বিজেপি এবং আরএএস মনে করছে বিচার বিভাগ বারাণসী এবং মথুরায় মন্দির-মসজিদ বিবাদে হিন্দুদের পক্ষে রায় দেবে। আরএসএস প্রধান সে কারণে যেখানে-সেখানে মসজিদ ঘিরে বিবাদ খাড়া না করার কথা বলছেন।
সিপিআই(এম)’র কেন্দ্রীয় কমিটির মুখপত্র ‘পিপলস ডৃমোক্র্যাসি’-র সাম্প্রতিক সংখ্যার সম্পাদকীয়তে এই মর্মে ব্যাখ্যা দেওয়া হয়েছে। গত ২০ডিসেম্বর পুনেতে ভাষণ দেন ‘সরসঙ্ঘচালক’ মোহন ভাগবত। একের পর এক মসজিদ ঘিরে বিবাদ খাড়া করার বিপক্ষে মত জানান তিনি। ভাগবত বলেন যে মন্দির-মসজিদ বিবাদ খাড়া করলেই হিন্দুদের নেতা হওয়া যায় না।
‘পিপলস ডেমোক্র্যাসি’-র সম্পাদকীয়তে বলা হয়েছে, ‘‘আরএসএস তার অবস্থান বদলে ফেলেছে, এই ভাষণ শুনে এমন কিছু মনে করলে একেবারেই ভুল হবে।’’ সম্পাদকীয় নিবন্ধে ব্যাখ্যা, ২০২২’র জুনেও ভাগবত ‘সব মসজিদে শিবলিঙ্গ খুঁজে পাওয়া’ এবং তা নিয়ে বিবাদ খাড়া করার বিপক্ষে বলেছিলেন। আরএসএস’র প্রশিক্ষণ শিবিরে ওই ভাষণে বলেছিলেন যে নির্দিষ্ট পরিস্থিতিতে রাম জন্মভূমি আন্দোলন হয়েছিল। কিন্তু অন্য জায়গায় বারবার বিরোধ হোক চাই না।
সম্পাদকীয়তে মনে করানো হয়েছে যে বিভিন্ন মসজিদ ঘিরে বিবাদের ১৭টি মামলা দেশের বিভিন্ন জায়গায় দায়ের হয়ে রয়েছে। তার মধ্যে রয়েছে উত্তর প্রদেশের সম্ভলও। যেখানে মসজিদে সমীক্ষার নাম করে বিবাদ চরম আকার নেয়। নিহত হন ৫ মুসলিম যুবক।
সম্পাদকীয়তে বলা হয়েছে, ‘‘আরএসএস এবং বিজেপি তাদের ‘ঐতিহাসিক অন্যায়’ এবং ‘ন্যায়যুদ্ধ চালানোর’ ধারণা থেকে মোটেই সরে আসেনি।
উল্লেখ্য, আরএসএস’র মুখপত্র ‘অর্গানাইজার’-র প্রচ্ছদ করা হয়েছে সম্ভলের একটি মন্দিরের ছবি দিয়ে। রাজ্যে বিজেপি’র প্রশাসন দীর্ঘদিনের দখল থেকে মন্দিরকে মুক্ত করার প্রচার চালাচ্ছে। স্থানীয়রা যদিও জানিয়েছেন ওই মন্দির কেউ ‘দখল’ করেনি। ওখানে পুজো হতো না। সেটিকেই এখন জিগির তৈরির জন্য ব্যবহার করা হচ্ছে।
পিপলস ডেমোক্র্যাসিতে ব্যাখ্যা করা হয়েছে কেন বিচারব্যবস্থার ওপর আস্থা রাখছে আরএসএস এবং বিজেপি। বলা হয়েছে, ‘‘ভাগবত জানেন যে ১৯৯১’র উপাসনাস্থল আইনকে উপেক্ষা করে বিচারবিভাগের একাংশ মসজিদের সমীক্ষার অনুমতি দিয়ে চলেছে।’’ আরএসএস এবং বিজেপি-কে আরও নিশ্চিন্ত করেছে প্রাক্তন প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়ের রায়। তিনিই বারাণসীর জ্ঞানবাপী মসজিদে সমীক্ষার জন্য অনুমতি দিয়েছিলেন।’’
সম্পাদকীয়তে বলা হয়েছে, ‘‘ আরএসএস’র মনোভাব হলো বারাণসী এবং মথুরায় যদি তাদের দাবি মেনে নেওয়া হয় তা’হলে গোলমাল পাকানো হবে না। সে কারণেই সব অংশের সম্মতির কথা বলছেন আরএসএস প্রধান।’’ সম্পাদকীয়-তে বলা হয়েছে, ‘‘মোহন ভাগবতের ভাষণের আরেকটি উদ্দেশ্য হলো ছোটোখাটো হিন্দুত্ববাদী সংগঠনগুলিকে দূরে রাখা।’’
People's Democracy
ভাগবতরা মনে করছেন রায় হবে হিন্দুদের পক্ষে, ভাষণের ব্যাখ্যা ‘পিপলস ডেমোক্র্যাসি’-তে
×
Comments :0