শুক্রবার মুর্শিদাবাদের খড়গ্রামের রতনপুর-নলদ্বীপ গ্রামে খুন হন কংগ্রেস কর্মী ফুলচাঁদ শেখ। তাঁর পরিবারের অভিযোগ, তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীরাই তাকে খুন করে বাড়ির সামনে। এই ঘটনার প্রতিবাদে রবিবার খড়গ্রামে মহামিছিল করলেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর রঞ্জন চৌধুরী। কংগ্রেস সূত্রে খবর, এদিনের মিছিলে প্রায় ২০০ তৃণমূল কর্মী কংগ্রেসের পতাকা হাতে তুলে নেয়।
পঞ্চায়েত ভোটের প্রাক্কালে নতুন করে মুর্শিদাবাদ জুড়ে সন্ত্রাস ছড়ানোর অভিযোগ উঠেছে তৃণমূলের বিরুদ্ধে। শুক্রবার বাড়ির সামনে ছেলেকে নিয়ে বসেছিলেন ফুলচাঁদ। অভিযোগ, তাঁকে লক্ষ্য করে ৬ রাউন্ড গুলি ছোঁড়া হয় । ঘটনাস্থলেই প্রাণ হারান ফুলচাঁদ। দুষ্কৃতিদের বাধা দিতে গেলে স্থানীয়রাও আক্রান্ত হন বলে অভিযোগ।
এই ঘটনাকে ঘিরে প্রশাসনের উপর চাপ বাড়ায় কংগ্রেস। শনিবার এবং রবিবার দুই দফায় ফুল চাঁদ শেখের বাড়ি যান অধীর রঞ্জন চৌধুরী। খড়গ্রাম কাণ্ডে আহতদের দেখতে কান্দি মহাকুমা হাসপাতালেও তিনি যান।
প্রশাসনকে নিশানা করে অধীর চৌধুরী বলেন, রাজ্য পুলিশের মদতেই খড়গ্রামে কংগ্রেস কর্মী খুন হয়েছে। ঘটনার পরে দুষ্কৃতিদের পুলিশ মাঠে লুকিয়ে থাকতে বলেছিল। পরে পরিস্থিতির চাপে সেখান থেকেই তাদের গ্রেফতার করা হয়।
রবিবার খড়গ্রাম থেকে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে অধীর চৌধুরী বলেন, মধ্যযুগীয় বর্বরতা নামিয়ে আনা হয়েছে। গবাদি পশুর লেজ কেটে দেওয়া, বয়স্ক মহিলার হাত কেটে দেওয়ার মত কান্ড ঘটিয়েছে তৃণমূল। গ্রামের মানুষ আতঙ্কে রয়েছে। অবিলম্বে রতনপুর-নলদ্বীপ গ্রামে পুলিশি প্রহরার ব্যবস্থা করতে হবে।
সিপিআইএম এবং কংগ্রেসের অভিযোগ পঞ্চায়েত ভোটের দিন ঘোষণা হওয়ার পর থেকেই মুর্শিদাবাদ জেলার ব্লকে ব্লকে তান্ডব করার চেষ্টা শুরু করেছে তৃণমূল। যদিও শাসকদলের বাধা অতিক্রম করেই ডোমকল এবং রাণীনগর ব্লকে মনোনয়ন জমা দিয়েছেন বাম ও কংগ্রেস প্রার্থীরা।
এর পাশাপাশি নির্বাচনের মুখে তৃণমূল ছেড়ে কংগ্রেসের ফেরার বেশ কিছু চিত্র দেখা গিয়েছে। শনিবার বহরমপুরে জেলা কংগ্রেস কার্যালয়ে এসে কংগ্রেসের যোগ দেন হরিহরপাড়ার হুমায়পুর অঞ্চলের প্রাক্তন তৃণমূল অঞ্চল সভাপতি শফিকুল ইসলাম, রায়পুর গ্রাম পঞ্চায়েতের সদস্য মাসাদুল শেখ সহ বহু তৃণমূল কর্মী। অধীর চৌধুরী তাঁদের কংগ্রেসে যোগদান করান।
এছাড়াও শনিবার সাগরদিঘির এসএন হাই স্কুলের মাঠে সাগরদিঘি ব্লক কংগ্রেসের কর্মী সম্মেলন করেন অধীর চৌধুরী। সাগরদিঘি বাসস্ট্যান্ডের কাছে এই সমাবেশে চোখে পড়ার মতো ভিড় হয়।
কংগ্রেসের দাবি, এ দিনের জনসমাবেশ থেকেই স্পষ্ট, বাম কংগ্রেস জোটের ভোটে জয়ী বাইরন বিশ্বাসকে ভাঙালেও, সাগর দিঘির সাধারণ মানুষকে ভাঙাতে পারেনি তৃণমূল।
Comments :0