MODI MUSLIM

সংবিধানে উদ্বেগ সব অংশেই, ফের উলটো গাওনা মোদীর

জাতীয়

বলেছেন ‘ভোট জিহাদি’। বলেছেন ‘অনুপ্রবেশকারী’। বলেছেন দেশের আর সকলের সম্পত্তি কেড়ে তাঁদের দেবে ‘ইন্ডিয়া’ সরকার গড়লে। সেই নরেন্দ্র মোদীই ফের দাবি করেছেন মুসলিম সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে তিনি কিছু বলেননি। বলেছেন তোষণের রাজনীতির বিরুদ্ধে।
সংবাদসংস্থা পিটিআই-কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে নিজের দেওয়া সব ভাষণ উলটে দিয়েছেন নরেন্দ্র মোদী। ধারাবাহিক ভোট প্রচারে বিভাজন এনেছেন দু’টি কৌশলে। এক, ‘ইন্ডিয়া’ মঞ্চকে বলেছেন সনাতন ধর্মবিরোধী। কারণ রামমন্দির উদ্বোধনে যাননি মঞ্চের নেতারা। দুই, মুসলিমদের ঘিরে বিদ্বেষ তৈরি করতে বলে গিয়েছে অন্য সকলের সম্পত্তি কেড়ে তাঁদের দেওয়ার প্রচার। অথচ ‘ইন্ডিয়া’ মঞ্চের কোনও দল ইশ্‌তেহারে এমন কোনও ঘোষণা করেননি।
সোমবার রাজ্যের ঝাড়গ্রামে প্রচার চালিয়েছেন মোদী। সেখানেও ‘অনুপ্রবেশকারীদের’ তোষণ চালানোর ভাষণ দিয়েছেন। তার জন্য তৃণমূল সরকারকে দায়ী করেছেন। বিজেপি’র জোটসঙ্গী থেকে তৃণমূল নেত্রী মমতা ব্যানার্জিই রাজ্যে অনুপ্রবেশকে রাজনীতির বিষয় করেছিলেন। 
ঝাড়গ্রামে মোদীর ভাষণে ‘মুসলিম’ শব্দের উল্লেখ না করলেও বিজেপি এবং আরএসএস দর্শনের দিক থেকে ধর্মীয় সংখ্যালঘু এই অংশকে বিদেশি এবং অনুপ্রবেশকারী বলে প্রচার করে আসছে।  
সাক্ষাৎকারে মোদীকে প্রশ্ন করা হয় যে তাঁর মন্তব্যে সংখ্যালঘুদের মধ্যে ভয় ছড়িয়ে থাকলে তাঁর বক্তব্য কী। মোদী বলেছেন, ‘‘আমি সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে একটি কথাও বলিনি। আমি কেবল কংগ্রেসের ‘ভোট ব্যাঙ্ক’ রাজনীতির বিরোধিতা করেছি।’’ এখানেই থামেননি মোদী। তাঁর বিরুদ্ধেই সংবিধানকে ধ্বংসের দিকে নিয়ে যাওয়ার একের পর এক নজির হাজির করছেন বিরোধীরা। তা নিয়ে ক্ষোভও বাড়ছে জনতার, যার মধ্যে মুসলিম নন এমন মানুষও বহু রয়েছেন।
মোদী এবার কংগ্রেসকেই সংবিধান ভাঙার জন্য দায়ী করছেন। তিনি বলেছেন, ‘‘কংগ্রেসই তো সংবিধানের বিপক্ষে চলছে। সে কারণেই আমি বলেছি।’’ তাঁর বক্তব্য, ‘‘সংবিধান তৈরির সময় বিআর আম্বেদকর বা জওহরলাল নেহরু ধর্মের ভিত্তিতে সংরক্ষণের কথা বলেননি।’’ তাঁর সংযোজন, ‘‘বিজেপি কখনই সংখ্যালঘুদের বিপক্ষে নয়। কেবল আজ নয়, কখনও!’’ 
নিজেকে মুসলিমদের বিপক্ষে নন বলে গত সপ্তাহেও দাবি করেছিলেন মোদী। তার পালটা লোকসভা ভোটের প্রচারে একের পর এক ভাষণও তুলে দিয়েছে বিভিন্ন অংশ। এই অংশ বলছে, সিএএ-তে নাগরিকত্বের সংজ্ঞায় ধর্মকে কেবল জোড়া হয়নি, বাদ দেওয়া হয়েছে মুসলিমদের। মুসলিমদের জন্য সংরক্ষণও হয়নি। হয়েছে আর্থিক এবং সামাজিক বিচারে পিছিয়ে থাকার মাপকাঠিতে। 
পর্যবেক্ষকদের একাংশ বলছেন, বিজেপি’র ধর্মীয় বিভাজনের প্রচারে ক্ষোভ রয়েছে সব অংশেই। জিনিসের দাম, কাজ-রোজগারের ক্ষেত্রে কেন্দ্রের ব্যর্থতা আড়ালের কৌশল বলেও মনে করছে। সংবিধান ধ্বংস করতে চায় বিজেপি, এই প্রচার জমিও পেয়েছে। বিজেপি-আরএসএস বিভাজনের প্রচারই চালাবে। আবার মোদী সব অংশের কাছে আবেদনও রাখা হবে। উগ্র হিন্দুত্ববাদী যে কারণে উলটো গাওনা মোদীর।

Comments :0

Login to leave a comment