Jana Ajana

উইপোকার জীবনযাত্রা

ছোটদের বিভাগ

Jana Ajana

প্রদীপ কুমার পাল

ছোট্টবন্ধুরা, তোমরা নিশ্চয়ই উইপোকা দেখেছো। তা বলো তো, উইপোকা দেখতে কেমন? উইপোকাকে ইংরেজিতে কি বলা হয়? আচ্ছা, আমি বলে দিছি, তোমরা মনে রেখ কিন্তু।

উইপোকা দেখতে সাদা রং-এর, অনেক সময় এদের গায়ের রং ঘিয়ে হয় থাকে। ইংরেজিতে এদের বলা হয় Termite. সংস্কৃতে বলা হয় বল্মীক। উইপোকা পিঁপড়ে বা মৌমাছিদের মতো সমাজবদ্ধ জীব। এরাও সন্ধিপদী শ্রেণির, রানি উইপোকা সবচেয়ে বড়ো ও মোটা হয়। এদের পেটভর্তি ডিম থাকে। এদের গায়ে কোনো আবরণ থাকে না। এক-একটা রানি উইপোকা ছ' থেকে আট-ইঞ্চি পর্যন্ত লম্বা হয়ে থাকে। উইপোকাদের সমাজে চার ধরনের উইপোকা থাকে। রানি, পুরুষ, সৈনিক এবং শ্রমিক উইপোকা। যদি তোমরা একটা পরিষ্কার সাদা বোতলে উইপোকাদের রাখ তাহলে দেখতে পাবে এদের আকার মাঝারি, গায়ের রং সাদা বা ঘিয়ে, মাথা হালকা লালচে। এদের চোয়াল মাথার তুলনার বেশ বড়ো আর পেটটা লম্বাটে সাদা রং-এর, এদের চামড়া খুব পাতলা তাই বেশিক্ষণ রোদের তাপ সহ্য করতে পারে না। রোদের তাপ লাগলে শরীর থেকে জল বের হয় যায় এবং উইপোকার মৃত্যু ঘটে। সেই জন্য উইপোকা সবসময় তাদের বাসা অর্থাৎ গর্তের ভিতর থাকে। এরা সবসময় সুড়ঙ্গ তৈরি করে তার ভিতর দিয়ে চলাফেরা করে। সুড়ঙ্গের ভিতর তাপমাত্রা ও জলীয় বাষ্পের পরিমাণ নিয়ন্ত্রিত থাকে। এদের পেটের ভিতর একধরনের পরজীবী জীবাণু থাকে। সেজন্য এরা সবকিছু হজম করতে পারে। 


উইপোকা একস্থান থেকে অন্য স্থানে যখন যায় তখন সুড়ঙ্গ বানিয়ে নিয়ে সেখানে যায়। উইপোকাদের প্রধান খাদ্য হল গাছের কাঠ। এছাড়া বই-পত্র, কাগজ, কাপড় সবকিছুই এদের খাদ্য।

জানো তো, উইপোকাদের বাসস্থান অর্থাৎ উইঢিপি ছোটো-বড়ো বিভিন্ন আকারের হয়, কখনো-কখনো ঢিপি ২০ থেকে ৪০ ফুট উচ্চতার হয়ে থাকে। এই ঢিপি তৈরি করতে উইপোকা ব্যবহার করে মাটি আর তাদের মুখের লালা। ছোটো উইঢিপি দু'ফুটের হয়ে থাকে। মৃত গাছের গুঁড়িতে উইঢিপি বেশি দেখা যায়। ঢিপি সাধারণত বড়ো গাছের তলায় হয়, চারপাশে ছোটো-ছোটো গাছপালা থাকে। ঢিপির বাইরের দিকে অনেক ছিদ্র আছে যা দিয়ে ঢিপির ভিতর বাতাস ঢোকে। ঢিপির ভাঙা অংশ মেরামত করার জন্য এরা নিজেদের মুখের লালা মাটির সঙ্গে মিশিয়ে আস্তে আস্তে আবার নতুন করে গড়ে তোলে। যদি তোমরা উইঢিপি ভাঙো তাহলে দেখতে পাবে উইঢিপির ভিতর অনেক সুড়ঙ্গ। উইঢিপির ক্ষত মেরামত করে শ্রমিক উইপোকা। সময় নেয় আধঘন্টা। শ্রমিক উইপোকাদের চোয়াল বড়ো এবং গড়ন মাঝারি।

উইপোকা নিয়ন্ত্রণের উপায় তোমাদের জানা দরকার। বাড়িতে কোনো কাঠের আসবাবপত্র যদি উইপোকাদের দ্বারা আক্রান্ত হয় তাহলে তোমরা আক্রান্ত জায়গাতে কেরোসিন তেল ভালোভাবে ছিটিয়ে দেবে। আসবাবপত্র সবসময় পরিষ্কার রাখবে তাহলে উইপোকার আক্রমণ কম হবে।

তাহলে তোমরা উইপোকার জীবনযাত্রা সম্পর্কে অনেক কিছু জানলে। এবার তোমরা তোমাদের বন্ধুদের ভালোভাবে বুঝিয়ে দেবে, কেমন?
 

Comments :0

Login to leave a comment