Insaf Yatra

দুর্নীতির বিরুদ্ধে ইনসাফ যাত্রায় হাঁটলেন আদিবাসী গ্রামের মানুষ

রাজ্য

ভাস্কর দাশগুপ্ত-পুরুলিয়া 

এই জেলার যৌবন ভিন রাজ্যের বাসিন্দা। এ জেলার যুবক মানে পরিযায়ী শ্রমিক। ঘর ছেড়ে কয়েক হাজার কিলোমিটার দূরে বসবাস করা। এই জেলা মানে অনুন্নয়ন। এই জেলা মানে শিল্পহীনতা। এই জেলা মানে কয়লা চুরি, বালি চুরি, পাহাড় চুরি। এসবের বিরুদ্ধে আওয়াজ তুলে এগিয়ে চলেছে ইনসাফ যাত্রা। শুক্রবার এই জেলার ইনসাফ যাত্রার দ্বিতীয় দিনে সকাল বেলা পুরুলিয়া শহর থেকে শুরু হয় যাত্রা। ট্যাক্সি স্ট্যান্ডে রাজ্য কো অর্ডিনেশন কমিটি, পেনশনার্স সমিতি, এবিটিএ, এবিপিটি-এ প্রভৃতি গণসংগঠনের পক্ষ থেকে পদযাত্রীদের সম্বর্ধনা জানানো হয়। এরপরে পুরুলিয়া শহর থেকে বেরোবার মুখে তেলকল পাড়ায় মুটিয়া মজদুর শ্রমিকরা দল বেঁধে এসে পদযাত্রীদের অভিনন্দন জানান। শহর ছেড়ে পুরুলিয়া বাঁকুড়া জাতীয় সড়ক দিয়ে পদযাত্রা এগিয়ে যায় গিড়গিড়ি, গ্যাঙ্গারা, সিংবাজার, ভাংরা হয়ে পদযাত্রা পৌঁছায় জয়নগরে‌ সেখানে সাময়িক বিশ্রামের পর পদযাত্রীরা পৌঁছয় হুড়া ব্লকের লালপুরে। যে লালপুরে পাহাড় চুরির বিরুদ্ধে আদিবাসী গ্রামের মানুষ রুখে দাঁড়িয়েছেন। তারা পাহাড় কাটতে দেবেন না। সেই সমস্ত প্রতিবাদী মানুষগুলো রাস্তার দু'ধারে দাঁড়িয়ে থেকে ফুল ছুঁড়ে অভিনন্দন জানিয়েছেন। আদিবাসী প্রথায় পদযাত্রীদের বরণ করে নেন তারা। মাথায় কলসী নিয়ে নাচতে নাচতে পদযাত্রীদের সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যান।

 লালপুর মোড়ে পথ সভায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে ডিওয়াইএফআই’র রাজ্য সম্পাদিকা মীনাক্ষী মুখার্জি বলেন, এই সরকার যে নীতি নিয়ে চলেছে তাতে পুরুলিয়া বাঁচবেনা। পুরুলিয়ার মানুষকে না খেতে পেয়ে মরতে হবে। পুরুলিয়ার মানুষের জন্য ব্রিগেড যাত্রা। তিনি লালপুরের মানুষকে সেই ব্রিগেড অভিযানে সামিল হওয়ার আহ্বান জানান। বলেন, দেশের সরকার গোটা দেশটাকে পিছিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। ছোট  ব্যবসায়ীদের অবস্থা খারাপ হচ্ছে। ওই সরকার ভারতকে ফকির বানাতে চাইছে। তিনি বলেন, এই পুরুলিয়ার মাটিতে বাম কর্মী সমর্থকদের রক্ত ঝরিয়েছে মাওবাদীরা। রাতের অন্ধকারে নির্বিচারে খুন করেছিল বামপন্থীদের। সেদিন যারা মাওবাদী আজ তারা তৃণমূলের নেতা কর্মী। যারা খুনি এই সরকার তাদেরকে চাকরি দিয়েছে। আর যাদের পরিবারের সদস্য খুন হয়েছে তাদের খোঁজ নেওয়ার অবকাশ নেই। এই সরকার শিল্প বিরোধী সরকার। এই সরকারের জন্যই শালবনী হয়নি, রঘুনাথপুর হয়নি। তিনি বলেন, তৃণমূল-বিজেপি এরা হলো চোরে-চোরে মাসতুতো ভাই। দুজনেই ভাগ বাটোয়ারা করে খায়। আবাস যোজনার ঘর পেয়েছে তৃণমূলের নেতাকর্মীরা। ১০০ দিনের টাকা মেরেছে যারা তাদেরকে কোন মতেই ক্ষমা করা হবে না। বকেয়া মজুরি অবশ্যই দিতে হবে। তিনি বলেন, যে শ্রমিকরা ৪০০ ঘন্টা সুড়ঙ্গে বন্দী হয়েছিলেন তারাও বাইরে বেরিয়ে এসে কথা বলতে পারেন অথচ কালীঘাটের কাকু গত কয়েক মাস ধরে কথা বলতে পারছেন না। এই দুর্নীতির বিরুদ্ধেই ইনসাফ যাত্রা। এছাড়াও সমাবেশে বক্তব্য রাখেন ডিওয়াইএফআই’র রাজ্য সভাপতি ধ্রুবজ্যোতি সাহা। সভাপতিত্ব করেন সুব্রত চৌধুরী। এরপরে ইনসাফ যাত্রা পৌঁছয় পুরুলিয়ার সীমানা পার করে বাঁকুড়ার মহসিনাতে।
 

Comments :0

Login to leave a comment