SFI SCHOOL STUDENTS CONVENTION

জাতীয় শিক্ষানীতি বাতিলের দাবিতে
স্কুল ছাত্র কনভেনশন চন্দননগরে

রাজ্য জেলা

সোমবার চন্দননগরে মিছিল এসএফআই’র।

জাতীয় শিক্ষানীতি বাতিল, শিক্ষার খরচ কমানোর ও দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত মিড ডে মিলের দাবিতে প্রস্তাব উত্থাপন করে রাজ্য স্কুল ছাত্র কনভেনশন হল সোমবার, চন্দননগর নৃত্যগোপাল স্মৃতি মন্দিরে। 

এসএফআই পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য কমিটির উদ্যোগে এই কনভেনশন হয়। হুগলী, হাওড়া, নদীয়া, বর্ধমান, বীরভূম সহ ৬ টি জেলা থেকে আগত প্রায় ১৩০-র বেশি ছাত্র প্রতিনিধি এই কনভেনশনে অংশ নেন। সংগঠনের পতাকা উত্তোলন ও শহীদ বেদিতে মাল্যদানের মধ্য দিয়ে কনভেনশন শুরু হয়। 

কনভেনশনে প্রতিবেদন পেশ করেন সংগঠনের স্কুল ছাত্র রাজ্য আহ্বায়ক সৌভিক দাসবক্সি। সর্বমোট ১২ জন প্রতিনিধি প্রতিবেদনের ওপর আলোচনা করেন। 

এদিনের আলোচনার ক্যাম্পাসে ক্যাম্পাসে তৃণমূলের তোলাবাজি, লাগামছাড়া দুর্নীতির প্রসঙ্গ উঠে আসে। আলোচকদের কথায়, আগে বলা হত ঘুমিয়ে আছে সকল পিতা, সব শিশুরই অন্তরে। আজ বলা হচ্ছে ঘুমিয়ে আছে দিদির ভাইপো সব চোরেদেরই অন্তরে।

কনভেনশনে অভিনন্দন জানিয়ে বক্তব্য রাখেন বিশিষ্ট অধ্যাপক শ্যামল চক্রবর্তী, এসএফআইয়ের রাজ্য সম্পাদক সৃজন ভট্টাচার্য, রাজ্য সভাপতি প্রতিকুর রহমান, এবিটিএ রাজ্য নেতৃত্ব রশিদা খাতুন, এবিপিটিএ জেলা সম্পাদক কমল মল্লিক, এসএফআই জেলা সম্পাদক নবনীতা চক্রবর্তী, জেলা সভাপতি অর্ণব দাস প্রমুখরা। 

রাজ্য সম্পাদক সৃজন ভট্টাচার্য বলেন, "আমাদের স্কুল শিক্ষার কাঠামোটাকে ধ্বংস করতে চাইছে কেন্দ্র ও রাজ্যের সরকার। এক তো আমরা চোখে দেখছি স্কুলগুলি সর্বনাশ হয়ে যাচ্ছে, অনেকেই বলছেন এখানে। আমরা লেখাপড়া করতে গেছি শুধুমাত্র পেশাগত উদ্দেশ্যে নিয়ে নয়। আমরা লেখাপড়া করি সমাজে বেঁচে থাকার উপযোগী হওয়ার জন্য। আমার ক্লাসে পড়া ছেলে বা মেয়েটি ভালো আছে কিনা চিন্তা করা হল আসল ব্যাপার। আসল ব্যাপার হল মানুষের সম্প্রদায় জাতি ধর্ম নির্বিশেষে এক হয়ে বাঁচা এটা আসল বিষয়। শিক্ষা সহ সর্বস্তরের মৌলবাদের উস্কানির প্রতিবাদে বিভিন্ন ধরনের সামাজিক বিভাজনের বিরুদ্ধে আমাদের সোচ্চার হতে হবে। এসএফআই কর্মীরা যা কিছু ভালো তার পাশে থাকুক মানবতার পক্ষে থাকুক বিপ্লবের কাজ এমনিতেই হবে।"

অধ্যাপক শ্যামল চক্রবর্তী উদ্বোধন করে বলেন, ‘‘ আমরা একটা এমন দেশে বাস করি যে দেশে পরিবেশ নিয়ে পড়ার সুযোগ ইউজিসি করে না। পড়ার এই সুযোগ তৈরি করার জন্য জনস্বার্থের মামলা করতে হয়েছিলো। সেই দেশে গরিব মানুষের শিক্ষার অধিকার কেড়ে নেওয়া হবে তা বলাই বাহুল্য।"

শিক্ষিকা রশিদা খাতুন সহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ বলেন, "আমরা কাদের জন্য লড়াই করছি যারা প্রান্তিক গ্রামীণ গরিব ছাত্রছাত্রী তাদের জন্য। আজকে আমাদের শপথ নিতে হবে আমাদের প্রকৃত শিক্ষায় শিক্ষিত হব। শোষণমুক্ত সমাজ গঠনের জন্য অতিরিক্ত দায়িত্ব নিতে হবে নারীদের। শিক্ষা মানে শুধুমাত্র প্রথাগত শিক্ষা নয়।" রাজ্য কনভেনশন থেকে সর্বসম্মত ভাবে রাজ্য যুগ্ম আহ্বায়ক নির্বাচিত হয়েছেন এসএফআই রাজ্য নেতৃত্ব বাদশা দাস ও সৌভিক দাসবক্সি। কনভেনশনে পরিবেশ বাঁচানো তীব্র দাবদাহ থেকে বাঁচতে বৃক্ষ জাতীয় গাছের চারা বিতরণ করা হয়।

সভা পরিচালনা করেন ছাত্র নেতৃত্ব নবনীতা চক্রবর্তী, বেদদ্রোহী গোস্বামী, মধুশ্রী মজুমদার প্রমুখের সভাপতিমন্ডলী।

পরে রাজ্য স্কুল ছাত্র কনভেনশন উপলক্ষে এদিন চন্দননগর বাগবাজার মোড়ে ছাত্র সমাবেশ হয়। 

সমাবেশের শুরুতে এসএফআই হুগলী জেলা কমিটির উদ্যোগে  প্রথমে চন্দননগর স্টেশন থেকে বাগবাজার পর্যন্ত একটি বর্ণাঢ্য মিছিল হয়। মিছিল বাগবাজার পৌছালে সমাবেশ শুরু হয়। 

শুরুতে গণনাট্য অভিযাত্রী শাখার শিল্পীরা সংগীত পরিবেশন করেন। সমাবেশে বক্তব্য রাখেন এসএফআই রাজ্য সম্পাদক সৃজন ভট্টাচার্য। এসএফআই রাজ্য নেতৃত্ব সৌভিক দাসবক্সি, হুগলী জেলা সম্পাদক নবনীতা চক্রবর্তী ও জেলা সভাপতি বাদশা দাস সাম্প্রতিক পরিস্থিতি সম্পর্কে সংক্ষিপ্ত আলোচনা করেন। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন রাজ্য ও জেলা গণতান্ত্রিক আন্দোলনের নেতা দেবব্রত ঘোষ, মনোদীপ ঘোষ, শ্রুতিনাথ প্রহরাজ প্রমুখ।

Comments :0

Login to leave a comment