চলছে। প্রশ্ন তুলছে ‘প্রাণবন্ত গুজরাট’ প্রচারেও। প্রতি বছরই এই ‘ভাইব্রান্ট গুজরাট’ শিল্প সম্মেলন করছে গুজরাট, নরেন্দ্র মোদীর মুখ্যমন্ত্রিত্বের সময় থেকে। চলতি সপ্তাহে গুজরাটে এই সরকারি অনুষ্ঠানে ছিলেন মোদী নিজেও। অতীতে এই সম্মেলন থেকেই সারা দেশে গুজরাট মডেলের প্রচার এবং নরেন্দ্র মোদীকে প্রধানমন্ত্রী পদের দাবিদার বলে ঘোষণা করেছিলেন শিল্পমালিকরা।
নিকারাগুয়ায় বিমানটি যাচ্ছিল দুবাই হয়ে। মাঝপথে ফ্রান্সে আটকানোর পর এক শিশুকে বিমানে পাওয়া যায় যার কোনও সঙ্গী ছিল না। ডিসেম্বরের গোড়ায় গুজরাট পুলিশ জানায় সেই শিশুর খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না। সংশ্লিষ্ট মহল বলছে, ভুয়ো পরিবার বানিয়ে প্রথমে শিশুদের পাচার করা হয়। শিশুরা কোনওভাবে মার্কিন মুলুকে নাগরিকত্ব পেয়ে গেলে পরে অভিভাবকরা যান। তখন তাঁদেরও নাগরিকত্বের দাবি জানানো সুবিধাজনক হয়।
মার্কিন যু্ক্তরাষ্ট্রের শুল্ক এবং সীমান্ত সুরক্ষা বিভাগের তথ্যও চমকে দেওয়ার মতো। অভিভাবকবিহীন ৭৩০ শিশুকে ২০২৩ সালে পাওয়া গিয়েছে মার্কিন সীমান্তে। এদের মধ্যে গুজরাটের কত তা যদিও জানায়নি আমেরিকার দেওয়া তথ্য। তবে জানানো হয়েছে ২০২০’র তুলনায় এই সংখ্যা ২৩৩ শতাংশ বেশি।
কেবল ‘প্রাণবন্ত গুজরাট’ নয়, মোদী এবং বিজেপি’র বৃদ্ধির প্রচারেও প্রশ্ন তুলছে নিকারাগুয়ার বিমান কাণ্ড। বৃদ্ধিতে লাভবান হলে ৬০ থেকে ৮০ লক্ষ টাকা ঘুষ দিয়ে আমেরিকার শরণার্থী হওয়ার দৌড় তা’হলে কেন, উঠছে প্রশ্ন।
Comments :0