অনন্ত সাঁতরা- শেওড়াফুলি
সরকারি শিক্ষা না থাকলে গরিব পরিবারের ছেলে মেয়েরা উচ্চশিক্ষার সুযোগ পেতেন না। বস্তিবাসী পরিবারের সন্তানরা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করতে পারতেন না। গত ১০-১২ বছরে রাজ্যে এবং দেশে এই ব্যবস্থাই বদলে দেওয়া হচ্ছে। পয়সার বিনিময়ে শিক্ষা, স্বাস্থ্যকে পণ্য করার চেষ্টা করছে। সমাজের স্বার্থে, দেশের স্বার্থে এই প্রয়াস রুখতে হবে।
রবিবার শেওড়াফুলি গ্যারেজ মাঠে এসএফআই’র সমাবেশে এই আহ্বান জানিয়েছেন সংগঠনের প্রাক্তন নেতা এবং সিপিআই(এম) রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম। রবিবার এসএফআই হুগলী জেলা ৩৭ তম সম্মেলনের প্রকাশ্য সমাবেশে এই আহবান জানান সেলিম। বক্তব্য রাখেন এসএফআই 'র রাজ্য সম্পাদক সৃজন ভট্টাচার্য, সভাপতি প্রতিকুর রহমান এবং হুগলী জেলার নবনির্বাচিত সম্পাদক অর্ণব দাস ও এসএফআই নেত্রী নবনীতা চক্রবর্তী। সভা পরিচালনা করেন নবনির্বাচিত সভাপতি সোমেন মুখার্জি ।
সেলিম বলেন, ‘‘আমাদের রাজ্যে, দেশে সরকার পরিচালিত শিক্ষা ব্যবস্থাকে পরিকল্পিত ভাবে লাটে তুলে দেওয়ার চেষ্টা করছে। যখন থেকে উদার অর্থনীতি চালু হয়েছে, তখন থেকে দক্ষিণপন্থীরা বলে এসেছে শিক্ষা ও স্বাস্থ্য এগুলোতে সরকার কেন খরচ করবে? সরকারের কাজ এটা নয়। সাধারণ মানুষকে শিক্ষা ও স্বাস্থ্যখাতে নিজেদের পকেট থেকে খরচ করতে হয়। শিক্ষাখাতে ও স্বাস্থ্যখাতে ক্রমশ সরকারের বরাদ্দ খরচ কমানো হচ্ছে।’’
সেলিম বলেন, ‘‘বামপন্থী আন্দোলন এবং ছাত্র আন্দোলনের চাপে আগে সংসদের ভেতরে বাইরে এনিয়ে বিতর্ক হত। নয়ের দশক নরসিমা রাও প্রধানমন্ত্রী। তখন বলা হয়েছিলো জিডিপি’র ৬ শতাংশ খরচ হবে শিক্ষায়। এখন এনিয়ে কোনও কথা হয় না। সংসদেও এনিয়ে আলোচনা হয় না। পত্রপত্রিকায় নয়।’’
সেলিম বলেন, ‘‘৬৫ হাজার স্কুল বন্ধ হয়েছে সারা দেশে। এরাজ্যে ৮ হাজার স্কুল বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। মোদীর নীতি মেনে নিয়েছেন মমতা।’’
এসএফআই রাজ্য সম্পাদক সৃজন ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘২০২৪ সালে লোকসভা নির্বাচনে আমাদের প্রধান কাজ হবে বিজেপি’কে তাড়ানো।’’ রাজ্য সভাপতি প্রতিকুর রহমান বলেন, ‘‘আজকের শাসক শ্রেণি শিক্ষা ব্যবস্থাকে বড়লোকদের হাতে তুলে দিতে চাইছে। আর গরিবদের শিক্ষা বন্ধ করে দিচ্ছে। সরকারি স্কুল যদি বন্ধ হয়ে যায়, তাহলে আপনার ছেলের ভবিষ্যত কি হবে? তাই অধিকার লড়ে নিতে হবে। অধিকার কেড়ে নিতে হবে।’’
সেলিম বলেন, ‘‘বিজেপি শুরু থেকে বলে এসেছে জাতীয় নিরাপত্তার কথা। আমরা বলেছি সামাজিক নিরাপত্তার কথা। বেকারী বাড়ছে। তাই নির্বাচনের আগে ধর্ম ও ধর্মীয় ভাবনা এসব তুলছে। চাকরি না দিয়ে ওরা বলছে চণ্ডীপাঠ করো, গীতা পাঠ করো। সংসদে যারা গিয়েছেন তারা আদানি আম্বানিদের স্বার্থ দেখছেন। কৃষকের শ্রমিকের বেকার যুবকদের কথা বলছেন না।’’
সংসদে বিক্ষোভ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘‘প্রধানমন্ত্রী চারদিন পর মুখ খুললেন। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী তো আশ্বস্ত করতে পারতেন যে বেকার ছেলেমেয়েদের সংসদে এসে ধোঁয়া দেওয়ার দরকার। সরকার কর্মহীনতায় নজর দেবে। তা বলছেন না।’’
তৃণমূলের শীর্ষস্তরে দুর্নীতি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘‘বিচারপতি অমৃতা সিনহা বলেছেন অভিষেকের সম্পত্তি হয়েছে ২০১৪ সালের পর থেকে। মানে লুটপাট আরও বেড়েছে কেন্দ্রে বিজেপি সরকার হওয়ার পর।’’
Md Salim at Sheoraphuli
সরকারি শিক্ষাকে বাঁচাতে ছাত্রদের লড়াই চালানোর আহ্বান সেলিমের
×
Comments :0