INSAF JATRA ASANSOL

সাহসে বুক বাঁধুন, লড়াই চাই: আহ্বান ইনসাফ যাত্রায়

রাজ্য জেলা

দেবদাস ভট্টাচার্য, আসানসোল 
 

ইনসাফ যাত্রার সম্বর্ধনা সভায় বলছিলেন ডিওয়াইএফআই রাজ্য সম্পাদক মীনাক্ষী মুখার্জি, দরজা বন্ধ করে বসে থাকার সময় এখন নয়। চুপ করে বসে থাকার সময় এখন নয়। ভবিষ্যৎ লুট হয়ে যাচ্ছে। মোদী মমতা থেকে সাবধান। ওঁরা কী দিতে পারেন তা দেশের মানুষ দেখছেন। দেশি বিদেশি পুঁজিপতিদের হাতে দেশের সম্পদ তুলে দেওয়া হচ্ছে। বিভাজনের বিষ ছড়াচ্ছে। ১০০ দিনের কাজের টাকা লুট। আবাস যোজনার টাকা লুট। কয়লা, লোহা, বালি, জমি মাফিয়ার রমরমা। চুরির দায়ে মন্ত্রী জেলে। সাহসে বুক বাঁধুন। লড়াই চাই। নতুন দিন আনার লড়াই। সবাইকে সঙ্গে নিয়ে লড়াইয়ের ময়দান চওড়া করুন।
বুধবার ২৭ তম দিনে, হাজার কিলোমিটারেরও বেশি পথ পাড়ি দিয়ে ইনসাফ যাত্রা যখন আসানসোলে পৌঁছেছে তখন মীনাক্ষী মুখার্জির কথার প্রতিধ্বনি শোনা গেল ৪৩ নম্বর ওয়ার্ড, তালপুকুরিয়ার বাসিন্দা ইমরান আলমের কন্ঠে, এক মওকা চাহিয়ে— লুটেরোঁ কো আউর মওকা নেহি দিয়া জায়গা। নিঁদ হারাম কর দেনা হোগা। যো আওয়াজ বুলন্দ হুয়া হ্যায়, উসে আগে লে জানা হোগা।  
এদিন জনজোয়ারে উদ্ভাসিত, প্রাণ প্রাচুর্যে পূর্ণ ইনসাফ যাত্রার মহতী এক মহামিছিলের সাক্ষী হলো আসানসোল। রাজ্যের প্রাক্তন ছাত্রনেতা, সিপিআই(এম) রাজ্য কমিটির সদস্য পার্থ মুখার্জি বললেন, এত মানুষ মিছিলে হাঁটবেন, এমন খবর ছিল না। জামুড়িয়ার বোগড়াচটি থেকে চাঁদা গ্রাম হয়ে ইনসাফ যাত্রা এসেছে আসানসোলে। শহরে প্রবেশের মুখে জিটি রোড ঊষাগ্রামে মানুষ সমবেত হয়েছিলেন। গণনাট্য আসানসোল শাখার শিল্পীরা গণসংগীত পরিবেশন করার সময়ে দেখতে দেখতে এলাকা মানুষে মানুষে পরিপূর্ণ হয়ে ওঠে। রাস্তাজোড়া মহামিছিলের পথচলা শুরুর হয়। অল্প কিছুটা যাবার পরই মিছিলের গতিরোধ হয়। মুর্গাসোলে মানুষ হাতে ফুলের পাপড়ি নিয়ে দাঁড়িয়েছিলেন। কিছুটা পথ চলার পরই থামতে হয় আশ্রম মোড়ে। এলাকাটি ৪৩ নম্বর ওয়ার্ডের মধ্যে। গত পৌর কর্পোরেশন নির্বাচনে প্রতিরোধের লড়াই দিয়ে এখানে জয় ছিনিয়ে নিয়েছেন সিপিআই(এম) প্রার্থী আমনা খাতুন। তিনি মিছিলের সামনে ছিলেন। 
এদিন মিছিলে আওয়াজ তুলেছেন কন্যাপুর শিল্পতালুকের শ্রমিকরা। বামফ্রন্ট সরকার শিল্পতালুক তৈরি করেছিল। তৃণমূলী রাজত্বে অনেকগুলি কারখানা বন্ধ হয়ে গেছে শিল্পতালুকে। বন্ধ বিস্কুট কারখানা, বরফ কল, টার ফ্যাক্টারি। রাষ্ট্রায়ত্ত সাইকেল কর্পোরেশন কেবল বন্ধ হয়নি, কারখানার কিছুই আর অবশিষ্ট নেই। শাসকদলের মদতপুষ্ট বাহিনী দিনের আলোয় যন্ত্রপাতি, যন্ত্রাংশ এমনকর কারখানার পাঁচিলের ইট খুলে নিয়ে গেছে। কারখানার জমিতে আবাসন প্রকল্প করার জন্য উঠে পড়ে লেগেছিল সিন্ডিকেট বাহিনী। 
রেলমন্ত্রী থাকাকালীন মমতা ব্যানার্জি বার্নপুর বার্ন স্ট্যান্ডার্ড ওয়াগন কারখানাকে রেলের সঙ্গে সংযুক্তিকরণ করা হলো বলে ডিভিডেন্ড নিয়েছিলেন। বার্ন স্ট্যান্ডার্ড ওয়াগন কারখানা বন্ধ হয়ে গেছে। এদিন মানুষ এসেছিলেন বার্নপুর থেকেও। মহিলারা প্রচুর সংখ্যায় ছিলেন। 
এদিন কুলটি হয়ে ১৩ কিলোমিটার পথ হেঁটে ইনসাফ যাত্রা পৌঁছায় পুরুলিয়া জেলার পারবেলিয়া ঘাটে। 
 আসানসোল ঊষাগ্রাম থেকে গির্জামোড় অভিমুখে এগিয়ে চলেছে ইনসাফ যাত্রা।

Comments :0

Login to leave a comment