LADAKH WANGCHUK FAST

লাদাখে অনশন ভাঙলেন ওয়াঙচুক, কমেনি ক্ষোভ

জাতীয়

লাদাখের মর্যাদা চেয়ে এভাবেই সরব জনতা।

একুশ দিনের মাথায় অনশন ভাঙলেন সোনম ওয়াঙচুক। লাদাখের সাংবিধানিক সুরক্ষা এবং জনতার রাজনৈতিক অধিকারের দাবিতে বসেছিলেন অনশনে। সঙ্গে ছিলেন কয়েক হাজার সমর্থক। 
মঙ্গলবার অনশন ভাঙার পর পরিবেশ আন্দোলনের মুখ ওয়াঙচুকের ঘোষণা, ‘‘আন্দোলন কিন্তু জারি থাকবে। সাংবিধানিক সুরক্ষা এবং জনতার রাজনৈতিক অধিকারের পক্ষে আন্দোলন থেমে যাবে না।’’
কেন্দ্রীয় শাসনের বিরুদ্ধে ক্ষোভ ফুটে বেরচ্ছে লাদাখে। পূর্বতন জম্মু ও কাশ্মীরের অংশ লাদাখকেও কেন্দ্র শাসিত অঞ্চল করেছে কেন্দ্র। ২০১৯’র ৫ আগস্ট জম্মু ও কাশ্মীরের সাংবিধানিক বিশেষ মর্যাদার ৩৭০ ধারা বাতিল করা হয়। জম্মু ও কাশ্মীর এবং লাদাখকে আলাদা দু’টি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল করা হয়। কিন্তু নির্বাচন হয়নি। ফলে কেন্দ্রের শাসনেই থাকতে হচ্ছে লাদাখকেও। আদিবাসী প্রধান এই এলাকায় সংবিধানের ষষ্ঠ তফসিলের সুরক্ষার দেওয়ার দাবি উঠেছে।
ফেব্রুয়ারি থেকে বারবার লাদাখে প্রতিবাদ ভেঙে পড়ছিল। গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেন পরিবেশ আন্দোলনের কর্মীরা। কেন্দ্রের পর্যটন নীতি, পরিকাঠামো উন্নয়নের নামে প্রাকৃতিক সম্পদ বেসরকারি হাতে দিয়ে দেওয়ার নীতিতে জেরবার সেখানকার বাসিন্দারা। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের সঙ্গে বারকয়েক বৈঠকও হয়। কিন্তু কোনও সমাধান বের হয়নি। 
ওয়াঙচুক অনশন তুলে নেওয়ার পরই রাজ্যের মহিলাদের বিভিন্ন গোষ্ঠী জানাচ্ছে, এবার অনশনে বসবেন তাঁরা। মঙ্গলবার সকালেই সোশাল মিডিয়ায় ওয়াঙচুক পোস্ট করে জানান যে তাঁর সঙ্গে অনশন চালাচ্ছেন আরও ৩৫০ জন। তাপমাত্রা মাইনাস ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াস। জমে যাচ্ছে জল। তার মধ্যেও চালিয়ে যাচ্ছেন আন্দোলন। 
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী অমিত শাহের নাম করেই ওয়াঙচুক লিখেছেন, ‘‘ কেবল রাজনীতিবিদ নয়, এঁদের দেশের নেতা বলেই দেখতে চাই। কিন্তু তার জন্য দূরদৃষ্টিত পরিচয় দিতে হবে। হিমালয়ের বুকে ভঙ্গুর ভূপ্রকৃতিকে খেয়ালে রাখতে হবে। এখানকার আদিবাসী জনজাতির নিজস্ব সংস্কৃতিকে মর্যাদা দিতে হবে।’’
প্রযুক্তিবিদ ওয়াঙচুক এক দশকের আগে পরিচিত হন ‘থ্রি ইডিয়টস’ সিনেমার কারণে। তাঁর অনুকরণেই ওই কাহিনীর কেন্দ্রীয় চরিত্র। 
লাদাখে মুসলিম প্রধান কারগিল এবং বৌদ্ধ প্রধান লেহের মানুষই একত্রেই নেমেছেন প্রতিবাদে। ‘অ্যাপোক্স বডি অব লেহ’ এবং ‘কারগিল ডেমোক্র্যাটিক অ্যালায়েন্স’ নামে দুই সংগঠনও গড়ে উঠেছে। সাংবিধানিক স্বীকৃতির দাবি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের সঙ্গে আলোচনায় তুলেছে দুই সংগঠনই। কেন্দ্রীয় শাসন নয়, লাদাখের মানুষই ঠিক করবেন নিজেদের ভবিষ্যৎ, তুলেছে সেই দাবিও। কেন্দ্র কমিটি গড়লেও আন্তরিকতার ঘাটতিতে রয়েছে তীব্র ক্ষোভ।

Comments :0

Login to leave a comment