শুভাশিস দেব সরকার- হাওড়া
‘‘রাজ্যের মানুষকে বোকা বানিয়ে তাদের হাতে ভাঁড় ধরিয়ে দিয়ে রাজ্যের ভাণ্ডার লুঠ করেছে তৃণমূল কংগ্রেস। রাজ্যের মানুষ ইতিমধ্যে তৃণমূল কংগ্রেসের এই ভন্ডামি বুঝতে পেরেছে। মানুষ প্রতিবাদ করছেন। আর সারা দেশে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম বৃদ্ধিতে নাভিশ্বাস উঠেছে দেশের মানুষের জীবনে। প্রতিবাদে সোচ্চার হচ্ছে দেশবাসী। দেশের মানুষের ক্ষোভের আগুন নেভাতে আমরা সবাই একজোট হয়েছি। একমাত্র এর বিরোধিতা করছে তৃণমূল কংগ্রেস। শুধুমাত্র ভাইপোকে রক্ষা করতে।’’
সোমবার হাওড়া কেন্দ্রে বামফ্রন্ট মনোনীত সিপিআই(এম) প্রার্থী সব্যসাচী চ্যাটার্জি ও উলুবেড়িয়া কেন্দ্রে বামফ্রন্ট সমর্থিত জাতীয় কংগ্রেসের প্রার্থী আজাহার মল্লিকের সমর্থনে জনসভায় একথা বলেন সিপিআই (এম) রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম। এদিন সব্যসাচী চ্যাটার্জির সমর্থনে সাঁকরাইল চাঁপাতলা থেকে মানিকপুর পর্যন্ত একটি সুসজ্জিত পদযাত্রায় সহস্রাধিক মানুষের সাথে পা মেলান মহম্মদ সেলিম। তিনি ছাড়াও পদযাত্রায় ছিলেন সিপিআই(এম) জেলা সম্পাদক দিলীপ ঘোষ, প্রার্থী সব্যসাচী চ্যাটার্জি ও জাতীয় কংগ্রেসের নেতা পলাশ ভান্ডারি।
রাতে দক্ষিণ হাওড়ার উনসানী ও পাঁচ পাড়ার জনসভায় বক্তব্য রাখেন মহম্মদ সেলিম, দিলীপ ঘোষ, প্রার্থী সব্যসাচী চ্যাটার্জি। বিকেলে উলুবেড়িয়া কেন্দ্রে বামফ্রন্ট সমর্থিত জাতীয় কংগ্রেসের প্রার্থী আজাহার মল্লিকের সমর্থনে বাগনান গদি ফুটবল মাঠে অনুষ্ঠিত জনসভাতেও বক্তব্য রাখেন মহম্মদ সেলিম,দিলীপ ঘোষ, সিপিআই(এম) নেতা পরেশ পাল, সাবির উদ্দিন মোল্লা, সিপিআই নেতা বিদ্যুৎ গাঙ্গুলী, কংগ্রেস নেতা শুভঙ্কর সরকার, প্রার্থী আজাহার মল্লিক।
সভায় সেলিম বলেন, ‘‘বিজেপি ও তৃণমূল কংগ্রেস দেশের গণতন্ত্রকে ধ্বংস করে দিতে চায়। আর বিজেপি কেন্দ্রে ফের সরকার গঠন করলে দেশে নির্বাচন আর হবে না। আর রাজ্যে তৃণমূল কংগ্রেস বিভিন্ন জায়গায় নির্বাচন বন্ধ করে রেখেছে। এই দুই সরকারই দেশের মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার কেড়ে নিতে চায়।’’
তিনি বলেন, ‘‘চতুর্থ দফা নির্বাচনের পর তৃণমূল কংগ্রেস আর বিজেপি’র দফারফা হয়ে গেছে। রাজ্যে কার্পেট বিছিয়ে বিজেপি’কে নিয়ে এসেছে তৃণমূল কংগ্রেস। বিজেপির যাতে কোন অসুবিধা না হয় তার জন্য সমস্ত ব্যবস্থা করেছে। বিজেপির তরফ থেকে সংসদে সিএএ, এনআরসি সহ দেশ বিরোধী সমস্ত আইন যখন সংসদে পাস হয়েছে তখন তৃণমূল কংগ্রেস সেই বিলগুলি যাতে সংসদে পাস হতে পারে তার জন্য রাস্তা সহজ করেছিল। বিজেপির সমস্ত এজেন্ডা আমাদের রাজ্যে সুষ্ঠুভাবে প্রয়োগ করেছে তৃণমূল কংগ্রেস।’’
তিনি আরো বলেন, বর্তমানে আমাদের রাজ্যে নতুন করে মানুষ জাগছে। বামপন্থীদের আরও বেশি করে সমর্থনে এগিয়ে আসছেন সাধারণ মানুষ। আর এর ফলে বিপদ বাড়ছে বিজেপি ও তৃণমূল কংগ্রেসের। সাধারণ মানুষ একজোট হয়ে বামপন্থীদের হয়ে লড়াই আন্দোলনে সামিল হচ্ছেন। তিনি বলেন আমাদের রাজ্যে ভোটের আগে দাঙ্গার আগুন জানাতে চেয়েছিল বিজেপি ও তৃণমূল কংগ্রেস। দুই দলের এই অপচেষ্টার বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়েছে রাজ্যের সাধারণ মানুষ। রাজ্যে বিভিন্ন প্রকল্প থেকে টাকা চুরি করেছে তৃণমূল কংগ্রেস। রাজ্যের নিয়োগ প্রক্রিয়ায় দুর্নীতির কথা রাজ্যে সবাই জানেন। শিক্ষা ব্যবস্থাকে ধ্বংসের মুখে ঠেলে দিয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস। এছাড়াও ইলেকট্রোলার বন্ডের মাধ্যমে বিজেপি ও তৃণমূল কংগ্রেস কোটি কোটি টাকা নিজেদের দলের কোষাগারে নিয়ে তাদেরকে দেশের মানুষকে লুঠ করার রাস্তা করে দিয়েছে। তিনি বলেন, নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম প্রতি দিন বাড়ছে, কৃষকরা তাদের ফসলের ন্যায্য মূল্য না পেয়ে আত্মহত্যা করতে বাধ্য হচ্ছেন। মানুষের জমা পুঁজি কমে যাচ্ছে ফলে দেশের মানুষের জীবন জীবিকা নীচে নেমে গেছে। তাই লুঠেরাদের হাত থেকে বাঁচাতে হবে দেশকে। মানুষের হকের কথা রুটিরুজির কথা সংসদে বলার জন্য বামফ্রন্ট প্রার্থী সব্যসাচী চ্যাটার্জি ও জাতীয় কংগ্রেসের প্রার্থী আজাহার মল্লিককে জয়ী করে সংসদে পাঠানোর জন্য আবেদন করেন মহম্মদ সেলিম।
Comments :0