অভীক ঘোষ
ঘরের ছেলে কবে ঘরে ফিরবে, এই একটাই প্রশ্ন আমিনুর রহমান মণ্ডলের পরিবারে।
যুদ্ধবিধ্বস্ত সুদানে আটকে হুগলির হারিটের যুবক আমিনুর। সুদানেই রয়েছেন পাণ্ডুয়ার গোয়ারা গ্রামের বাসিন্দা শেখ রুহুল আমিনও।
চোখের সামনে বোমা গুলির লড়াই দেখেছেন। মৃত্যুকে কাছ থেকে দেখেছেন। প্রবল উৎকণ্ঠায় রয়েছে পরিবার। গৃহযুদ্ধে বিধস্ত আফ্রিকার সুদান। সেনা এবং আধাসেনা, দুই বাহিনীর সশস্ত্র সংঘাতে প্রাণ হারিয়েছেন বহু সাধারণ মানুষ। অন্য দেশের মতো ভারতও নিজের নাগরিকদের ফেরানোর কাজ চালাচ্ছে। কিন্তু আমিনুর ফেরেননি।
গত ১৫ ই ডিসেম্বর সুদানে গয়না তৈরির কাজে গিয়েছিলেন হুগলির হারিটের জেটে গ্রামের আমিনুর রহমান মন্ডল। আটত্রিশ বছরের এই যুবক মুম্বাই হায়দরাবাদ সহ বিভিন্ন শহরে সোনার গয়না তৈরির কাজ করেছেন। মাস কয়েক আগে বলাগড়ের শিমুলিয়া এলাকার রাহুল নামে এক এজেন্টের মাধ্যমে দোকান মালিক আরশাদ আলির কাছে কাজে যান আমিনুর। সেখানে গিয়েই বিপাকে পড়েছেন তিনি।
বাড়িতে বৃদ্ধ বাবা মা ও স্ত্রী, তিন মেয়েকে ফেলে বিদেশে পাড়ি দিয়েছিলেন বাড়তি কিছু আয়ের আশায়। পরিবার জানাচ্ছে যে যুদ্ধ বিধ্বস্ত সুদান থেকে আসতে দিচ্ছে না দোকান মালিক। ফোন কেড়ে নেওয়া হয়েছে। মুহূর্মুহূ গোলাগুলির শব্দ, আমিনূর যে জায়গায় থাকে সেই বাড়িতেও বোমা পড়েছে।
বোমা বর্ষণে কালো ধোঁয়ায় ঢেকেছে রাস্তাঘাট। কী করে বাড়ি ফিরবে ভাই তা কিছুই বুঝতে বুঝে উঠতে পারছেন না দাদা সরিফুদ্দিন মন্ডল। এদিকে পরিবারে বাড়ছে উদ্বেগ আর উৎকণ্ঠা। পরিবারের দাবি অবিলম্বে আমিনুরকে বাড়ি ফিরিয়ে দেওয়া হোক। ভারত সরকারের পক্ষ থেকে সুদান থেকে ইতিমধ্যে অনেক ভারতীয়কে ফিরিয়ে আনা হয়েছে। এখনও বেশ কিছু মানুষ আটকে রয়েছেন।
হারিটের আমিনুর ছাড়াও হুগলির পাণ্ডুয়ার গোয়ারা গ্রামের বাসিন্দা শেখ রুহুল আমিন রয়েছেন। তার স্ত্রী আমিনা বিবিও দুশ্চিন্তায় দিন কাটাচ্ছেন। সেপ্টেম্বর মাসে সুদানে গিয়েছিলেন রুহুল। এপ্রিলের মাঝামাঝি থেকে সুদানের রাজধানী খার্তুম সহ কয়েকটি শহরে যুদ্ধ শুরু হয়। এখনও অশান্ত উত্তর আফ্রিকার দেশ সুদান।
ছবি :- ছেলের চিন্তায় অস্থির আমিনুর রহমান মন্ডলের পরিবার।ছবি অভীক
Comments :0