Siliguri Municipal Corporation

শিলিগুড়ি কর্পোরেশনের বোর্ডসভায় বিরোধীদের কন্ঠরোধ

জেলা

Siliguri Municipal Corporation

বিরোধীদের কন্ঠরোধ করা হলো তৃণমূল কংগ্রেস পরিচালিত শিলিগুড়ি পৌর কর্পোরেশনের মাসিক বোর্ডসভাতে। এর প্রতিবাদে সরব হলো বাম কাউন্সিলাররা। শুক্রবার শিলিগুড়ি পৌর কর্পোরেশনের একাদশতম মাসিক বোর্ড সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। বাম কাউন্সিলাররা এদিনের বোর্ড সভায় পানীয় জল প্রসঙ্গে মোশান আনতেই তাদের বলতে বাধা দেওয়া হয়। বিজেপি’র বিরোধী দলনেতাও যেহেতু একই প্রসঙ্গে মোশন আনেন এদিনের বোর্ডসভাতে সেই অজুহাতেই কর্পোরেশনের চেয়ারম্যান বাম কাউন্সিলারকে বলতে বাধাদান করেন।


শিলিগুড়ি শহরের বর্তমান জলন্ত সমস্যা পানীয় জল সরবরাহ বিঘ্নিত হওয়া সহ জল সংক্রান্ত বেশ কিছু বিষয় নিয়ে বারবার আবেদন সত্ত্বেও বাম কাউন্সিলার শরদিন্দু চক্রবর্তীকে বোর্ডসভায় আলোচনা করতে দেননি কর্পোরেশনের চেয়ারম্যান। চেয়ারম্যান বলেন পানীয় জল সরবরাহ বিঘ্নিত হবার প্রসঙ্গ বাদ দিয়ে অন্য প্রসঙ্গে আলোচনা করুন। বাম কাউন্সিলার সবটা বলতে চাইলেও তাকে সবটা বলতে দেওয়া হয় না। এদিনের বোর্ডসভার জন্য একদিকে মানুষ পানীয় জল পাচ্ছেন না, অন্যদিকে পানীয় জলের অপচয় ও জলকর বৃদ্ধিজনিত সমস্যা এই তিনটি পয়েন্ট উল্লেখ করে গত ২৭ ডিসেম্বর চিঠি করেছিলেন বাম কাউন্সিলার শরদিন্দু চক্রবর্তী। গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় বিরোধীদের হাউস বলে দাবি করলেও কর্পোরেশনের বর্তমান বোর্ডের মাসিক সভাতে সাধারন মানুষের হয়রানি নিয়ে বলার সময় বাম কাউন্সিলারকে বাধাদান করা হয়েছে।
প্রসঙ্গত শিলিগুড়ি শহরে প্রতিনিয়ত পানীয় জল পরিষেবা বিঘ্নিত হচ্ছে। চলতি মাসের শেষ সপ্তাহ জুড়ে শিলিগুড়ি শহরের বেশ কিছু ওয়ার্ডের বাসিন্দারা প্রচন্ড জলসঙ্কটে ভুগছেন। শহরবাসী নাজেহাল। দিনের পর দিন কর্পোরেশনের পানীয় জল সরবরাহ বন্ধ থাকলেও কর্পোরেশনের তরফে শহরবাসীদের আগাম কোন কিছু জানানো হয়নি। জলের মতো জরুরী পরিষেবা দিনের পর দিন বন্ধ থাকছে অথচ কর্পোরেশন নির্বিকার। এমনকি বিভিন্ন ওয়ার্ডের জনপ্রতিনিধিদের কাছেও জল পরিষেবা বন্ধ থাকার কোন খবর নেই। এদিনের বোর্ডসভায় বিধোধী দলের জনপ্রতিনিধিদের কাছেও শহরের জল সংক্রান্ত সমস্যা ও সমাধান বিষয়ে কোন সদুত্তর দিতে পারেননি মেয়র। প্রশ্নের মুখে জল বন্ধ থাকার দায় চাপিয়েছেন বিদ্যুৎ দপ্তরের উপর। বিগত বাম জমানার ৩৪ বছরের কাহিনী ও নতুন জল প্রকল্পের গল্প তো আছেই। অভিযোগ, একদিকে শহরে পানীয় জল পরিষেবা পাচ্ছেন না শহরবাসী। অন্যদিকে পানীয় জলের অপচয়ও হচ্ছে বিপুলভাবে। কোথাও গাড়ি ধোওয়া হচ্ছে। আবার কোথাও বাগানের পরিচর্যা হচ্ছে। কিন্তু জনমানসে সতর্কীকরন করার ক্ষেত্রে কর্পোরেশনের কোন নজরদারি নেই। শহরের বিভিন্ন এলাকায় ফ্ল্যাট বাড়িগুলিতে মধ্যবিত্ত মানুষের বসবাস। সেই অ্যাপার্টমেন্টগুলিতে জলকর ৫০ শতাংশ বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। ফলে সমস্যায় পড়েছেন বহু সাধারন মানুষ।  


এই প্রসঙ্গে বাম কাউন্সিলার শরদিন্দু চক্রবর্তী বলেন, এই মোশন নিয়ে আগাম  জানানো হয়েছিলো। রাজনৈতিক উদ্দেশ্য প্রনোদিতভাবে বলতে দেওয়া হলো না। তীব্র জলকষ্টে শহরবাসী ভুগছেন এটা কর্পোরেশনের বর্তমান বোর্ডের সার্বিক ব্যার্থতা। কিন্তু বর্তমান জলপ্রকল্পের ক্ষেত্রে অব্যবস্থা সেচ, বিদ্যুৎ, জনস্বাস্থ্য কারিগরী দপ্তর ও কর্পোরেশনের মধ্যে কাজের ক্ষেত্রে কোন সমন্বয় নেই। মানুষের প্রতি দায়বদ্ধতার অভাব পরিলক্ষিত হচ্ছেন। জল অপচয়, জল কর নিয়ে শহরের সামগ্রিক বিষয়টি বোর্ড সভাতে মোশন আকারে তুলে ধরার চেষ্টা করেছিলাম। মেয়র বিরোধীদের হাউজ বললেও প্রতিটি বোর্ডের সভায় বিরোধীদের প্রতি বারবার বৈষম্যমূলক মনোভাব প্রকাশ পেয়েছে। এদিনও চেয়ারম্যান বোর্ডসভাতে বলতে দিলেন না।    
 

Comments :0

Login to leave a comment