Mamata Banerjee

রায়গঞ্জ হাসপাতালের সামনে মুখ্যমন্ত্রীর সভা, উঠছে প্রশ্ন

রাজ্য জেলা

বিশ্বনাথ সিংহ - তপন বিশ্বাস 


রাহুল গান্ধীর ভারত জোড়ো ন্যায় যাত্রার ২৪ ঘন্টা পরেই চোপড়ায় রোড শো করলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি। মঙ্গলবার সকালে শিলিগুড়ি সংলগ্ন ফুলবাড়ির ভিডিওকনের মাঠ থেকে হেলিকপ্টারে করে রায়গঞ্জের উদ্দেশে রওনা দেন। সেখানে প্রসাশানিক সভা হয়। প্রশাসনের নির্দেশে ছিল স্কুল থেকে ছাত্র ছাত্রীদের এনে মুখ্যমন্ত্রীর সভা ভরাতে হবে। স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মহিলাদের প্রকল্পের ভয় দেখিয়ে সভায় হাজির করিয়ে মাঠ ভরানো হয়েছে বলে অভিযোগ। 
শুত্রবার শুরু হবে মাধ্যমিক পরীক্ষা। পরীক্ষার দুদিন আগে তারস্বরে হাসপাতালের সামনে মমতা ব্যানার্জির প্রশাসনিক সভা। স্টেডিয়ামের বিপরীতেই রায়গঞ্জ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল। হাসপাতালের সামনে এই সভা কতটা যুক্তিযুক্ত তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। অভিযোগ মুখ্যমন্ত্রীর সভায় কারণে রাস্তায় অ্যাম্বুলেন্স আটকে পড়ে। সমস্যায় পড়ছেন হাসপাতালের রোগী ও তাদের পরিজনেরা। 
এই প্রসঙ্গে স্থানীয় সিপিআই(এম) নেতৃত্ব বলেন, ‘‘রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর প্রশাসনিক বৈঠক মানেই সেখানে উচ্চৈস্বরে মাইক বাজবে। দলীয় কর্মী সমর্থকদের হৈচৈ লেগেই থাকবে। নিজে স্বাস্থ্যমন্ত্রী হয়েও কিভাবে হাসপাতালের সামনে এভাবে প্রশাসনিক বৈঠকের আয়োজন?’’
স্থানীয় মানুষ বলেছেন, মাঝেমধ্যেই রায়গঞ্জ স্টেডিয়ামে মেলা খেলার আয়োজন হয়, মাইক বাজানো হয়। কিন্তু এবার তো খোদ মুখ্যমন্ত্রীর সভা! তাতে যথেষ্ট মাইক বাজানোয় ও তৃণমুল কর্মীদের দলীয় উল্লাস আর শ্লোগানে সমস্যা হবে রোগীদের। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রোগীর আত্মীয়দেরও একই অভিযোগ।
এদিন বেলা দেড়টা নাগাদ ইসলামপুর থেকে রায়গঞ্জ কর্নজোড়াতে হেলিককপ্টার নামেন মুখ্যমন্ত্রী। কর্ঞ্জোড়া থেকে রায়গঞ্জ শহরে পঞ্চানন বার্মার প্রতিকৃতি মাল্যদান সেরে পায়ে হেটেই পৌছান মহাত্মা গান্ধীর মুর্তিতে পুস্পস্তবক দিয়ে ষ্টেডিয়ামের মাঠে। এদিন উত্তর দিনাজপুর জেলায় ২৬ জন পরিযায়ী শ্রমিকের মৃত্যু নিয়ে একটি বাক্য ব্যায় করেননি। ৩৭ মিনিটের বক্তব্যে কর্ম সংস্থান মহার্ঘভাতা মানুষের জীবন সঙ্কট নিয়ে কোনো বক্তব্য রাখেন নি মুখ্যমন্ত্রী। আরএসএস সম্পর্কে মুখে কুলুপ মমতা ব্যনার্জীর। 
এদিন চোপড়ায় থানার মাঠে থেকে হেলিকপ্টার নেমে সেখান থেকে তিনি রোড শো করেন। তারপর তিনি সড়কপথে ইসলামপুরে রওনা দিয়ে সেখানে তিনি র্যা লি করেন। নিরাপত্তার ঘেরাটোপে মুড়ে ফেলা হয়েছিল পুরো শহরকে। যার জেরে প্রভাবিত ব্যবসা। এমনকি এম্বুলেন্স পর্য্ন্ত ঘুর পথে পাঠানো হয় বলে অভিযোগ। ইসলামপুর মার্চেন্ট এসোসিয়েশনের মুখপাত্র দামদর আগরওয়াল বলেন,  ‘‘শহরের রাজ্য সড়ক বাঁশের ব্যারিকেড দিয়ে এমন ভাবে ঘিরে রাখা হয়েছিল যে কোন খরিদ্দার দোকানে আসতে পারেন নি। তারপরে ছিল পুলিশের কড়াকড়ি। বিষয়টি পুলিশ প্রশাসনের নজরে থাকা উচিত ছিল’’।
এদিকে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি শহরের চৌরঙ্গী মোড় থেকে পায়ে হেঁটে ইসলামপুর হাই স্কুল মাঠ পর্যন্ত পৌঁছান। স্বভাবসিদ্ধ ভঙ্গিতে সহানুভূতি পেতে তিনি রাস্তার পাশে ছোট শিশুদের দেখতে পেয়ে কোলে তুলে নেন এবং হাই স্কুল মোড়ে স্কুলের সাথে কুশল বিনিময় করেন। মুখ্যমন্ত্রী সাংবাদিকদের সাথে কথা বলতে গিয়ে বলেন, কোচবিহার শিলিগুড়ি হয়ে চোপড়াতে আসি এবং ইসলামপুরে র্যা লি করে কর্ণজোড়ায় যাব সেখান থেকে পায়ে হেঁটে স্টেডিয়ামে পৌঁছাব তারপর সেখানে সভা করার পরে বালুরঘাট যাব। রাহুল গান্ধীর ন্যায় যাত্রা নিয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি এড়িয়ে যান।

Comments :0

Login to leave a comment