নির্বাচিত সরকাকে বিপাকে ফেলার জন্য রাজ্যপালের ব্যবহার বন্ধ হওয়া দরকার। এই লক্ষ্য জানিয়ে রাজ্যসভায় সংবিধান সংশোধন বিল পেশ করতে চেয়েছিলেন কেরালার সিপিআই(এম) সাংসদ জন ব্রিটাস। সরকারপক্ষের বাধায় সাংসদের ব্যক্তিগত এই বিল পেশই করতে পারলেন না তিনি।
তীব্র ক্ষোভে ব্রিটাস বলেছেন, ‘‘যেভাবে বিল পেশে বাধা দিল সরকারপক্ষ, সংখ্যার জোরে যেভাবে থামিয়ে দেওয়া হলো, তাতে সংবিধানের মর্মবস্তুকে দমন করা হয়েছে রাজ্যসভায়।’’
সংসদে সরকার পক্ষ যেমন বিল পেশ করতে পারে, তা থেকেই আইন হয়। আবার কোনও কোনও বিষয়কে বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে নথিভুক্ত করতে সাংসদরা ব্যক্তিগত বিলও পেশ করতে পারেন। সাধারণ ভাবে শুক্রবারই ব্যক্তিগত বিল পেশ হয়। এদিন একেবারে বিল পেশের সময়েই ঝাঁপিয়ে পড়েন বিজেপি জোট এনডিএ’র সদস্যরা। ব্রিটাসের পক্ষে ২৫ সাংসদ ভোট দেন। এনডিএ’র ৫৫ জন ভোট দেন বিপক্ষে।
এদিন বিল পেশে ঘিরে এই বিবাদের সময় তৃণমূল কংগ্রেসের সাংসদদের দেখা যায়নি। রাজ্যে তৃণমূল সরকারের মন্ত্রী এবং নেতারা রাজ্যপালের সঙ্গে তর্কযুদ্ধে নামলেও রাজ্যসভায় নিষ্ক্রিয় ছিল। পশ্চিমবঙ্গের তৃণমূলের সঙ্গে রাজ্যপালের এমন বিরোধকে যদিও বারবারই ‘সাজানো’ বলে আখ্যা দিয়েছে সিপিআই(এম)।
ব্রিটাস বলেছেন, ‘‘ব্যক্তিগত বিল পেশের অধিকারও এদিন কেড়ে নেওয়া হয়েছে। সংসদীয় রীতির বিচারে খারাপ নজির তৈরি হলো।’’
সংবিধানের ১৫৮ ধারায় সংশোধনের প্রস্তাব রাখা ছিল বিলের খসড়ায়। ব্রিটাস বলেছেন , ‘‘রাজ্যপাল যাতে সংবিধান বহির্ভূত কোনও প্রতিষ্ঠান না হয়ে ওঠেন, সংবিধানের চৌহদ্দিতে থেকে কাজ চালান, তার জন্যই প্রস্তাব রাখা হয়েছিল বিলে। রাজ্যপালের ভূমিকা নতুন করে নির্দিষ্ট করার চেষ্টা হয়েছিল। ঔপনিবেশিক শাসনে রাজ্যপালদের বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য করা শুরু হয়। সেই রেওয়াজ এখনও চলছে। তাকে বাতিল করার প্রস্তাব ছিল।’’
বিলের প্রস্তাবে বলা হয়, অতীতে কেন্দ্রে এবং রাজ্যে একদলীয় শাসনে রাজ্যপালের দপ্তরের সঙ্গে রাজ্যের বিরোধ ছিল না। এই বিরোধ হতে থাকে কেন্দ্রে সরকারে আসীন দলের বিরোধীরা রাজ্য চালালে।
কেন্দ্রে নরেন্দ্র মোদীর শাসনে যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোয় হস্তক্ষেপের অভিযোগে সরব সিপিআই(এম)। রাজ্যগুলির অধিকার খর্ব করার প্রতিবাদও হয়েছে বিভিন্ন সময়ে। সেই কাজেই ব্যবহার করা হচ্ছে রাজ্যপালের দপ্তরকে।
GOVERNOR BILL JOHN BRITAS
রাজ্যপালকে নিয়ন্ত্রণে সিপিআই(এম) সাংসদের বিল আটকালো বিজেপি, নীরব তৃণমূল
×
Comments :0