AIKS Concluding Speech

বিজেপি’কে হটাতে যৌথ সংগ্রামের আহ্বান কৃষকসভার

জাতীয়

সর্বভারতীয় সম্মেলনে জবাবী ভাষণ হান্নার মোল্লার।

প্রসূন ভট্টাচার্য

দেশজুড়ে যৌথ আন্দোলন তীব্র করার লক্ষ্য ঘোষণা করে শেষ হয়েছো সারা ভারত কৃষক সভার ৩৫তম সর্বভারতীয় সম্মেলন। গত মঙ্গলবার কেরালার ত্রিচূড়ে শুরু হয় এই সর্বভারতীয় কৃষক সম্মেলন। 

প্রতিনিধিদের আলোচনার শেষে শুক্রবার সম্মেলনের শেষদিনে জবাবী ভাষণে সংগঠনের বিদায়ী সাধারণ সম্পাদক হান্নান মোল্লা বলেছেন, রাজ্যে রাজ্যে একেবারে ইউনিট স্তর পর্যন্ত কৃষক সভাকে শক্তিশালী করতে হবে। স্বাধীন আন্দোলনও করতে হবে। কিন্তু বর্তমান সময়ে যৌথ আন্দোলনের কোনো বিকল্প নেই। মোদী সরকারের তীব্র আক্রমণের মোকাবিলা করতে হলে কৃষকদের স্বার্থরক্ষায় লড়াইয়ে যোগ দিতে ইচ্ছুক সবাইকে সঙ্গে নিয়ে আন্দোলনই বর্তমান সময়ের চাহিদা। স্থানীয় স্তরে দাবি আদায়ের মতো লড়াই করতে পারলে ২০২৪ সালের নির্বাচনে মোদীকে ক্ষমতা থেকে হটানোর বন্দোবস্ত করতে পারব।

ভারত কৃষক সভার সভাপতি অশোক ধাওয়ালে বলেন, ২০২৩’এ সংযুক্ত কিষাণ মোর্চা দেশব্যাপী আলোড়ন ফেলার মতো আন্দোলনে নামছে। কৃষকদের স্বার্থ রক্ষা করতে গেলে ২০২৪ সালে মোদীকে হটাতেই হবে। সংগঠনের নবনির্বাচিত সাধারণ সম্পাদক বিজু কৃষ্ণন বলেছেন, আগামী ৫ এপ্রিল দিল্লি অচল করে দেওয়ার মতো সংসদ অভিযান হবে সিআইটিইউ, কৃষক সভা এবং খেতমজুর ইউনিয়নের ডাকে। আমাদের লড়াই আরও সংহত করতে হবে। 

সংযুক্ত কিষাণ মোর্চার নেতৃত্বে পাঁচশোর বেশি সংগঠনের যৌথ আন্দোলনেই দিল্লিতে ঐতিহাসিক কৃষক আন্দোলনের জয়ের থেকে শিক্ষা নেওয়ার আহবান জানিয়ে হান্নান মোল্লা বলেছেন, এখন শত্রু সবচেয়ে শক্তিশালী, তাই কৃষকদের একতাই বাঁচার একমাত্র পথ। 

তিনি বলেছেন, দিল্লি ঘেরার মতো জাতীয় স্তরের আন্দোলন প্রতিদিন হবে না। স্থানীয় সংগ্রাম আরও বাড়াতে হবে। কেবল সভা সেমিনার মিছিল নয়, দাবি আদায়ের মতো লড়াই করতে হবে। তবে আমরা ২০২৪ সালের নির্বাচনে মোদীকে ক্ষমতা থেকে হটানোর বন্দোবস্ত করতে পারবো। কৃষক সভা রাজনৈতিক সংগঠন নয়, নির্বাচনে লড়াই করে বিজেপিকে পরাস্ত করা রাজনৈতিক দলগুলির দায়িত্ব। কিন্তু কৃষক সংগ্রাম কৃষকদের মধ্যে যে রাজনৈতিক সচেতনতা বাড়াবে তাতেই নির্বাচনে বিজেপি পরাস্ত হবে, কাদের নির্বাচিত করতে হবে কৃষক জনগণ বুঝে নেবে। 

বিভিন্ন রাজ্যের ৬২ জন প্রতিনিধি আলোচনায় অংশ নিয়েছেন। হান্নান মোল্লা বলেছেন, কৃষক সভাকে সাম্প্রদায়িকতা ও সামাজিক বৈষম্যের বিরুদ্ধেও লড়াই চালাতে হবে। ধর্মনিরপেক্ষতা রক্ষার জন্য ব্যাপক প্রচারের উদ্যোগ নিতে হবে। মহিলা, দলিত, আদিবাসীদের ওপরে যে শোষণ চলছে, তার বিরুদ্ধেও লড়তে হবে। সংগঠনে, নেতৃত্বে মহিলাদের আরও ব্যাপক সংখ্যায় আনতে হবে। পিতৃতান্ত্রিক মানসিকতার বিরুদ্ধে আমাদের লড়াই সফল করতে হবে। জলবায়ু পরিবর্তন সংক্রান্ত সমস্যা নিয়ে সচেতনতা বৃদ্ধিতে সংগঠনকে দায়িত্ব নিতে বলেন তিনি। 

 

সম্মেলন থেকে কৃষক সভার সংবিধানের দুটি সংশোধনী গৃহীত হয়েছে। সদস্যপদ অ্যাফিলিয়েশন ফি সংক্রান্ত একটি সংশোধনী এবং অপরটি শস্যভিত্তিক ফেডারেশন গড়ে তোলার জন্য। স্থির হয়েছে রাজ্যস্তরে এবং জাতীয়স্তরে শস্যভিত্তিক ফেডারেশন গড়ে তোলা হবে কৃষক সভার পরামর্শ অনুসারে। 

(ছবি: দিলীপ সেন)

Comments :0

Login to leave a comment