পরীক্ষার বিজ্ঞপ্তিতে এমন ঘোষণা না থাকলেও দেড় হাজারের বেশি পরীক্ষার্থীকে দেওয়া হয়েছে ‘গ্রেস মার্কস’। মেডিক্যালে প্রবেশিকার পরীক্ষার ফল ঘোষণায় এই সিদ্ধান্ত ঘিরে প্রতিবাদ উঠেছে সব স্তরে। শনিবার ‘গ্রেস মার্কস’-র অভিযোগ খতিয়ে দেখতে চার সদস্যের কমিটি গড়ল কেন্দ্রীয় শিক্ষা মন্ত্রক।
মেডিক্যালে সর্বভারতীয় প্রবেশিকা পরীক্ষা ‘নিট’ নেওয়া এবং ফল ঘোষণার দায়িত্বে থাকে ন্যাশনাল টেস্টিং এজেন্সি বা এনটিএ। অভিযোগের মুখে বেনিয়ম অস্বীকার করছে এনটিএ। কিন্তু যেভাবে কিছু পরীক্ষার্থীর নম্বর বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে তা নিয়ে সন্দেহ বাড়ছে।
এনটিএ’র ডিরেক্টর জেনারেল সুবেধ কুমার সিং শনিবার বলেছেন, ‘‘দেড় হাজারের বেশি পরীক্ষার্থীর নম্বর খতিয়ে দেখতে উচ্চ পর্যায়ের কমিটি গড়া হয়েছে। ইউপিএসসি’র প্রাক্তন চেয়ারম্যানের নেতৃত্বে এই কমিটি গড়া হচ্ছে। এক সপ্তাহের মধ্যে সুপারিশ জমা পড়বে। সেক্ষেত্রে পরীক্ষার্থীরদের নম্বর বদলানো হতে পারে।’’
শুক্রবারই কংগ্রেস ‘নিট’-র প্রশ্নপত্র ফাঁস, নম্বর বাড়ানো এবং বেসরকারি কোচিং সেন্টারের সঙ্গে সরকারি স্তরে তৈরি দুর্নীতি চক্রের অভিযোগ তোলে। যথাযথ তদন্তের দাবি জানায় ভারতের ছাত্র ফেডারেশনও। শনিবার এই পরীক্ষা নিয়েই সরব হয়েছে আম আদমি পার্টি। দলের দাবি, সুপ্রিম কোর্টের নজরদারিতে বিশেষ তদন্ত দল গড়ে খতিয়ে দেখতে হবে অভিযোগ।
কর্তৃপক্ষের ব্যাখ্যা অনুযায়ী, ছয়টি পরীক্ষাকেন্দ্রে প্রশ্নপত্র দেরিতে পৌঁছানোয় ‘গ্রেস মার্কস’ বা বাড়তি নম্বর যোগ করে দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু এই যুক্তিতে অবাক হয়েছে শিক্ষামহলের বড় অংশ। বাড়তি সময় না দিয়ে নম্বর বাড়িয়ে দেওয়া হলো কেন, পরীক্ষার নিয়মে এমন কোনও বিষয়ের উল্লেখই বা ছিল না কেন, সেই প্রশ্নের সদুত্তর মিলছে না।
শনিবারই ‘নিট’ পরীক্ষায় দুর্নীতির অভিযোগে সরব হয়েছে আরেক বিরোধী নেতা এবং উত্তর প্রদেশের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী অখিলেশ যাদব। সমাজবাদী পার্টির সভাপতি যাদব বলেছেন, ‘‘কয়েকশো পরীক্ষার্থী একশো শতাংশ নম্বর পেয়েছে। তার মধ্যে চোখে পড়ার মতো সংখ্যা রয়েছে নির্দিষ্ট কয়েকটি পরীক্ষা কেন্দ্রে। একই কেন্দ্র থেকে পরীক্ষার্থীদের বেশ কয়েকজন একশো শতাংশ নম্বর পেয়ে যাচ্ছে!’’ এরপরই বিজেপি’কে আক্রমণ করে যাদব লিখেছেন, ‘‘কেন্দ্রে বিজেপি’র মেয়াদে পুরো পরীক্ষা ব্যবস্থা ব্যবসায় পরিণত হয়েছে। প্রশ্নপত্র ফাঁস করে দেওয়া হচ্ছে, পরীক্ষা কেন্দ্র এমন ভাবে করা হচ্ছে যাতে কয়েকজনকে বাড়তি সুবিধা পাইয়ে দেওয়া যায়।’’
অখিলেশের দাবি, সুপ্রিম কোর্ট নিজেই এগিয়ে এসে তদন্তের ব্যবস্থা করুক। দোষীদের শাস্তি নিশ্চিত করা হোক।
যে পরীক্ষা কেন্দ্রগুলি নিয়ে অভিযোগ উঠেছে সেগুলি মেঘালয়, হরিয়ানার বাহাদুরগড়, ছত্তিশগড়ের দান্তেওয়াড়া ও বালোধ, গুজরাটের সুরাট এবং চণ্ডীগড়ে।
৪ জুন ‘নিট’ ফল বেরলে দেখা যায় প্রথম হয়েছে। ২৪ লক্ষের বেশি ছাত্রছাত্রী এবার পরীক্ষায় বসেছে। ‘নিট’ পরীক্ষা নিয়ে বিরোধ এবং গরমিলের অভিযোগ বারবারই উঠেছে। বেসরকারি মেডিক্যাল কলেজগুলিকে সুবিধা করে দিতে একেবারে কম নম্বর পেলেও ‘যোগ্য’ বলে বিবেচিত করা হয়েছে।
NEET PROBE
‘নিট’ বেনিয়মের তদন্তে কমিটি গড়ল কেন্দ্র
×
Comments :0