Maldah School Girl

নিখোঁজ স্কুল ছাত্রীর দেহ উদ্ধার, উত্তপ্ত মালদা

রাজ্য জেলা

গত সোমবার ইংলিশবাজারের উত্তর বালুচর এলাকা থেকে রহস্যজনকভাবে নিখোঁজ হয়ে গিয়েছিল পঞ্চম শ্রেণির এক স্কুল ছাত্রী। বাড়ির কাছে থেকেই নাবালিকা নিখোঁজ হয়ে যায়। সিসিটিভি ফুটেজ দেখে তদন্ত শুরু করে পুলিশ। অবশেষে নিখোঁজ নাবালিকা স্কুল ছাত্রীর গলা কাটা দেহ উদ্ধার হয় বুধবার রাতে। মালদা শহরের রবীন্দ্র ভবন সংলগ্ন আম বাজারে। মৃতদেহ থেকে একটু দূরে একটি পুরোনো আবাসিকের ছাদ থেকে উদ্ধার হল মাথা। উদ্ধার হাওয়া মৃতদেহ ও মাথা ময়নাতদন্তের জন্য মালদা মেডিকেলে পাঠাল ইংরেজবাজার থানার পুলিশ। ঘটনাকে কেন্দ্র করে ব্যাপক উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে ইংরেজবাজার থানার সামনে। পরিস্থিতি সামাল দিতে রাতেই থানায় ছুটে আসেন পুলিশ আধিকারিকরা।


পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গত সোমবার সন্ধায় মালদা শহরের বালুচর এলাকার এক নাবালিকার নিখোঁজ হওয়ার অভিযোগ ওঠে। পরিবারের তরফে নিখোঁজ হওয়ার অভিযোগ দায়ের করা হয়। নিখোঁজ নাবালিকার পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে ঘটনার তদন্তে নামে ইংরেজবাজার থানার পুলিশ। এই এলাকার সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ সংগ্রহ করে দেখা যায় ওই নাবালিকা এক যুবকের মোটরবাইকে উঠে চলে যায়। সেই ক্যামেরার ফুটেজ দেখে রাতেই এক সনু কেশরী নামে এক যুবকের আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করে ইংরেজবাজার থানার পুলিশ। অভিযোগ জিজ্ঞাসাবাদে পুলিশকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করে সনু। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে অভিযুক্ত সনু পৌরসভার চেয়ারম্যান ও তৃণমূল নেতা কৃষ্ণেন্দু নারায়ণ চৌধুরীর ঘনিষ্ঠ। এছাড়া ও মৃত ছাত্রীর আত্মীয়। অভিযোগ পুলিশ অভিযুক্তকে আটক করলেও মেয়েটিকে উদ্ধারের কোন উদ্যোগ নেয়নি মঙ্গলবার। স্থানীয়দের অভিযোগ, মেয়েটির বাড়ির অদূরেই মুখ্যমন্ত্রীর প্রশাসনিক সভা থাকায় এই ঘটনার প্রভাব যাতে কোন ভাবেই না পড়ে তার জন্য নিষ্ক্রিয় ছিল পুলিশ। বুধবার রাতেই স্থানীয় মহিলারা ইংরেজবাজার পৌরসভার চেয়ারম্যান কৃষ্ণেন্দু নারায়ন চৌধুরীর কাছে গিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন বিষয়টি কি মুখ্যমন্ত্রীকে আদৌ জানান হয়েছে নাকি চেপে রাখা হয়েছে। এরপরই কৃষ্ণেন্দু নারায়ণ চৌধুরী ও পুলিশ সক্রিয় হয়ে ওঠে এবং বুধবার রাতে ফের জিজ্ঞাসাবাদে ধৃত যুবক ওই নাবালিকাকে খুন করে দেহ লুকিয়ে ফেলার বিষয়টি স্বীকার করে। সেই খবর এলাকায় ছড়িয়ে পড়তেই স্থানীয়রা ইংরেজবাজার থানার সামনে জমায়েত করে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন। তার আগেই মৃতদেহ উদ্ধারের জন্য ঘটনাস্থলে রওয়ানা দেয় ইংরেজবাজার থানার পুলিশ। মালদা শহরের রবীন্দ্র ভবন সংলগ্ন আম বাজারে গিয়ে নাবালিকার বিচ্ছিন্ন মৃতদেহ উদ্ধার করে। সেখান থেকে কিছুটা দূরে একটি বিল্ডিংয়ের ছাদ থেকে উদ্ধার হয় মাথা। মৃতদেহ ও মাথা ময়নাতদন্তের জন্য মালদা মেডিকেলে পাঠায় ইংরেজবাজার থানার পুলিশ।
এই ঘটনায় বৃহস্পতিবার এলাকাবাসী ওই যুবকের বাড়ি ভাঙচুর করে আগুন লাগিয়ে দেয় বলে অভিযোগ। এলাকার মানুষ শহরের পোষ্ট অফিস মোড় অবরোধ করে রাখেন।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ধৃত যুবক মৃত নাবালিকার জেঠত্যুতো দাদা। এদিন সকালে ক্ষিপ্ত জনতা অভিযুক্ত যুবকের বাড়ি ভাঙচুর চালায়। গোটা ঘটনায় ব্যাপক উত্তেজনা রয়েছে মালদা শহর জুড়ে। পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করছে। ঘোটা ঘটনার তদন্ত করছে পুলিশ।

Comments :0

Login to leave a comment