Tripura Vote

জনগণের বাহিনী প্রস্তুত রাখার আহ্বান জানাচ্ছেন বামফ্রন্ট নেতারা

জাতীয়

ত্রিপুরায় নির্বাচনী প্রচার শেষ হচ্ছে মঙ্গলবার। এখন প্রধান প্রশ্ন হয়ে দাঁড়িয়েছে ভোট অবাধ ও শান্তিপূর্ণ হবে কিনা। রাজ্যের বড় অংশের মানুষ এই প্রশ্ন নিয়েই উদ্বিগ্ন হয়ে আছেন। এই অবস্থায় সোমবার ভারতের নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে দেখা করেছিলেন সিপিআই(এম) নেতৃবৃন্দ। সীতারাম ইয়েচুরি, নীলোৎপল বসু, মুরলীধরন কমিশনকে মানুষের এই আশঙ্কার কথা জানান। তাঁরা কমিশনকে বলেন, গত পাঁচ বছরের অভিজ্ঞতা খুবই খারাপ। ভীতি প্রদর্শন, গায়ের জোরে বুথ দখল, ভোটারদের বাধা দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে লোকসভার ভোটে, বিধানসভার উপনির্বাচনে, স্থানীয় স্বায়ত্তশাসিত সংস্থার ভোটে। এবারেও সেই আশঙ্কা রয়েছে। এই আশঙ্কা বেড়েছে ত্রিপুরায় হঠাৎ বিপুল পরিমাণ মোটর সাইকেল ঢোকায়। আশঙ্কা করা হচ্ছে, শাসক দল বাইক বাহিনী তৈরি করে ভীতি প্রদর্শনের চেষ্টা করবে। 
নেতৃবৃন্দ কমিশনকে জানান, দেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ত্রিপুরায় রয়েছেন। আসামের মুখ্যমন্ত্রী ঘাঁটি গেড়ে বসে রয়েছেন। প্রশাসন এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষার দায়িত্বপ্রাপ্তদের প্রভাবিত করার চেষ্টা হবে। অর্থের ব্যবহার হচ্ছে। এই অবস্থায় ভোটারদের মনে আস্থা তৈরি করার জন্য নির্বাচন কমিশনকে ব্যবস্থা নিতে হবে। একটি সুনির্দিষ্ট দাবিও তাঁরা করেছেন। নিরাপত্তা বাহিনী শুধু বড় রাস্তায় ফ্ল্যাগ মার্চ করলে হবে না, ভেতরে তাদের যেতে হবে। 
কমিশনের পক্ষ থেকে অবশ্য আশ্বাস দেওয়া হয়েছে অবাধ ও সুষ্ঠু ভোটের জন্য সমস্ত পদক্ষেপ নেওয়া হবে। শান্তিপূর্ণ পরিবেশে নির্বাচন করানোর জন্য যাবতীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে। 
আগরতলায় রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী অফিসার কিরণ গীতে সোমবার বলেছেন, কমিশন শান্তিপূর্ণ ভোট করার জন্য ব্যবস্থা নিচ্ছে। ভোটাররা খুশিমনে ভোট দিতে বেরোতে পারেন। কোথাও কোনও বাধাদানের ঘটনা ঘটলে সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। নির্বাচনের ৪৮ ঘণ্টা আগে থেকে ওই কেন্দ্রের ভোটার ছাড়া কেউ থাকতে পারবেন না। এই কারণে হোটেল, অতিথিশালায় তল্লাশি করা হচ্ছে। বাংলাদেশ ও আসাম, মিজোরাম সীমান্ত সিল করে দেওয়া হয়েছে। মোটরবাইক নিয়ে কোনও মিছিল আর করা যাবে না। তবে, প্রথার বাইরে গিয়েই ১৪ তারিখ প্রচার শেষের পরেও ১৫ তারিখ সন্ধ্যা পর্যন্ত প্রার্থীরা চারজনকে সঙ্গে নিয়ে ঘরে ঘরে প্রচার চালাতে পারেন বলে রাজ্যের নির্বাচন দপ্তর থেকে জানানো হয়েছে। 
বামফ্রন্ট নেতৃবৃন্দ অবশ্য জনগণের কাছে বারংবার আহ্বান জানাচ্ছেন, প্রশাসন যদি শান্তিপূর্ণ ভোট নিশ্চিত করে তাহলে ভালো, অন্যথায় যে কোনও আক্রমণ রুখেই ভোটকেন্দ্রে যেতে হবে। সোমবার নির্বাচনী সমাবেশে মানিক সরকার বলেছেন, আত্মসন্তুষ্টির কোনও অবকাশ নেই। বিজেপি টাকার বস্তা নিয়ে নেমেছে। নতুন করে বাহুবলীদের জড়ো করার চেষ্টা করছে। কিন্তু এই ভোট লোকসভা, পঞ্চায়েতের ভোট না। দলবদ্ধভাবে ভোট দিতে যাবেন। যদি কেউ রাস্তায় বাধা দেয়, ঐক্যবদ্ধভাবে রাস্তা পরিষ্কার করে দেবেন। সিপিআই(এম) রাজ্য সম্পাদক জিতেন্দ্র চৌধুরিও সোমবার বলেছেন, নির্বাচন কমিশন হিংসাহীন ভোটের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। কিন্তু আমরা আত্মসন্তুষ্টিতে ভুগতে পারি না। বুথে বুথে জনগণের বাহিনী তৈরি রাখতে হবে। কেন্দ্রীয় বাহিনীর পাশাপাশি জনগণের বাহিনীকে তৈরি থাকতে হবে। যতক্ষণ ভোট শেষ হয়ে ইভিএম গাড়িতে না উঠছে, ততক্ষণ জনগণের বাহিনীকে পাহারায় থাকতে হবে।
 

Comments :0

Login to leave a comment