একটা জয়। এনে দিতে শেষ ষোলোয় ওঠার সুযোগ। মঙ্গলবার এশিয়ান কাপের গ্রুপ পর্বে শেষ ম্যাচ খেলতে নামছে ভারত। প্রতিপক্ষ সিরিয়া। যাদের বিরুদ্ধে কয়েকমাস আগেই খেলেছে ভারত। সিরিয়াকে এই ম্যাচে হারাতে পারলেই খুলে যেতে পারে শেষ ষোলোর দরজা। তবে সুনীলদের তাকিয়ে থাকতে হবে অন্য দলগুলির ফলাফলের দিকে। তবুও ভারত বাড়তি মরিয়া শেষ ম্যাচ জেতার ব্যাপারে। তারপর যা হবে দেখা যাবে। ইতিহাস বলছে, এশিয়ান কাপের নক আউটে ভারত কখনোই যোগ্যতা অর্জন করতে পারেনি। এশিয়ান কাপে এবারের ফরম্যাট, ইউরো কাপের মতোই। অর্থাৎ ছ’টি গ্রুপের শীর্ষ দু’টি দল তো যাবেই, সেইসঙ্গে আরও চারটি তৃতীয় স্থানাধিকারী দলও পরের রাউন্ডে যাওয়ার সুযোগ পাবে, যাদের পয়েন্ট বেশি থাকবে, গোলপার্থক্যে এগিয়ে থাকবে।
প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে হলে এটা মরণ বাঁচন ম্যাচ ভারতের কাছে। ইতিমধ্যেই দু’টি ম্যাচ খেলেছে ইগর স্টিম্যাচের দল। দু’টি হার। দু’গোলে অস্ট্রেলিয়ার কাছে, উজবেকিস্তানের কাছে তিন গোলে। এখনও অবধি গোলই করতে পারেনি ভারত। হজম করেছে পাঁচটি। যা চাপ ভারতের উপর অনেকটাই বেশি। এই প্রতিযোগিতায় সিরিয়া অন্তত একটি ম্যাচে ড্র করেছে, উজবেকিস্তানকে আটকে দিয়ে ভারত সেটাও পারেনি। কয়েকমাস আগে সিরিয়া হারিয়ে একটি প্রতিযোগিতায় চ্যাম্পিয়ন হয়েছে ভারতীয় দল। এশিয়ান কাপের শেষ ম্যাচের আগে এটাই প্রেরণা দিচ্ছে ভারতীয় দলকে। যে মানের দল ভারত, সিরিয়া হারানোর দক্ষতা রয়েছে। কয়েকদিনের ব্যবধানে সিরিয়ার বিরুদ্ধে দু’টি ম্যাচ খেলার সুবাদে, তাঁদের শক্তি-দুর্বলতা সম্পর্কে ওয়াকিবহাল ভারত।
শেষ ম্যাচের আগের দিন সাংবাদিক সম্মেলনে এসেছিলেন সুনীল ছেত্রী। বহুদিন আগেই তিনি জানিয়েছিলেন, জাতীয় দলের জার্সিতে এশিয়ান কাপ তাঁর শেষ প্রতিযোগিতা। সিরিয়া বিরুদ্ধে ভারতের ফল বিপক্ষে গেলে কী সুনীল অবসর নিয়ে নেবেন আন্তর্জাতিক ফুটবল থেকে? আশঙ্কা তেমনই! তবে তিনি কিন্তু সিরিয়াকে হারানোর ব্যাপারে বেশ আশাবাদী। স্বপ্ন দেখছেন পরের রাউন্ডে যাওয়ার। সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে তিনি বললেন, ‘অস্ট্রেলিয়া, উজবেকিস্তানের চেয়ে আলাদা কিছু নয় সিরিয়া দলটা। তাঁরা শক্তিশালী দল। গাজোয়ারি ফুটবল খেলে। তবে ইতিবাচক দিক হলো, কয়েকমাস আগে আমরা সিরিয়ার বিরুদ্ধে দু’টি ম্যাচ খেলেছি।’ অস্ট্রেলিয়া, উজবেকিস্তানের বিরুদ্ধে হেরেছে ভারত। অনেক ভুলভ্রান্তি হয়েছে। এই প্রসঙ্গে সুনীল বলছেন, ‘আগের দু’টি ম্যাচ যা হয়েছে, সেটা আর বদলাতে পারব না। এবার আমাদের সামনের দিকে তাকাতে হবে। গত দুই ম্যাচে যা ভুল হয়েছে, সেগুলি শুধরে মাঠে নামতে হবে আমাদেরকে।’
সকারুজ, উজবেকিস্তানদের বিরুদ্ধে ভারত দু’টি ম্যাচই খেলেছে আহমেদ বিন আলি স্টেডিয়ামে। সিরিয়ার বিরুদ্ধে খেলবে আল বায়েতে। মাঠে পরিবর্তনে যদি ফলাফল পক্ষে আসে ভারতের। সেই আশা করছেন কোচ ইগর স্টিম্যাচ। কিন্তু গোল যদি না করতে পারে, তাহলে জেতা অসম্ভব। গত ম্যাচে উজবেকিস্তানের চেয়ে ভারতের দখলে বল বেশি ছিল। নিখুঁত পাস বেশি খেলেছে। নিজেদের পাসও বেশি খেলেছে। তারপরও তিনটি গোল খেয়েছে, একটি গোল করতে পারেনি। রক্ষণ, পাসিংয়ে কিছুটা উন্নতি হলেও ফিনিশিং সমস্যা। সুনীল ছাড়া গোল করার লোকের অভাব। দু’টি ম্যাচে সুনীল গোল করতে পারেনি, বাকিরাও পারেনি। এই ম্যাচে কী হবে? ভারতের সুরেশ ওয়াংঝাম প্রত্যয়ী সিরিয়ার বিরুদ্ধে ডেডলক ভাঙার ব্যাপারে। তবে তারজন্য ভারতীয় দলকে সাহসী ফুটবল খেলতে হবে। রক্ষণের খোলস ছেড়ে বেরিয়ে অহরহ আক্রমণ শানাতে হবে। বিপক্ষের রক্ষণে চাপ না বাড়ালে কখনই গোলমুখ খুলবে না। ইগর স্টিম্যাচ জানাচ্ছেন, নিজস্ব ব্র্যান্ডের ফুটবল খেলবে ভারতীয় দল। সিরিয়ার বিরুদ্ধে নিজেদের ফুটবলশৈলীর উপর বিশ্বাস রাখছেন স্টিম্যাচ।
অন্যদিকে, সিরিয়া শারীরিক ফুটবল খেলে। এটা নিয়ে সতর্ক স্টিম্যাচও। ৪-৪-২ ছকেই দু’টি ম্যাচ খেলেছ তাঁরা। রক্ষণ জমাট রেখে প্রতি আক্রমণে যায়। তাঁরাও দু’টি ম্যাচে কোনও গোল করতে পারেনি, তবে হজম করেছে মাত্র একটি। সুতরাং বোঝা যাচ্ছে, সিরিয়ার রক্ষণ ভাঙতেও ঘাম ঝরাতে হবে সুনীল ছেত্রীদের। বড় পরীক্ষা ভারতীয় দলের আক্রমণভাগের। এই ম্যাচে ভারতের প্রথম একাদশে পরিবর্তন আসলেও আসতে পারে।
ভারত-সিরিয়া
(ম্যাচ শুরু বিকাল পাঁচটা)
AFC Asian Cup
মরণ বাঁচন ম্যাচে জয়ই লক্ষ্য ভারতের
×
Comments :0