Md Salim at Berhampore

আদালত না বললে নড়ে না ইডি, সিবিআই: অভিষেককে নোটিশে সেলিম

রাজ্য

Md Salim at Berhampore

অনির্বাণ দে


দুর্নীতি ও দুষ্কৃতী জোটের বিরুদ্ধে মানুষ খেপছেন। ইডি, সিবিআই’কে গতি বাড়াতে হবে তদন্তে। দুর্নীতির যোগসাজসে রয়েছে বিজেপি-ও। দুর্নীতিচক্রের মাথাদের ধরতে হবে। বহরমপুরে সাংবাদিক সম্মেলনে এই দাবি তুললেন সিপিআই(এম) রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম। তিনি বলেছেন, তৃণমূল এবং বিজেপি’র বোঝপড়া করে চলার হিসাব বদলে দেবেন মানুষই। 
সোমবার বহরমপুরে সিপিআই(এম) জেলা দপ্তরে সাংবাদিক সম্মেলনে তৃণমূল বিধায়ক জীবন কৃষ্ণ সাহার গ্রেপ্তারি প্রসঙ্গে প্রশ্ন করেন সাংবাদিকরা। সেলিম বলেন, সাক্ষ্যপ্রমাণ লোপাট করার জন্য মোবাইল পুকুরে ফেলেছিলেন বিধায়ক। তথ্য লোপাটের চেষ্টা হয়েছে। এইভাবে সিট’র নাম করে পুলিশ প্রশাসনকে ব্যবহার করে চিটফান্ড কান্ডে মমতা ব্যনার্জি ও তাঁর পরিবারের যুক্ত থাকার প্রমাণও লোপাট হয়েছে। 


মঙ্গলবার জেরার জন্য তৃণমূল নেতা এবং সাংসদ অভিষেক ব্যানার্জিকে নোটিস পাঠিয়েছে সিবিআই। তার আগে হাজিরা আটকাতে সুপ্রিম কোর্টে যান মুখ্যমন্ত্রীর ভাইপো। সুপ্রিম কোর্ট ২৪ এপ্রিল পর্যন্ত স্থগিতাদেশ দিলেও সমন এসেছে। সেলিম মনে করিয়েছেন যে দুই কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থা সিবিআই এবং ইডি আদালতের নির্দেশ ছাড়া তৃণমূল নেতাদের দুর্নীতির তদন্তে সক্রিয় থাকছে না। শিক্ষক নিয়োগ কাণ্ডে ধৃত কুন্তল ঘোষের বয়ানের পর অভিষেককে জেরার জন্য বলেছিল হাইকোর্টই। তারপর হাজিরার ডাক দিয়েছে সিবিআই।  
মহম্মদ সেলিম বলেন, দুর্নীতি কতটা গভীরে ঢুকেছে তা সামনে এসেছে জীবনকৃষ্ণের ঘটনায়। শুধু শিক্ষক নিয়োগ নয়। যেখানে টাকা আছে, সেখানেই টাকা মারা কোম্পানি আছে। প্রত্যেক জায়গায় আইন আটকানোর চেষ্টা হচ্ছে। কোথাও পুলিশ, রাজ্যের এজেন্সি ব্যবহার করে। কোথাও আরএসএস’র কাছে বার্তা পাঠিয়ে, কোথাও মোদী অমিত শাহর সঙ্গে বোঝাপড়া করে তদন্ত আটকানোর চেষ্টা চলছে।


তৃণমূল নেতা বিভাস অধিকারীর উদাহরণ দিয়ে সেলিম বলেন, ধর্মীয় আবেগকে দুর্নীতির কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে। টাকা পাচারের কাজে বিজেপি এবং তৃণমূলের যোগাযোগ আছে। বিভাস অধিকারীর আশ্রমে বিজেপি নেতা কৈলাস বিজয়বর্গী এসেছেন। টাকা পাচারের স্তরে স্তরে কেন্দ্র ও রাজ্যের শাসক দল ওতপ্রোতভাবে যুক্ত। এই তলিয়ে দেখার তদন্ত প্রক্রিয়াকে বাধা দেওয়া হচ্ছে। 
অভিষেকের আদালতে যাওয়ার প্রসঙ্গ উল্লেখ করে মহম্মদ সেলিম প্রশ্ন করেন, মুখোমুখি জেরাতে ভয় কিসের? সেলিম বলেন, সত্যকে প্রকাশে সতাতার প্রতীকের আপত্তি। সুযোগ পেলেই স্কুল, মাদ্রাসার শিক্ষা বন্ধ করতে চাইছে সরকার। দুর্নীতি ও দুষ্কৃতী জোটের বিরুদ্ধে মানুষ খেপছেন। ইডি সিবিআই’কে গতি বাড়াতে হবে। দুর্নীতিবাজরা ওএমআর শিট, নামের তালিকা সব রেখে দিয়েছে। তখন জানত, নাগপুরে আরএসএস’র সদর দপ্তর থেকে সব ঠিক করে দেওয়া হবে। ইডি-সিবিআই আসবে না। প্রতিদিন বিচারপতিরা চাপ না দিলে ইডি, সিবিআই নড়ছে না।  


সেলিম বলেন, আমরা বারবার জমায়েত করেছি। এই দাবি জানাচ্ছি, তদন্তের গতি বাড়াতে হবে। মাথাগুলোকে ধরতে হবে। না হলে প্রতিদিন ওরা কোর্টের কাজে যেমন বাধা দিচ্ছে, তেমনই নিজেদের রক্ষাকবচ তৈরি করার চেষ্টা করবে। ওরা বছরের শুরুতে বলেছিল, ‘দিদির রক্ষা কবচ’। পরে বোঝা যাচ্ছে মানুষের জন্য নয়, পিসি ভাইপোকে রক্ষার কবচ তৈরি করতে চাইছে তৃণমূল। সেলিম বলেন, কোনও রক্ষা কবচ কাজ দেবে না। দুর্নীতি মানুষের কাছে ধরা পড়ে গিয়েছে। তৃণমূল বিজেপি’র বোঝাপড়ার হিসেব বদলে দেবেন মানুষই।

Comments :0

Login to leave a comment