Sitaram Yeachury

মোদী সরকারের নীতিতে দেশের এমন বেহাল দশা

জাতীয়

কেন্দ্রের আরএসএস-বিজেপি পরিচালিত মোদী সরকারের জনবিরোধী নীতির জন্যই আজ দেশের এই হাল বলে অভিযোগ করলেন সিপিআই(এম)’র সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি। বুধবার রাজস্থানের ভাদ্রে-তে সিপিআই(এম) প্রার্থী বলওয়ান পুনিয়ার সমর্থনে আয়োজিত সমাবেশে ইয়েচুরি এরই সঙ্গে রাজ্যের কংগ্রেস সরকারের নীতিরও কঠোর সমালোচনা করেন।
ইয়েচুরি এদিন অভিযোগ করেন, কেন্দ্রের মোদী সরকারের নীতির কারণেই আজ দেশের সাধারণ মানুষ, কৃষক, শ্রমিক, ছাত্র, যুব, দলিত, সংখ্যালঘু এবং মহিলাদের অবস্থা খারাপ থেকে আরও খারাপের দিকে যাচ্ছে। একারণেই তিনি পুঁজিবাদী দলগুলির নীতির বিরুদ্ধে এবং সাধারণ মানুষের স্বার্থে বিকল্প নীতির রূপায়ণের লড়াই সংগ্রামে সদা সক্রিয় কমিউনিস্ট প্রার্থীদের ভোটে জিতিয়ে বিধানসভায় পাঠানোর আহ্বান জানান। তিনি বলেন, এই সময় এটাই সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন। লড়াকু, সৎ জনপ্রতিনিধিরা নির্বাচিত হলে তাঁরা দৃঢ়তার সঙ্গে নিজের বিধানসভা কেন্দ্রের দাবিগুলিকে বিধানসভায় তুলে ধরবেন। এমনকি জনগণের স্বার্থে জনবিরোধী নীতির পরিবর্তন আনারও চেষ্টা চালাবেন। বামপন্থী প্রার্থীরা বিধানসভার ভিতরে ও বাইরে এবং রাস্তায় জনগণের সঙ্গে লড়াই করে কৃষক, শ্রমিক এবং সাধারণ জনগণের স্বার্থে বিকল্প নীতি বাস্তবায়নের লক্ষ্যে কাজ করে যাবেন। তিনি বলেন, নেতাদের নয়, নীতি পরিবর্তনের জন্য ভোটের প্রয়োজন। নয়া উদারনৈতিক অর্থনৈতিক নীতির কারণে কৃষক, শ্রমিক ও সাধারণ জনগণের সর্বনাশ বন্ধ করতে হলে নীতি পরিবর্তনের সংগ্রাম আরও তীব্র করতে হবে। তাই এই সংগ্রামকে আরও তীব্র করতে শ্রমিক ও কৃষকদের উচিত সিপিআই(এম)’র লড়াকু ও সৎ প্রার্থীদের জনপ্রতিনিধি হিসাবে নির্বাচিত করে সাধারণ মানুষের কণ্ঠকে রাজ্য বিধানসভায় পৌঁছে দেওয়া। ইয়েচুরি এদিন দেশের সঙ্কটের কথা তুলে ধরে বলেন, এমন চরম সময়ে রাজস্থানের এই নির্বাচন শুধু রাজ্যের জন্য নয়, গোটা দেশের রাজনীতিতে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আমি নিশ্চিত যে এই নির্বাচনে রাজস্থানের মানুষ সাম্প্রদায়িক, কর্পোরেট হাউসের সমর্থনকারী এবং জনবিরোধী নীতি বাস্তবায়নকারীদের পরাজিত করবে এবং সিপিআই(এম) প্রতিনিধিদের শক্তিশালী এবং বিশ্বাসযোগ্য বিকল্প হিসাবে বেছে নেবেন।
উল্লেখ করা যেতে পারে, ভাদ্রে কেন্দ্রে জিততে মরিয়া বিজেপি এবং কংগ্রেস। দু’দলই বিপুল বিপুল পরিমাণ টাকা ছড়াচ্ছে। উলটোদিকে, তৃণমূল স্তরের কর্মীরাই শক্তি সিপিআই(এম)’র। প্রার্থী পুনিয়া সব সময় কৃষকদের পাশে থেকেছেন। তাঁদের জন্য জল, বিদ্যুৎ এবং ফসল বিমা নিশ্চিত করতে আন্দোলনের নেতৃত্ব দিয়েছেন। ভাদ্রের কৃষকরাও কৃষি বিলের বিরুদ্ধে আন্দোলনে সক্রিয় ছিলেন। পুনিয়া বার বার কৃষকদের অধিকারের কথাই বলেছেন প্রচারে। ভাদ্রের আশি শতাংশ কৃষক। 
বলওবান পুনিয়া বিধায়ক হওয়ার পর নির্বাচনী এলাকায় চারটি নতুন কলেজ ও অনেক স্কুল চালু করেছেন। মাত্র ৩০ শয্যার উপ-জেলা হাসপাতালকে একশো শয্যা বিশিষ্ট একটি বড় হাসপাতালে পরিণত করার ক্ষেত্রে সক্রিয় উদ্যোগ নেন। গ্রামে গ্রামে আরও প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র চালু করা হয়েছে। ৩৩০ কিলোমিটার নতুন রাস্তা তৈরি করা হয়েছে। কৃষকদের ফসল বিমা চার গুণেরও বেশি বৃদ্ধি করা হয়েছে মূলত পার্টির নেতৃত্বে ধারাবাহিক আন্দোলনের ফলে। সরকারের সমস্ত কল্যাণমূলক পরিকল্পনা জনগণের কাছে পৌঁছে দেওয়ার ক্ষেত্রে তাঁর ভূমিকা ছিল গুরুত্বপূর্ণ। পুনিয়া একারণেই ফের জনগণের রায়ে বিধায়ক হবেন বলে আশাবাদী। ভাদ্রে ২.৭৪ লক্ষ ভোটার রয়েছে। যে আটটি কলেজে সাংগঠনিক নির্বাচন হয়েছে তার সবকটিতেই এসএফআই’র নিরঙ্কুশ জয়লাভ করেছে। মোট ২৭টি পঞ্চায়েত সমিতির মধ্যে ১৭টিতে রয়েছে বামপন্থীরা এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি পদে সিপিআই(এম) প্রার্থীরা রয়েছেন। ভাদ্রের সিপিআই(এম) পাঁচটি জেলা পরিষদ আসনের মধ্যে দুটিতে জিতেছে। ভাদ্র পৌরসভায় বিজেপিকে পরাস্ত করেছে সিপিআই(এম) এবং কংগ্রেস। 
এদিন হনুমানগড়, ঝাদোল, ডুঙ্গারপুর, দন্তরামগড়, দোণ্ড, সিকর, তারানগর, সাদুলপুর, শ্রীদুঙ্গারগড়, লাদনুন বিধানসভা কেন্দ্রে গ্রামীণ ও শহুরে এলাকায় সিপিআই(এম) প্রার্থীদের সমর্থনে জনসভার আয়োজন করা হয়েছিল।

Comments :0

Login to leave a comment