স্বচ্ছতার সাথে বেকারদের স্থায়ী ও সম্মানজনক কাজের সুযোগ, ক্ষেতমজুত ও কৃষকের স্বার্থ রক্ষা, বিদ্যুৎ বিল প্রত্যাহার, নিশ্চিত পেনশন সহ অবসরকালীন সুবিধা, শ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরি, আদিবাসীদের জল জঙ্গল জমির অধিকার, নোটবন্দী, জিএসটি'র ফলে ভুক্তভোগী ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের স্বার্থরক্ষা ও মূল্যবৃদ্ধি রোধের দাবিতে সোচ্চারিত হলো বিভাগীয় বিমা কর্মচারী সমিতির ভ্যান জাঠা মিছিল।
সারা ভারত বীমা কর্মচারী সমিতির ২৬তম সম্মেলন উপলক্ষ্যে বিভাগীয় বিমা কর্মচারী সমিতি জলপাইগুড়ির উদ্যোগে মঙ্গলবার সকালে শিলিগুড়ি মুখ্য ডাকঘরের সামনে থেকে ভ্যান জাঠা শুরু হয়েছে। জাঠার শুরু হবার আগে প্রারম্ভিক বক্তব্য রাখেন বিভাগীয় বিমা কর্মচারী সমিতির সহ সম্পাদক রজত রায়। জাঠার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন ১২ জুলাই কমিটির অন্যতম কার্যকরী কমিটির সদস্য মৃত্যুঞ্জয় সরকার। প্রসঙ্গত সারা ভারত বীমা কর্মচারী সমিতির ২৬তম সম্মেলন আগামী ৮ থেকে ১১ জানুয়ারি কলকাতায় অনুষ্ঠিত হতে চলেছে। এই সম্মেলনকে সাফল্যমন্ডিত করার লক্ষ্যে বিভিন্ন কর্মসূচী গ্রহণ করা হয়েছে পূর্বাঞ্চল বীমা কর্মচারী সমিতির পক্ষ থেকে। তারই অঙ্গ হিসেবে গৌহাটি থেকে কলকাতা রিলে ভ্যান জাঠা আয়োজিত হয়েছে। এছাড়াও মূল জাঠাকে শক্তিশালী করে তুলতে অনুষ্ঠিত হচ্ছে বিভিন্ন উপজাঠা।
এদিন শিলিগুড়ি থেকে বেরিয়ে ভ্যান জাঠা মহকুমার মাটিগাড়া এলাকায় পৌঁছায়। মাটিগাড়া হাটে জাঠাযাত্রীরা পথসভায় মিলিত হন। সেখানে সভায় বক্তব্য রাখেন সারা ভারত কৃষক সভার পক্ষে তাপস সরকার, সিআইটিইউ'র পক্ষে ভবেন্দু আচার্য্য ও বিমা কর্মচারী সমিতির পক্ষে জিআইইএ নেতৃত্ব সুব্রত ঘোষ। সভা পরিচালনা করেছেন রজত রায়। এরপর জাঠা সামনের দিকে এগিয়ে চলে। জাঠা চলার পথে বাগডোগরা বিহার মোড় ও নকশালবাড়ি বাজার এলাকায় পৃথক পৃথকভাবে আরো দুটি পথসভা অনুষ্ঠিত হয়। সভা দুটিতে বর্তমান সময়ে জাঠার প্রাসঙ্গিকতা ব্যাখ্যা করার পাশাপাশি সারা ভারত বিমা কর্মচারী সমিতির সম্মেলনের সফলতা কামনা করে বক্তব্য রাখেন শীতল দত্ত, এআইডিইএফ'র রাজেন্দ্র মল্লিক, মনোজ নাগ, সিআইটিইউ দার্জিলিঙ জেলা সভাপতি গৌতম ঘোষ, বিমা কর্মচারী সমিতির পক্ষে প্রীতম চৌধুরী সহ বিভিন্ন গণ সংগঠনের নেতৃবৃন্দ। বাগডোগরা বিহার মোড়ের সভায় সভাপতিত্ব করেন সৌমেন ঘোষ এবং নকশালবাড়ি বাজারে মনোজ নাগের সভাপতিত্বে পথসভা অনুষ্ঠিত হয়। সভার শেষে গণসঙ্গীত পরিবেশন করেছেন যুবনেতা বাপ্পা দাস।
বিভিন্ন জায়গায় সভাগুলোতে নেতৃবৃন্দ বলেন, মানুষের সম্পদকে মানুষের কাজে ব্যবহার না করে দেশের সরকার মানুষের সঞ্চয়কে কর্পোরেট সংস্থাগুলির হাতে তুলে দিতে চাইছে।
ব্যাঙ্ক, বিমা সহ সমস্ত রাষ্ট্রায়ত্ত্ব ক্ষেত্রে বেসরকারীকরনের নীতি নিয়ে চলছে কেন্দ্রের মোদী সরকার। ফলে সাধারণ মানুষের আর্থিক নিরাপত্তা বিঘ্নিত হয়ে পড়ছে। এর বিরুদ্ধে যখন মানুষ প্রতিবাদে সরব হচ্ছেন তখন তাদের মধ্যে জাতি ধর্মের নামে বিভাজন সৃষ্টি করা হচ্ছে। রাজ্যের সরকারও একই নীতি গ্রহণ করেছে। রাজ্যের মানুষের কাজের অধিকার, স্বাধীন মতামত প্রকাশের অধিকার প্রতিনিয়ত আক্রান্ত হচ্ছে। রাজ্য জুড়ে গণতন্ত্র বিপন্ন হয়ে পড়েছে। কেন্দ্র ও রাজ্য দুই সরকারই মানুষের সাংবিধানিক অধিকারকে হরণ করতে চাইছে। সারা দেশ ও রাজ্যে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের লড়াইতে শ্রমিক কৃষক, ছাত্র, যুব মহিলা সহ সর্বস্তরের সাধারণ মানুষকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান বক্তারা।
Comments :0